‘নিয়ন্ত্রিত’ নির্বাচনের প্রক্রিয়ায় ইসি দর্শক: সুজন

একাদশ সংসদ নির্বাচন বর্তমান ইসি গ্রহণযোগ্য করতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছে নাগরিক সংগঠন সুজন।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 Sept 2018, 01:06 PM
Updated : 5 Sept 2018, 01:42 PM

সাম্প্রতিক সময়ে আলোচিত ই ভোট নিয়ে তারা বলেছে, ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনেও (ইভিএম) কারচুপি অসম্ভব নয়।

সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার সম্প্রতি অনুষ্ঠিত সিটি করপোরেশন নির্বাচনের অভিজ্ঞতায় বুধবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনও ‘নিয়ন্ত্রিতভাবে’ করার কার্যক্রম শুরু হয়েছে গেলে তার চোখে ধরা পড়েছে।

তিনি বলেন, “আইন শৃঙ্খলা বাহিনী দিয়ে বিরোধী দলগুলোর নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার এরই মধ্যে বোধহয় শুরু হয়ে গেছে। নিয়ন্ত্রিত নির্বাচন করার প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেছে। অথচ পুরো প্রক্রিয়ায় নির্বাচন কমিশন নির্বিকার, তারা যেন দর্শক।”

আগামী ডিসেম্বরে একাদশ সংসদ নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তুতি নিচ্ছে ইসি। কে এম নূরুল হুদা নেতৃত্বাধীন বর্তমান ইসির গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে ইতোমধ্যে প্রশ্ন তুলেছে দশম সংসদ নির্বাচন বর্জনকারী বিএনপি।

সিটি করপোরেশন নির্বাচনগুলোতে ইসি কার্যকর ভূমিকা রাখতে ব্যর্থ হয়েছে বলে বিএনপির দাবি।

সংবাদ সম্মেলনে সুজনের পক্ষ থেকেও বলা হয়, রাজশাহী, সিলেট ও বরিশাল সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তায় ক্ষমতাসীনদের প্রধান প্রতিপক্ষকে মাঠছাড়া করা, বিএনপি প্রার্থীর পোলিং এজেন্টদের দায়িত্ব পালনে বাধা সৃষ্টি করা, নির্বাচনের দিন জোর-জবরদস্তি করা এবং এসব বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের নির্বিকার ভূমিকা দেখা গেছে।

বদিউল আলম বলেন, “তাদের (ইসি) কার্যক্রম এরই মধ্যে প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। পাঁচ সিটি নির্বাচন তারা সুষ্ঠুভাবে করতে পারেনি। প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেছেন, জাতীয় নির্বাচনে অনিয়ম হবে না তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। অর্থাৎ অনিয়ম হবেই এমন একটি স্ট্যান্ডার্ড সৃষ্টি হয়েছে।”

ইভিএম নিয়ে সুজন সম্পাদক বলেন, “আমরা প্রযুক্তির বিরুদ্ধে নই, কিন্তু প্রযুক্তির ব্যবহার হতে হবে নির্ভরযোগ্য, সবার মতামতের ভিত্তিতে। ইভিএম সম্পর্কে জনসচেতনতা  সৃষ্টি ও এটি ব্যবহারে দক্ষ জনগোষ্ঠী সৃষ্টির করতে বছরের পর বছর সময় লাগবে, অথচ নির্বাচনের জন্য চার মাসেরও কম সময় রয়েছে।”

সুজনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী দিলীপ কুমার সরকার বলেন, “যারা নির্বাচন প্রক্রিয়ার সাথে যুক্ত তারা যদি নিরপেক্ষ না হন, তাহলে ইভিএম দিয়েও কারচুপি করা সম্ভব।”

বদিউল আলম বলেন, “নির্বাচন কমিশনের এখন দৃঢ় ও সাহসী পদক্ষেপ নেওয়া দরকার, যাতে নিয়ন্ত্রিত নির্বাচন না হয়।”

সংবিধানে নির্বাচন কমিশনকে যে ‘অগাধ ক্ষমতা’ দেওয়া হয়েছে, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের স্বার্থে তা প্রয়োগ করার উপর জোর দেন তিনি।