আসামি এক রাজন, কারাগারে আরেক রাজন

নামের মিল থাকায় এক আসামির নামে পরোয়ানায় পুলিশ গ্রেপ্তার করে আনার পর বিনা দোষে ২৬ দিন কারাগারে থাকতে হল কুমিল্লার এক তরুণকে।

আদালত প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 11 Nov 2019, 05:53 PM
Updated : 11 Nov 2019, 06:12 PM

সোমবার ঢাকার ১ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে তোলা হলে বিচারক আবু জাফর মো. কামরুজ্জামান কাঠগড়ায় থাকা রাজন ভূইয়া (১৯) নামে ওই তরুণকে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দিয়ে মুক্তি দেওয়ার নির্দেশ দেন।

সেই সঙ্গে রাজনকে গ্রেপ্তার করে আনা কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া থানার এসআই আরশাদকে বিচারক তলব করেছেন বলে জানান

ট্রাইবুনালের রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি আবু আবদুল্লাহ ভূইয়া।

তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এসআই আরশাদের বিরুদ্ধে কেন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, সে বিষয়ে আগামী ৪ ডিসেম্বর আদালতে উপস্থিত হয়ে তাকে কারণ দর্শাতে বলেছেন আদালত।”

ঢাকার বংশাল থানার একটি মামলায় জারি হওয়া গ্রেপ্তারি পরোয়ানায় গত ১৬ অক্টোবর কুমিল্লায় গ্রেপ্তার করা হয় রাজন ভূইয়াকে।

কুমিল্লার গোপালনগর গ্রামের মৃত আব্দুল মান্নান ভূইয়ার ছেলে রাজন ভূইয়া একটি গাড়ির ওয়ার্কশপে কাজ করেন।

যে পরোয়ানায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়, তাতে আসামির নাম ছিল হাবিবুল্লাহ রাজন।

২০১২ সালের ৯ মে ২৮টি নেশাজাতীয় ইনজেকশনসহ ঢাকার বংশাল থানার তাঁতীবাজার এলাকা থেকে গ্রেপ্তার হন হাবিবুল্লাহ রাজন (২৬)। ওই বছরের ১ জুলাই আদালত থেকে জামিনে মুক্তি পাওয়ার পর তিনি পালিয়ে যাওয়ার পর তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়।

ওই পরোয়ানায় রাজন ভূইয়াকে গ্রেপ্তার করে আনেন ব্রাহ্মণপাড়া থানার এসআই আরশাদ।

রাজন ভূইয়ার আইনজীবী নিকুঞ্জ বিহারী আচার্য্য সাংবাদিকদের বলেন, পুলিশ যে পরোয়ানার ভিত্তিতে রাজন ভূইয়াকে গ্রেপ্তার করে, সেখানে আসামির নাম লেখা ছিল হাবিবুল্লাহ রাজন, পিতা-আব্দুল মান্নান।

“গ্রেপ্তারের পর পুলিশকে দুই রাজনের বাবার নামের পার্থক্য এবং তাদের জীবিত ও মৃতের পার্থক্যের কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু পুলিশ তা আমলে না নিয়ে নিরাপরাধ রাজন ভূইয়াকে কারাগারে পাঠায়।”

তবে হাবিবুল্লাহ রাজনের বিরুদ্ধে মামলায় তার যে গ্রামের যে ঠিকানা লেখা ছিল, তা রাজন ভূইয়ারও গ্রাম। তবে ঢাকার মগবাজার এলাকায় হাবিবুল্লাহ রাজনের আরেকটি ঠিকানা মামলায় উল্লেখ রয়েছে বলে জানান অ্যাডভোকেট নিকুঞ্জ।

তিনি বলেন, “মূল আসামি পলাতক হাবিবুল্লাহ রাজন গত ৭ নভেম্বর এই আদালতে আত্মসমর্পণ করতে এসেছিলেন। কিন্তু ভুল আসামি রাজন ভূইয়া এ মামলায় কারাগারে থাকায় সেদিন আদালত তার আত্মসমর্পণের আবেদন নিতে পারেননি।

“আমাদের আবেদনের পর আদালত নিশ্চিত হন যে, গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে থাকা রাজন ভূইয়া এ মামলার আসামি নন। তিনি পুলিশের খামখেয়ালির শিকার হয়েছেন। তাই আদালত রাজন ভূইয়াকে মুক্তির আদেশ দিয়েছেন।”