ঢাকার দুই সিটিতে ৩০ হাজার টন পশুর বর্জ্য অপসারণ

ঈদুল আযহার প্রথম দিনে কোরবানির পশু জবাইয়ের পর ঢাকা মহানগরীর দুই অংশ মিলিয়ে ৩০ হাজার টন বর্জ্য অপসারণ করা হয়েছে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 August 2019, 02:19 PM
Updated : 12 August 2019, 06:08 PM

এর মধ্যে সোমবার রাত ১০টা পর্যন্ত ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে ২০ হাজার টন বর্জ্য অপসারণের কথা জানা গেলেও ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের বর্জ্য অপসারণের হালনাগাদ তথ্য পাওয়া যায়নি।

এর আগে বেলা ২টা পর্যন্ত ঢাকা উত্তরে প্রায় ১০ হাজার টন বর্জ্য অপসারণ করা হয়েছে বলে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম জানিয়েছিলেন।

রাতে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা উত্তম কুমার রায় বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, সোমবার রাত ১০টা নাগাদ তারা ২০ হাজার টন বর্জ্য অপসারণ করেছেন। মঙ্গলবার বিকালের আগে আরও প্রায় সাত হাজার টন বর্জ্য অপসারিত হবে বলে তার ধারণা।

সোমবার সকালে ঈদের নামাজ আদায়ের পর রাজধানীবাসী ব্যস্ত হয়ে পড়েন পশু জবাই। ব্কিালের মধ্যে কোরবানির পশুও ভাগাভাগি হয়ে যায় প্রিয়জনদের মধ্যে।

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন এবছর মহাখালী পশু জবাইখানাসহ ২৭৩টি স্থানে পশু কোরবানির ব্যবস্থা করেছে। এছাড়াও জবাইয়ের জন্য ৪০০টি স্থান চিহ্নিত করে দিয়েছে। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন পশু জবাইয়ের জন্য ৬০২টি স্থান নির্ধারণ করে দিয়েছে।

তবুও অনেক রাজধানীবাসী কেউ নিজ বাসভবনে, কেউ ভবনের পাশে সরু সড়কে আবার কেউ নগরীর প্রধান সড়কেও পশু জবাই করেছেন।

সিটি করপোরেশনের ডাকে রাজধানীবাসীর সাড়া না মেলায় এই কার্যক্রমে কিছুটা জটিলতা দেখা দেবে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম।

সোমবার দুপুর ২টায় রাজধানীর উত্তরা ১৫নং সেক্টরের ২নং ব্রিজের পশ্চিম পাশে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম  উদ্বোধন করতে গিয়ে তিনি বলেন, “ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে ২৭৩টি স্থান নির্ধারণ করা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু নগরবাসী কোরবানি দিয়েছেন যত্রতত্র। বর্জ্য সরাতে তাই একটু সময় লাগবে।”

একই ধারণা ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা মো. মঞ্জুর হোসেনের। বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “নির্ধারিত স্থানে পশু কোরবানি না দেওয়ায় পরিবেশ আরও বেশি দূষিত হয়েছে। আমাদের কাজ করতে অসুবিধা হচ্ছে। সময় একটু বেশিই লাগছে।”

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের অঞ্চল-১ এর দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বাসুদেব সরকার বলেন, “আজকে ৫০০ টনের মতো বর্জ্য উৎপাদন হয়েছে। আমরা বিকাল ৫টার মধ্যে অধিকাংশ বর্জ্যই সরিয়ে ফেলেছি। যতক্ষণ না পর্যন্ত সব বর্জ্য আমরা সরাব, কাজ টানা চলতে থাকবে।”

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের অঞ্চল-৫ ও অঞ্চল-১০ এর দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মফিজুর রহমান ভুঁইয়া বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, সোমবার বিকাল ৫টা পর্যন্ত তার অঞ্চলের ৭০ শতাংশ বর্জ্য অপসারিত হয়েছে।

কারওয়ানবাজার, ফার্মগেইট, লালমাটিয়া, মোহাম্মদপুর পড়েছে অঞ্চল-৫ এ; অন্য দিকে বাড্ডা, সাতারকুঁল ও বেরাইদ এলাকা পড়েছে অঞ্চল-১০ এ।

মফিজুর রহমান ভুঁইয়া বলেন, “প্রধান সড়কগুলো থেকে বর্জ্য অপসারণে কাজ আমরা প্রায় শেষ করে ফেলেছি। তবে খবর আসছে, এখনও বেশকিছু গলিতে স্থানে স্থানে বর্জ্যের বস্তা পাওয়া যাচ্ছে। আমাদের পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা কাজ করছেন। রাতভর কাজ চলবে। আমরা যত দ্রুত সম্ভব বর্জ্য অপসারণ করব।”

এবছর কোরবানির পশুর বর্জ্য অপসারণের জন্য বিশেষ পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রমের আওতায় উত্তর সিটির নিজস্ব ২৪০০ এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ১৪৩৫ জন পরিচ্ছন্নতাকর্মী কাজ করছেন।

আরও ১১০০ পরিচ্ছন্নতাকর্মী এবং বাসা-বাড়ি থেকে ভ্যান সার্ভিসের মাধ্যমে বর্জ্য সংগ্রহ করার জন্য প্রায় ৪ হাজার ৫০০ জন শ্রমিক কোরবানির বর্জ্য অপসারণে নিয়োজিত রয়েছেন।

উত্তর সিটির পক্ষ থেকে এবার পশু কোরবানির জন্য ১০০ জন ইমাম এবং ২০০ জন মাংস প্রস্তুতকারীকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৫২৪১ জন কর্মীর পাশাপাশি ১২৫২ জন কর্মীকে অস্থায়ীভাবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে কোরবানির বর্জ্য অপসারণের জন্য। পাশাপাশি কোরবানির পশুর হাট পরিষ্কারের কাজে থাকবেন আরও ১৯৫৪ জন।