শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বৈঠকে বুয়েট উপাচার্য

আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডের পর থেকে পাঁচ দিন ধরে উত্তাল বুয়েটে দশ দফা দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছেন উপাচার্য অধ্যাপক সাইফুল ইসলাম।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 11 Oct 2019, 11:51 AM
Updated : 11 Oct 2019, 11:52 AM

শুক্রবার বিকাল সাড়ে ৫টায় কানায় কানায় পূর্ণ বুয়েট অডিটোরিয়ামে এ বৈঠক শুরু হয়। শুরুতেই আবরারের জন্য পালন করা হয় এক মিনিট নীরবতা।

সভা পরিচালনা করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার সাইদুর রহমান। মঞ্চে উপাচার্য অধ্যাপক সাইফুল ইসলামের সঙ্গে আছেন ছাত্রকল্যাণ পরিচালক মিজানুর রহমান, শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক এ কে এম মাসুদ এবং কয়েকজন ডিন।

আগের ঘোষণা অনুযায়ী, বুয়েটের মেইন গেইট থেকে দুই দফা পরিচয়পত্র পরীক্ষা করে শিক্ষার্থীরা অডিটোরিয়ামের বৈঠক স্থলে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়।

বিকাল ৩টার পর থেকেই লাইন ধরে আইডি কার্ড দেখিয়ে অডিটোরিয়ামে প্রবেশ করেন শিক্ষার্থী ও সাংবাদিকরা।

বুয়েটের শেরে বাংলা হলের আবাসিক ছাত্র ও তড়িৎ কৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আবরারকে গত রোববার রাতে ছাত্রলীগের এক নেতার কক্ষে নিয়ে নির্যাতন চালিয়ে হত্যা করা হয়। তারপর থেকেই আন্দোলন চালিয়ে আসছেন শিক্ষার্থীরা।

আবরারের খুনিদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা, তাদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আজীবন বহিষ্কার, আবরার হত্যা মামলার সব খরচ এবং ক্ষতিপূরণ বুয়েট থেকে বহ করান, দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে স্বল্পতম সময়ে মামলা নিষ্পত্তি, অবিলম্বে অভিযোগপত্র প্রকাশ, বিভিন্ন সময়ে নিরর্যাতনে জড়িতদের ছাত্রত্ব বাতিল এবং বুয়েটে সাংগঠনিক ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করার দাবি রয়েছে এই দশ দফর মধ্যে।

আর ছাত্রলীগের কর্মীদের মারধরে আবরার নিহতের পর ‘দ্রুত ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থতার জন্য’ সমালোচনার মুখে আছেন উপাচার্য।

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় শিক্ষার্থীদের সামনে এসে আন্দোলনকারীদের তোপের মুখে পড়েন তিনি। ওই দিন তাকে প্রায় সাড়ে চার ঘন্টা তালাবন্ধ করে রেখেছিল শিক্ষার্থীরা।

পরদিন কুষ্টিয়ায় আবরারের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করতে গেলেও এলাকাবাসীর প্রতিবাদের মুখে অধ্যাপক সাইফুলকে ব্যর্থ হয়ে ফিরে আসতে হয়।

উপাচার্য গত মঙ্গলবার শিক্ষার্থীদের দাবি নীতিগতভাবে মেনে নেওয়ার কথা বললেও শিক্ষার্থীরা সুনির্দিষ্ট ঘোষণার দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যায়।

বৃহস্পতিবার সকালে বুয়েট শহীদ মিনারের অবস্থান কর্মসূচি থেকে ভিসিকে সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছিল, বলা হয়েছিল- শুক্রবার বেলা ২টার মধ্যে তাকে শিক্ষার্থীদের সামনে এসে কথা বলতে হবে।

এই সময়ের মধ্যে উপাচার্যের দেখা পাওয়া না গেলে বুয়েটের সব ভবনে তালা মেরে দেওয়ার হুমকি ছিল শিক্ষার্থীদের।

তাদের ওই দশ দফার প্রতি সংহতি জানিয়ে আলাদাভাবে সাত দফা দাবি জানিয়েছে বুয়েট শিক্ষক সমিতি। দায়িত্বে ‘ব্যর্থতার’ অভিযোগে উপাচার্যের পদত্যাগও চাইছে তারা।