কেরানীগঞ্জে বাবা-ছেলে খুনের দায়ে ৫ জনকে মৃত্যুদণ্ড

২৫ বছর আগে ঢাকার কেরানীগঞ্জে বাবা-ছেলে হত্যাকাণ্ডের আলোচিত মামলাটির পুনর্বিচারেও পাঁচ আসামির মৃত্যুদণ্ড বহাল থাকল।

আদালত প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 Sept 2018, 12:57 PM
Updated : 19 Sept 2018, 12:57 PM

ঢাকার সপ্তম জেলা ও দায়রা জজ বজলুর রহমান পুনর্বিচার শেষে বুধবার এই দণ্ডাদেশ দেন। রায়ের সময় কাঠগড়ায় দাঁড়ানো আসামিদের নির্বিকার দেখা গেছে।

শরীফ হোসেন ও তার শিশুপুত্র খোকনকে হত্যার দায়ে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিতরা হলেন- শফিকুল ইসলাম, নজরুল ইসলাম ওরফে নজু, মিস্টার ওরফে ছোট মিস্টার, মো. আরিফ ও মো. মাসুদ।

আসামিদের মধ্যে প্রথম তিনজন কারাগারে আছেন। রায়ের সময় এজলাসে আনা হয়েছিল তাদের। অন্য দুই আসামি আরিফ ও মাসুদ পলাতক।

আসামিদের প্রত্যেককে ৪০ হাজার টাকা জরিমানাও করা হয়েছে।

নিহতের আরেক ছেলে শাহজাহানকে জখম করার দায়ে ওই ৫ আসামিকে আরও পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন বিচারক।

১৯৯৩ সালের ১৩ জুলাই রাতে কেরানীগঞ্জের বরিশুর বাজারের পশ্চিম পাশে মালোপাড়া সংলগ্ন এলাকায় দোকানি শরীফ ও তার ছেলে খোকনকে (৯) কুপিয়ে হত্যা করা হয়, তখন জখম হন শাহজাহান (১২)।

রায়ের বিবরণ থেকে জানা যায়, শরীফের দুই শিশুপুত্র ওই দিন বাবার জন্য রাতের খাবার নিয়ে দোকানে এসেছিল। বাবার কাছে রাতের পড়া শেষ করে তারা দোকানের পেছনের কক্ষে ঘুমিয়ে ছিল।

ভোররাতে ওই আসামিরা দোকানে এসে সিগারেট ও কিছু মালামাল বাকিতে নিতে চাইলে শরীফ তা দিতে অস্বীকৃতি জানায়। তখন আসামিরা দা, চাপাতি দিয়ে শরীফকে কোপাতে শুরু করে। বাবাকে বাঁচাতে গিয়ে আসামিদের হামলায় মুখে পড়েন দুই ভাই খোকন ও শাহজাহান। শরীফ ও খোকন ঘটনাস্থলেই মারা যান।

ওই ঘটনায় শরীফের ছেলে আব্দুর রহিম বাদী হয়ে মামলা করেন। তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মাহমুদুল কবির ১৯৯৪ সালে ৫ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেন।

মামলাটিতে ২০০৪ সালের ২১ জুলাই ঢাকার তৎকালীন পঞ্চম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. কামরুল হোসেন মোল্লা (বর্তমানে বিচারপতি) আসামিদের ‘ডাবল’ মৃত্যুদণ্ডের রায় দিয়েছিলেন।

বাদীর আইনজীবী আবুল কালাম আজাদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, আসামিরা উচ্চ আদালতে আপিল করলে পুনরায় বিচারের নির্দেশ আসে।

উচ্চ আদালতে পুনর্বিচারের পাশাপাশি বিচারিক আদালতে পলাতক প্রত্যেক আসামির জন্য আলাদা আলাদা রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী নিয়োগের নির্দেশ দিয়েছিল।

আগের বিচারের সময় পলাতক সবার পক্ষে রাষ্ট্র নিযুক্ত একজন আইনজীবী ছিলেন, যা অনিয়ম মনে করে হাই কোর্ট ওই নির্দেশ দিয়েছিল।

উচ্চ আদালতের নির্দেশ মেনে পলাতক আসামিদের জন্য রাষ্ট্রের পক্ষে আলাদা আলাদা আইনজীবী নিয়োগ দিয়ে বিচারিক কার্যক্রম শেষ করার পর বুধবার রায় হল।