আগামী ১৮ সেপ্টেম্বর সেগুন বাগিচায় দুদক কার্যালয়ে তাকে উপস্থিত হতে বৃহস্পতিবার নোটিস পাঠিয়েছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের উপ-পরিচালক মো. সামছুল আলম।
কমিশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রনব কুমার ভট্টাচার্য্য বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানিয়েছেন, ১৮ সেপ্টেম্বর মোরশেদ খানের সঙ্গে তার স্ত্রী নাসরিন খানকেও তলব করা হয়েছে।
মোরশেদ খানের পাশাপাশি আরেকটি মামলায় তার ছেলেকেও ২০ সেপ্টেম্বর তলব করা হয়েছে বলে জানান প্রনব।
ফয়সাল মোরশেদ খানকে তলব করা হয়েছে ২০১৩ সালে গুলশান থানার দায়ের অর্থ পাচারের একটি মামলায়; এ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের উপ-পরিচালক মির্জা জাহিদুল আলম।
ঋণ আত্মসাতের অভিযোগে গত বছরের ২৮ জুন ঢাকার বনানী থানায় করা এই মামলায় মোরশেদ খানের স্ত্রী নাসরিন খান, সিটিসেলের এমডি মেহবুব চৌধুরীসহ মোট ১৬ জনকে আসামি করা হয়।
বন্ধ হয়ে যাওয়া সিটিসেলের মূল কোম্পানির নাম প্যাসিফিক টেলিকম বাংলাদেশ লিমিটেড (পিবিটিএল)। বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মোরশেদ খান এর চেয়ারম্যান, তার স্ত্রী নাসরিন খান একজন পরিচালক।
সিটিসিলের এক-তৃতীয়াংশের মালিকানা মোরশেদ খানের প্যাসিফিক মটরস লিমিটেডের।
মামলাটিতে আসামিদের বিরুদ্ধে সিটিসেলের নামে এ বি ব্যাংক থেকে অনিয়মের মাধ্যমে সাড়ে তিনশ কোটি টাকা ঋণ নিয়ে আত্মসাতের অভিযোগ করা হয় মামলায়।
মোরশেদ খান এ বি ব্যাংকেরও চেয়ারম্যান ছিলেন।
দেনার দায়ে ২০১৬ সালে বন্ধ হয়ে যাওয়া সিটিসেলের হাত ধরেই দেড় যুগ আগে বাংলাদেশে মোবাইল ফোনের যাত্রা শুরু হয়েছিল।
১৯৯৩ সালে প্যাসিফিক মটরস যখন সিটিসেলের মালিকানায় আসে, মোরশেদ খান তখন মন্ত্রীর মর্যাদায় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার বিনিয়োগ বিষয়ক বিশেষ দূতের দায়িত্বে। আর এইচ এম এরশাদ সরকারের সময়ে সিটিসেল যখন লাইসেন্স পায়, মোরশেদ খান তখন ছিলেন জাতীয় পার্টির কোষাধ্যক্ষ।
একমাত্র অপারেটর হওয়ার সুযোগে সিটিসেল বিএনপি সরকারের সময়ে একচেটিয়া ব্যবসা করে। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় যাওয়ার পর আরও কোম্পানিকে মোবাইল ফোন সেবার লাইসেন্স দেওয়া হলে সেই একচেটিয়া ব্যবসার অবসান ঘটে।
এরপর থেকে ধুঁকতে থাকা সিটিসেলে ২০০৪ সালে বিনিয়োগ করে সিঙ্গাপুরের সিংটেল। কিন্তু ব্যবসার আর প্রসার ঘটেনি।
জাপার হাওলাদারকে তলব
সরকারি সম্পদ আত্মসাতের মাধ্যমে শত কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধানে জাতীয় পার্টির মহাসচিব এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদারকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করেছে দুদক।
প্রনব কুমার ভট্টাচার্য্য বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, রুহুল আমিন হাওলাদারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে সরকারি আমলা ও আদালতে উৎকোচ প্রদান এবং সরকারি সম্পদ আত্মসাতের মাধ্যমে শত কোটি টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ রয়েছে।
ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে রাজউকের একাধিক প্লটের মালিকও হাওলাদার হয়েছেন বলে দুদকে অভিযোগ এসেছে।
দুদক কর্মকর্তারা বলেন, জাতীয় পার্টি সরকারের অংশীদার হওয়ার সুযোগ নিয়ে হাওলাদার বিভিন্ন অবৈধ সুবিধা গ্রহণ করেছেন বলেও অভিযোগ পেয়েছেন তারা।