চট্টগ্রাম সরকারি মুসলিম হাই স্কুলের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক মোহাম্মদ ইসহাক। থাকেন নগরীর বায়েজিদ এলাকায়।
শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টায় বাসায় শিক্ষক মোহাম্মদ ইসহাককে দেখতে যান তথ্যমন্ত্রী হাছান। সঙ্গী হন তার দুই সহপাঠী জামাল নাসের চৌধুরী ও এস এম ইলিয়াস দুলাল।
১৯৭৮ সালে সরকারি মুসলিম হাই স্কুল থেকে এসএসসি পাস করেন হাছান মাহমুদ। তিনি বর্তমানে তথ্যমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক।
শুক্রবার স্কুল জীবনের শিক্ষকের বাসায় গিয়ে শুরুতে তাকে সালাম করেন তথ্যমন্ত্রী।
এ সময় শিক্ষক মোহাম্মদ ইসহাক প্রশ্ন করেন, তোমার সন্তান কয়জন?
উত্তরে তথ্যমন্ত্রী বলেন, “আমার এক ছেলে, দুই মেয়ে। ছেলে ষষ্ঠ শ্রেণিতে। মেয়েদের একজন এ-লেভেল পড়ছে।”
তখন ইংরেজির শিক্ষক মোহাম্মদ ইসহাক বলেন, “দেশের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো ভালো। চট্টগ্রামে সবচেয়ে ভালো স্কুল তিনটি- মুসলিম হাই, কলেজিয়েট ও খাস্তগীর।”
এ সময় তথ্যমন্ত্রী শিক্ষকের কাছে জানতে চান, এখন মুসলিম হাই স্কুলের পড়াশোনার মান কেমন? জবাবে শিক্ষক বলেন, “খুবই ভালো। প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয়- এরমধ্যে থাকেই।”
আলাপচারিতায় এই শিক্ষক বলেন, “আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজিতে মাস্টার্স করেছি, আবার বৈরুতে আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি থেকেও ইংরেজিতে এমএ করেছি, এরপর শিক্ষকতায় এসেছি।”
এসময় তথ্যমন্ত্রী বলেন, “স্যার শিক্ষকতায় না আসলে পাকিস্তানের সচিব হতেন।”
জবাবে মোহাম্মদ ইসহাক বলেন, “আমি তো সেখানে (প্রশাসনের কর্মকর্তা) যাব না বলে আগে থেকেই ঠিক করেছিলাম।”
অতীতের স্মৃতি রোমন্থন করে তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, “স্কুল জীবনে রাজনীতির সাথে জড়িয়ে পড়ায় আপনি স্যার একবার আমার বাবাকে অভিযোগ দিয়ে বলেছিলেন, আমি পড়ালেখার চেয়ে রাজনীতি নিয়ে ঘুরছি বেশি। এরপর বাবা আমাকে প্রচণ্ড পিটিয়েছিলেন।”
তথ্যমন্ত্রী সহপাঠী বিসিক কর্মকর্তা জামাল নাসের চৌধুরী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “স্যার ১৯৬৫ থেকে ১৯৯৪ সাল পর্যন্ত মুসলিম হাই স্কুলে শিক্ষকতা করেন। সহকারী শিক্ষক হিসেবে উনার কর্মজীবন শুরু করেন। শেষে তিনি প্রধান শিক্ষক হন।
“উনার বয়স ৮০ পেরিয়েছে। এখন কিছুটা অসুস্থও। আমাদের সেই সময়ের শিক্ষকদের মধ্যে দুয়েকজনই আছেন। বেশ কিছু দিন ধরে স্যারকে দেখতে যাওয়ার বিষয়ে আলোচনা হচ্ছিল। আজ তথ্যমন্ত্রীসহ আমরা উনাকে দেখতে যাই। কুশল বিনিময় হয়। আমরা উনার দোয়া নিয়েছি।”
“স্যারের অসামান্য অবদান ভুলে যাবার নয়। এ গুণী শিক্ষক তার সৃষ্টি ও কর্মের মধ্যে যুগ যুগ ধরে বেঁচে থাকবেন। তাদের ত্যাগ আমাদের কাছে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।”
ফিরে আসার সময় আবারও শিক্ষককে সালাম করেন তথ্যমন্ত্রী। এ সময় মাথায় হাত বুলিয়ে তাকে দোয়া করেন মোহাম্মদ ইসহাক।