স্থানীয়দের ভাষ্য, আগুনের তীব্রতা এতটাই ছিল যে, রিকশায় বসে থাকা অবস্থাতেই এক দম্পতি শিশু সন্তানসহ জীবন্ত দগ্ধ হয়ে মারা যান। আর প্রথম যে ভবনে আগুন লাগে, সেই ওয়াহেদ মঞ্জিলের দোকানপাট ও গুদামে থাকা ক্রেতা-বিক্রেতাদের অধিকাংশই বের হওয়ারই সুযোগ পাননি। কিছু দেহ এমনভাবে পুড়েছে যে, শনাক্ত করারও উপায় নেই।
প্রত্যক্ষদর্শীদরাও বলেছেন, ওই মোড়ে ভিড়ের মধ্যে একটি পিকআপে থাকা গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরিত হলে প্রথমে রাস্তায় থাকা যানবাহনে এবং পরে আশপাশের ভবনে আগুন ছড়িয়ে পড়ে।
পুরান ঢাকার ওই সংকীর্ণ সড়কে রাত সাড়ে ১০টায় অগ্নিকাণ্ড শুরুর সময়ও ছিল যানবাহন আর মানুষের ভিড়। তাছাড়া মসজিদের সামনে ফুটপাতের উপর দোকান, আনাস হোটেলের সামনে একটি ফলের দোকান এবং আরও কয়েকটি ভাসমান দোকান ছিল। মসজিদের উত্তর পাশে, সামনে, দক্ষিণপাশের রাস্তায় ছিল গাড়ি আর চলতি পথের যাত্রীদের ভিড়।
আগুন লাগার দুই মিনিট আগে ওই এলাকার পরিস্থিতি কেমন ছিল তা উঠে এসেছে স্থানীয় আজগর আলী লেনের বাসিন্দা আবদুল আলিমের ভাষ্যে।
চকবাজারের প্লাস্টিক কাঁচামালের ব্যবসায়ী সাব্বির হোসেন বলেন, ওয়াহেদ মঞ্জিলের দোতলার পুরোটা পাইকারি ও খুচরা প্লাস্টিক জিনিসপত্রের কাঁচামালের দোকান ও গোডাউন ছিল। বিভিন্ন প্রসাধনীর গোডাউনও ছিল সেখানে। ওয়াহেদ মঞ্জিলের সামনেরও দুইটি ভবনের নিচ ও দোতলাতে একাধিক এ ধরনের দোকান ছিল। এলাকাটা মূলত প্লাস্টিক কাঁচামালের দোকান ও গোডাউন।
তিনি জানান, তার পরিচিত ওয়াহেদ মঞ্জিলের এমআর টেলিকমের দুই ভাই- রানা ও রাজু মারা গেছেন। এ ভবনের সামনের ভবনে হায়দার মেডিকোর মঞ্জু পুড়ে মারা যান।
মো. সোহেল নামের আরেক বাসিন্দা বলেন, “সড়কের একটি গাড়ি থেকে আরেকটি গাড়িতে আগুন মুহূর্তেই ছড়িয়ে পড়ে। আগুনের তীব্রতা এতটাই ছিল যে রিকশায় বসা অবস্থাতেই পুড়ে এক দম্পতি ও তাদের কোলের শিশু মারা গেছে।”
আরেক স্থানীয় ব্যবসায়ী মো. সোলায়মান বলেন, “আগুন রাস্তা থেকে দোকানে, এরপর কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে ভবনে লাগে। সবচেয়ে বেশি আগুন লাগে ওয়াহেদ মঞ্জিলে। এ ভবনের নিচ তলায় চোখের পলক ফেলা সময়ের মধ্যে আগুন ছড়িয়ে পড়ে, ভেতরের অধিকাংশ ক্রেতা-বিক্রেতা বাইরে বের হওয়ার সুযোগ পায়নি, সেখানে আটকে পড়ে বহু মানুষ মারা যায়।”
একই কথা বলেছেন আশিক উদ্দিন নামের আরেক বাসিন্দা।