পরিবহন নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিআরটিএ ও পুলিশের প্রতিবেদন নিয়ে শুনানি শেষে বুধবার বিচারপতি নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কে এম হাফিজুল আলমের বেঞ্চ এ আদেশ দেয়।
আদালতে বিআরটিএর পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মঈন ফিরোজী, রাফিউল ইসলাম; রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল হেলেনা বেগম চায়না।
আইনজীবী মঈন বিডিনিউজটোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, রাস্তায় ফিটনেসহীন যত গাড়ি চলছে সেগুলোতে কোনো ফিলিং স্টেশন থেকে পেট্রোল, গ্যাস, তেলসহ জ্বালানি সরবরাহ না করতে আদেশ দিয়েছে হাই কোর্ট।
“পুলিশের মহাপরিদর্শকসহ সংশ্লিষ্ট বিবাদিদের এ আদেশ বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে।”
ওই নির্দেশনা বাস্তবায়নের অগ্রগতি জানিয়ে বিআরটিএর প্রতিবেদনে বলা হয়, ৪ লাখ ৭৯ হাজার ৩২০টি গাড়ির মধ্যে গত দুই (১ আগস্ট থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত) মাসে ফিটনেস নবায়ন করেছে ৮৯ হাজার ২৬৯টি গাড়ি।
অন্যদিকে ফিটনেস নবায়নে বেঁধে দেওয়া সময়ের পর ঢাকা মহানগরে ফিটনেসহীন ৬৪৮টি গাড়ি আটকসহ মোট ৪ হাজার ১০৩টি গাড়ির বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে পুলিশপ্রধানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
এছাড়া কুমিল্লা, গাজীপুর, বগুড়া, মাদারীপুর মহাসড়কে ৪১২টি ফিটনেসহীন গাড়ির বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, যার মধ্যে ৪০৫টি গাড়ি আটক করা হয়েছে।
এর আগে আদালতে জমা দেওয়া বিআরটিএর প্রতিবেদনে বলা হয়, ঢাকাসহ সারাদেশে লাইসেন্স নিয়ে ফিটনেস নবায়ন না করা গাড়ির সংখ্যা ৪ লাখ ৭৯ হাজার ৩২০টি।
এর মধ্যে ঢাকা বিভাগে ২ লাখ ৬১ হাজার ১১৩, চট্টগ্রাম বিভাগে ১ লাখ ১৯ হাজার ৫৮৮, রাজশাহী বিভাগে ২৬ হাজার ২৪০, রংপুর বিভাগে ৬ হাজার ৫৬৮, খুলনা বিভাগে ১৫ হাজার ৬৬৮, সিলেট বিভাগে ৪৪ হাজার ৮০৫ এবং বরিশাল বিভাগে ৫ হাজার ৩৩৮টি গাড়ি মেয়াদোত্তীর্ণ ফিটনেসবিহীন গাড়ি রয়েছে।
গত ২৩ মার্চ ‘নো ফিটনেস ডকস, ইয়েট রানিং’ শিরোনামে ইংরেজি দৈনিক ডেইলি স্টারে প্রকাশিত প্রতিবেদন নজরে আসার পর ২৭ মার্চ আদালত স্বতঃপ্রণোদিত রুলসহ অন্তর্বর্তীকালীন আদেশ দেয়।
ঢাকাসহ সারাদেশে ফিটনেস-নিবন্ধনহীন যানবাহন ও লাইসেন্সহীন চালকের প্রতিবেদন চেয়ে বিআরটিএ’র সড়ক নিরাপত্তা বিভাগের পরিচালক মাহবুব-ই-রাব্বানীকে ২৪ জুন আদালতে হাজির হয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলে।
একই সঙ্গে ফিটনেস, নিবন্ধনহীন যান চলাচল ও লাইসেন্স ছাড়া যান চলাচল বন্ধে বিবাদীদের নিস্ক্রীয়তা ও ব্যর্থতা কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না এবং সংবিধানের ৩২ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী জীবন ও ব্যক্তির বাঁচার অধিকার রক্ষায় মোটরযান অধ্যাদেশ ১৯৮৩ -এর বিধান বাস্তবায়নের নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না, জানতে চেয়ে রুল জারি করে।
সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, পুলিশ প্রধান, বিআরটিএ’র চেয়ারম্যান, ঢাকা ট্র্যাফিক পুলিশের (উত্তর ও দক্ষিণ) ডিসি, বিআরটিএ সড়ক নিরাপত্তা বিভাগের পরিচালককে চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়।