ঘূর্ণিঝড় ফণী: বন্দরে ৪ নম্বর সংকেত

ভারতের ওড়িশা উপকূলের দিকে এগোতে থাকা অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় ফণী আরও শক্তিশালী হয়ে ওঠায় দেশের সমুদ্রবন্দরগুলোতে সতর্কতার মাত্রা বাড়িয়ে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 May 2019, 08:29 AM
Updated : 1 May 2019, 08:29 AM

আবহাওয়ার বিশেষ বুলেটিনে বলা হয়েছে, বুধবার বেলা ১২টায় চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দর থেকে ১২৩৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্র বন্দর থেকে ১১৯০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্র বন্দর থেকে ১০৯৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্র বন্দর থেকে ১১০০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছিল ফণী।

ভারতের আবহাওয়া অফিস বলছে, ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৭৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ১৮০ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ২১০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে।

চার দিন আগে দক্ষিণপূর্ব বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপ থেকে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়া ফণী শুক্রবার দুপুরের পর পুরির দক্ষিণে গোপালপুর ও চাঁদবালির মাঝামাঝি এলাকা দিয়ে ওড়িশা উপকূল অতিক্রম করতে পারে বলে মনে করছেন ভারতীয় আবহাওয়াবিদরা।

ওই সময় বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ হতে পারে ঘণ্টায় ১৭৫ থেকে ১৮৫ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়োহাওয়ার আকারে ২০৫ কিলোমিটার পর্যন্ত বাড়তে পারে।

ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের কাছে সাগর খুবই বিক্ষুব্ধ থাকায় চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরকে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলেছে বাংলাদেশের আবহাওয়া অধিদপ্তর।

এছাড়া উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে এবং গভীর সাগরে বিচরণ না করতে পরামর্শ দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

উপকূল পার হওয়ার পর ধীরে ধীরে কমে আসবে ফণীর দাপট। তবে তার আগে বিস্তীর্ণ এলাকায় ঝরাবে বৃষ্টি, এর আওতায় থাকছে বাংলাদেশও।

আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ফরিদপুর, রাজশাহী, ঈশ্বরদী, মোংলা, যশোর ও চুয়াডাঙ্গা অঞ্চলের ওপর দিয়ে যে মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে তা কিছুটা প্রশমিত হতে পারে বুধবার।

রংপুর, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের দুই-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা/ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।

এক প্রতিবেদনে একুওয়েদার জানিয়েছে, যে বিস্তীর্ণ অঞ্চল ফণীর তাণ্ডবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে, সেখানে দশ কোটির বেশি মানুষের বসবাস।

এই ঝুঁকির কথা মাথায় রেখে ভারত সরকার ইতোমধ্যে অন্ধ্র, ওড়িশা, তামিল নাড়ু ও পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের জন্য জরুরি সহায়তার বরাদ্দ দিয়েছে। পাশাপাশি জরুরি ত্রাণ সহায়তা ও উদ্ধার কাজে অংশ নেওয়ার জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে সেনা, নৌ, বিমান বাহিনী ও কোস্ট গার্ডের সদস্যদের।

ভারতীয় আবহাওয়া অফিসের রেকর্ড অনুযায়ী, ১৮৯১ সাল থেকে ২০১৭ পর্যন্ত এপ্রিল মাসে বঙ্গোপসারে সৃষ্টি হয়েছে মাত্র ১৪টি ঘূর্ণিঝড়। তার মধ্যে ২০০৮ সালের নার্গিসই কেবল উপকূল অতিক্রম করেছে। 

পুরনো খবর