মঙ্গলবার সংস্থাটির ফেইসবুক পাতায় নতুন এক পোস্টে বলা হয়, “সংঘাত ও যুদ্ধময় দেশ, যেখানে মানুষ আক্রমণ, সংঘাত ও মৃত্যুর মুখোমুখি হচ্ছে- ফেইসবুক বিজ্ঞাপনে বাংলাদেশকে অন্তর্ভুক্ত করায় ক্ষমা চাচ্ছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল।
“আমরা এই ভুলের জন্য বাংলাদেশের জনগণের এবং যারা এর মাধ্যমে মর্মাহত হয়েছেন, তাদের কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা চাচ্ছি।”
গত শুক্রবার যুদ্ধ ও সংঘাতময় দেশে মানুষের আক্রান্ত, সংঘাত ও মৃত্যুর মুখোমুখি হওয়ার বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে একটি ফেইসবুক পোস্ট দিয়েছিল অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশাল।
কেবল বাংলাদেশের নাম উল্লেখ করে দেওয়া ওই পোস্টে ছবি সংযুক্ত করা হয় সিরিয়ার একটি যুদ্ধবিধ্বস্ত এলাকার।
ওই পোস্টে লেখা হয়, “বাংলাদেশ এবং পৃথিবীর অন্যান্য জায়গায় নিরপরাধ মানুষ আক্রমণের শিকার, সংঘাত ও মৃত্যুর মুখোমুখি হচ্ছে- কেবল মাত্র ভুল সময়ে ভুল জায়গায় থাকার কারণে। যুদ্ধ ও সংঘাতের সময় ভয়ঙ্কর নির্যাতনকে তুলে ধরতে আমরা সংগ্রাম করছি। এ ধরনের গল্প শোনানোর জন্য হাজার হাজার মানুষের সঙ্গে আন্দোলনে যোগ দিন।”
ওই পোস্টের নিচে অমিত হাসান নামে একজন লেখেন, “এই ছবি বাংলাদেশের জন্য চরম অবমাননাকর। অ্যামনেস্টি সিরিয়া, ইরাক, ইয়েমেন কিংবা সিরিয়ার জন্য কিছু করতে পারে না, বরং আমেরিকা ও অন্যদের স্বার্থ উদ্ধার করতে পারে। কী হাস্যকর!”
মনজুরুল ওয়াহিদ অনু নামে একজন লেখেন, “বর্তমানে বাংলাদেশ অত্যন্ত স্থিতিশীল রাষ্ট্র। বর্তমানে আমাদের দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা রয়েছে। এমন শিরোনাম আপনারা কোথায় পেয়েছেন? কোথায় পেয়েছেন নিরপরাধ মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে? যে ছবি দেওয়া হচ্ছে তার স্থান কোথায়?
“আপনারা ছেলেখেলা করছেন নাকি পাগল হয়ে গেছেন? এই ছবি অন্য কোনো দেশের। এই ষড়যন্ত্রের জন্য কারা টাকা দিয়েছে?”
একাত্তরের যুদ্ধাপরাধীদের দণ্ডের বিরোধিতার কারণে বাংলাদেশে সমালোচনায় পড়তে হয়েছিল অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালকে।
শুক্রবারে পোস্ট দেওয়ার কিছু সময় পর থেকে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের ফেইসবুক পাতায় বাংলাদেশ থেকে সেটি দেখা যাচ্ছিল না।
এর মধ্যে গত রোববার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের পক্ষ থেকে বক্তব্যের জন্য অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের সাউথ এশিয়া বিভাগের রিজিওনাল ক্যাম্পেইনার সাদ হাম্মাদির সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি সংস্থার প্রধান কার্যালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন।
এরপর ই-মেইলের অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের প্রধান কার্যালয়ের গণমাধ্যম শাখা যোগাযোগ করা হলেও দুই দিনে তাদের বক্তব্য আসেনি।
এর মধ্যে মঙ্গলবার রাতে আরেকটি ফেইসবুক পোস্টের মাধ্যমে বাংলাদেশের জনগণের কাছে ক্ষমা চায় সংস্থাটি।
সেখানে আরও লেখা হয়, “আমরা স্বীকার করছি বাংলাদেশ যুদ্ধ ও সংঘাতময় দেশের মধ্যে নেই। অধিকন্তু তারা মিয়ানমারে মানবতাবিরোধী অপরাধের শিকার প্রায় ১০ লাখ মানুষকে আশ্রয় দিয়েছে।”
ওই পোস্টটি সংশোধনের পাশাপাশি ভবিষ্যতে এমন পোস্টের ক্ষেত্রে আরও যাচাই-বাছাইয়ের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয় মঙ্গলবারের পোস্টে।