রাজাকারের তালিকা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে: ফখরুল

স্বাধীনতার অর্ধশতক পরে এসে একাত্তরের স্বাধীনতাবিরোধীদের তালিকা প্রকাশের পেছনে ‘সরকারের রাজনৈতিক উদ্দেশ্য’ দেখতে পাচ্ছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 Dec 2019, 10:37 AM
Updated : 16 Dec 2019, 10:37 AM

সোমবার বিজয় দিবসে ঢাকায় জিয়াউর রহমানের কবরে শ্রদ্ধা নিবেদন করতে গিয়ে সাংবাদিক প্রশ্নের জবাবে এ বিষয়ে কথা বলেন তিনি।

মির্জা ফখরুল বলেন, “এই তালিকা তৈরি করা হয়েছে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে।”

একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের নয় মাসে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী দীর্ঘ নয় মাস তাদের স্থানীয় দোসর জামায়াতে ইসলামী, মুসলিম লীগ, রাজাকার, আল-বদর, আল-শামস ও শান্তি কমিটির সহায়তায় বর্বরোচিত হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে ৩০ লাখ বাঙালিকে হত্যা করে, দুই লাখ মা-বোনের সন্ত্রমহানি ঘটায়।

সরকারের হাতে থাকা নথির তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে সরকার একাত্তরের সেই স্বাধীনতাবিরোধীদের মধ্যে ১০ হাজার ৭৮৯ জনের প্রথম তালিকা প্রকাশ করা হয় বুধবার।

এই তালিকায় নাম এসেছে আবদুর রহমান বিশ্বাসের, যাকে ১৯৯১ সালে দেশের রাষ্ট্রপতি বানিয়েছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।

আরও আছেন শাহ আজিজুর রহমান, যিনি জিয়াউর রহমানের শাসনামলে প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন।

এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে বিএনপি মহাসচিব ফখরুল বলেন, “এই সরকার তার নিজের রাজনৈতিক প্রয়োজনে হীন উদ্দেশ্য নিয়ে বিভিন্ন তালিকা তৈরি করেছে এবং আজকে বিএনপিকে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য এই সমস্ত তালিকা তারা প্রকাশ করেছে।

‘‘আমরা এটা পুঙ্খানুপুঙ্খরূপে বিচার না করে…। এই এতোদিন পরে, ৪৯ বছর পরে এই রাজাকারের তালিকা কতটুকু সঠিক হয়েছে না হয়েছে সেটা এখনই বলা সম্ভব নয়।”

আরেক প্রশ্নের জবাবে ফখরুল বলেন, “আমাদের দাবি তো একটাই, সেটা হচ্ছে- সুষ্ঠু তালিকা নির্ধারণ করা এবং প্রকৃত তালিকা নির্ধারণ করা। সেটা একমাত্র মুক্তিযোদ্ধারাই করতে পারেন এবং শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের দলই সেটা করতে পারে।”

এর আগে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ স্থায়ী কমিটির সদস্যরা সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে গিয়ে মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। সাভার থেকে ফিরে দুপুরে তারা শেরেবাংলা নগরে জিয়াউর রহমানের কবর প্রাঙ্গণে যান।

সেখানে শ্রদ্ধা নিবেদনের পর প্রয়াত নেতার আত্মার মাগফেরাতে বিশেষ মোনাজাতে অংশ নেন বিএনপি নেতাকর্মীরা।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, আবদুল মঈন খান, সেলিমা রহমান, জ্যেষ্ঠ নেতা মোহাম্মদ শাহজাহান, এজডএম জাহিদ হোসেন, জয়নুল আবদিন ফারুক, আবদুস সালাম, খায়রুল কবির খোকন, হাবিব উন নবী খান সোহেল, ফজলুল হক মিলন, শিরিন সুলতানা, হাবিবুল ইসলাম হাবিব, নাজিমউদ্দিন আলম, শামীমুর রহমান শামীম, মীর নেওয়াজ আলী, হায়দার আলী লেলিন, আমিরুল ইসলাম খান আলিম, শহিদুল ইসলাম বাবুল, আমিরুজ্জামান শিমুল, রফিক শিকদার, দেবাশীষ মধু, আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

অঙ্গসংগঠনের নেতাদের মধ্যে মহানগর মুক্তিযোদ্ধা দলের ইশতিয়াক আজিজ উলফাত, সাদেক আহমেদ খান, মহানগর বিএনপির কাজী আবুল বাশার, জিএম শামসুল হক নবী উল্লাহ নবী, যুব দলের সাইফুল ইসলাম নিরব, সুলতানা সালাহউদ্দিন টুকু, মোরতাজুল করীম বাদরু, এসএম জাহাঙ্গীর হোসেন, স্বেচ্ছাসেবক দলের আবদুল কাদের ভুঁইয়া জুয়েল, গোলাম সারোয়ার, ইয়াসীন আলী, মহিলা দলের আফরোজা আব্বাস, সুলতানা আহমেদ, হেলেন জেরিন খান, তাঁতী দলের আবদুল কালাম আজাদ, উলামা দলের শাহ নেছারুল হক, নজরুল ইসলাম তালুকদার, মৎস্যজীবী দলের রফিকুল ইসলাম মাহতাব, আবদুর রহিম, জাসাস, হেলাল খান, ছাত্রদলের ফজলুর রহমান খোকন, ইকবাল হোসেন শ্যামল নিজ নিজ দলের পক্ষে জিয়ার কবরে ফুল দেন।

শ্রদ্ধা নিবেদনের পর মির্জা ফখরুল বলেন, “এখানে আমরা শপথ নিয়েছি, জনগণকে সংগঠিত করে আমরা  দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করব এবং গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনব ইনশাল্লাহ।”