যা ভাবি তাই শতভাগ সঠিক-এই ভাবনা থেকে বেরোতে হবে: সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী

সমাজে দ্বন্দ্ব-সংঘাত কমিয়ে আনার জন্য ব্যক্তির ভাবনা জগতে পরিবর্তনের পরামর্শ দিয়েছেন অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 June 2019, 04:11 PM
Updated : 23 June 2019, 04:11 PM

তিনি বলছেন, “আমরা ভাবব না, আমরা যা ভাবি তা-ই শতভাগ সঠিক। বরং যা ভাবি তার ৬০ ভাগ সত্য এবং ৪০ ভাগ সত্য নয়। এটার মধ্যে যা ভালো তা গ্রহণ করতে হবে।”

সিরাজুল ইসলাম চৌধুরীর ৮৩তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে রোববার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উচ্চতর মানবিক ও সামাজিক বিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্র মিলনায়তনে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

সমাজ-রূপান্তর অধ্যয়ন কেন্দ্র আয়োজিত অনুষ্ঠানে বিভিন্ন রাজনৈতিক-সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে এই লেখক-অধ্যাপককে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানানো হয়। বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, জাতীয় গণফ্রন্ট, সমাজতান্ত্রিক বুদ্ধিজীবী সংঘ, গণতান্ত্রিক আন্দোলন, বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল (মার্কসবাদী), ছাত্র ইউনিয়ন ও ছাত্র ফেডারেশনসহ বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে তাকে শুভেচ্ছা জানানো হয়।  

বক্তব্যে নিজের সম্পর্কে বলতে গিয়ে এস টি কোলরিজের একটি উক্তি তুলে ধরে সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, “মানুষের মধ্যে ট্যালেন্ট ও জিনিয়াস দুটোই থাকে। একই মানুষের মধ্যে দুটোই থাকে। জিনিয়াস হল বড় আর ট্যালেন্ট হল ছোট। আমি আমার জিনিয়াসকে দিয়েছি আমার জীবনকে, আর ট্যালেন্টকে দিয়েছি আমার জীবিকাকে।

“আমার জিনিয়াস থাকার প্রশ্নই নাই, কিন্তু ট্যালেন্ট যদি থেকে থাকে তা আমার জীবন ও জীবিকা দুটোকেই দিয়েছি। আমার জীবন ও জীবিকার মধ্যে কোনো ফারাক দেখতে পাইনি। কারণ আমার শিক্ষকতা সেটাও সাহিত্যের, আর আমার লেখা তাও সাহিত্য। এই দুয়ের মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। লেখাই আমার কাজ।”

লেখার শক্তির উৎস সম্পর্কে তিনি বলেন, “আমাদের সমাজ খুবই অন্যায়ের উপর প্রতিষ্ঠিত। ছোটবেলা থেকে আমি দারিদ্র্য দেখেছি।দারিদ্যের কারণে আত্মহত্যা করতে দেখেছি। সেটা স্বাধীনতাপূর্বের সময়কার কথা।

কিন্ত স্বাধীনতার পর এই দেশে আত্মহত্যার ঘটনা দেখেছি। ছোটবেলায় আত্মহত্যাকারীর ঝুলন্ত লাশ দেখে মৃত্যুর কারণ বুঝতে পারিনি। কিন্তু জীবনের একটা সময় এসে সেই মৃত্যুর কারণ আমি বুঝতে পারি।”