রোববার সকাল ১১টায় উত্তরায় অভিযানের প্রথম দিন ফুটপাত দখল করে রাখায় দুটি প্রতিষ্ঠানকে তিন লাখ টাকা জরিমানা এবং দুজনকে কারাদণ্ড দিয়েছে করপোরেশনের ভ্রাম্যমাণ আদালত।
ডিএনসিসির নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. আমিনুল ইসলাম, সাজিদ আনোয়ার, আব্দুল হামিদ মিয়া, জুলকার নাইনের নেতৃত্বে চালানো অভিযানে সোনারগাঁও জনপথ, গরীবে নেওয়াজ এভিনিউ, রবীন্দ্র সরণিসহ বিভিন্ন এলাকার ফুটপাত ও সড়ক থেকে প্রায় তিনশ অস্থায়ী দোকান, শেড, সিঁড়ি উচ্ছেদ করা হয়।
এছাড়া ফুটপাতে গড়ে তোলা যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের কার্যালয়ও ভেঙে ফেলা হয়েছে।
ওই বাড়ির মালিকের স্ত্রী শেলী অভিযোগ করেন, তার বাড়ির বাণিজ্যিক অনুমোদন আছে। কিন্তু তারপরও সামনের অংশ ভেঙে দেওয়া হয়েছে।
“আমার বাড়ির একটি বাড়ি আগেই একটি রেস্তোরাঁর কিছু অংশ ফুটপাতে থাকার পরও তা ভাঙা হয়নি। পাশেই আরেকটি ভবনের সামনের অংশও ফুটপাতের ওপর ছিল। সেটাও ভাঙা হয়নি।”
বেলা একটার দিকে তিন নম্বর সেক্টরের দুই নম্বর সড়কে ‘হাংরি ডাক’ নামের একটি রেস্তোরাঁর ফটক, সামনের অংশ এবং দোতলায় ওঠার সিঁড়ি ভেঙে দেওয়া হয়। ফুটপাত দখল করে এসব বানানো হয়েছিল।
একই সময়ে এক নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগ এবং আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের একটি অস্থায়ী কার্যালয়ও ভাঙা হয়।
বিকাল পাঁচটা পর্যন্ত চলা অভিযানে বেশিরভাগ অস্থায়ী স্থাপনা ভাঙা হয়েছে, ফুটপাতে গড়ে তোলা বড় স্থাপনার অংশ ভাঙা হয়নি কেন- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে ডিএনসিসির নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ বলেন, তারা সব অবৈধ স্থাপনাই উচ্ছেদ করবেন।
“কোনো স্থাপনা অল্প ভাঙা বা না ভেঙে চলে আসার মতো ঘটনা ঘটলে আমরা অবশ্যই সেটা পুরোপুরি ভাঙব। এ কাজে কেউ জড়িত থাকলে তদন্ত করে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
৭ নম্বর সেক্টরের ৩৫ নম্বর সড়কে অভিযানের সময় বাধা দেওয়ায় সাঈদ নামের একজনকে তিন মাস এবং অবৈধভাবে ফুটপাত দখল করে ব্যবসা করায় বিপুল চন্দ্র নামের আরেকজনকে সাতদিনের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
অনেক হয়েছে, আর না: মেয়র আতিক
“আমরা এত সুন্দর রাস্তা করেছি, ফুট্পাত করেছি পথচারীদের জন্য। কিন্তু পথচারীরা সেখানে হাঁটতে পারে না। নানা ধরনের অবৈধভাবে ফুটপাত দখল করে ব্যবসা করা হচ্ছে। বিভিন্ন রাজনৈতিক অফিস গড়ে তোলা হয়েছে ফুট্পাতে। এই ফুটপাত দখল করে অনেক ধরনের বাণিজ্য হচ্ছে। ফুটপাতে কোনো ধরনের বাণিজ্য চলবে না। ফুটপাতে কোনো ধরনের পলিটিক্যাল অফিস থাকতে পারবে না।
“আমি অনুরোধ করছি ফুটপাত খালি করে দিন। আমি জানি ফুটপাতে হকাররা বসছেন। অনেকে বড় মার্কেট করেছেন কিন্তু নিজেদের স্বার্থে মার্কেটের সিঁড়ি করেছেন ফুটপাতের মধ্যে। ফুটপাতে কোনো সিঁড়ি থাকতে পারবে না। আজ উত্তরায় (অভিযান) হচ্ছে, পর্যায়ক্রমে আমরা সব জায়গায় যাব।”
“আমি সব কাউন্সিলরকে বলেছি এ ব্যাপারে। কিন্তু কাউন্সিলররা দোষ দেয় পুলিশের আর পুলিশ দোষ দেয় কাউন্সিলরদের। দোষারোপ করলে চলবে না। জনগণকে বলছি, আপনারা আমাদের জানান। অনেক হয়েছে, আর না।”
অভিযান শেষ হওয়ার কদিন পরই ফুটপাত আবার আগের অবস্থায় চলে যায়- এ প্রসঙ্গে মেয়র বলেন, উচ্ছেদের পর স্থানীয় কল্যাণ সমিতিকে ফুটপাত বুঝিয়ে দেওয়া হবে।
“এরপর যদি দেখা যায় আবার ফুটপাত দখল হয়েছে। অবশ্যই আবার আমরা উচ্ছেদ করব।”