সপ্তাহে ৪ লাখ জাল টাকা ছাড়ার টার্গেট ছিল চক্রের: পুলিশ

ঢাকায় বসে প্রতি সপ্তাহে ৩০ থেকে ৪০ লাখ টাকার জালনোট বাজারে ছাড়ার লক্ষ্য নিয়ে একটি চক্র কাজ করছিল বলে জানিয়েছে পুলিশ।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 August 2018, 03:56 PM
Updated : 18 August 2018, 04:09 PM

শনিবার দুপুর ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা ) আব্দুল বাতেন এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, এই চক্র প্রতি সপ্তাহে ৩০ থেকে ৪০ লাখ টাকা ছাপায়। এক লাখ টাকা তৈরী করতে খরচ হয় ১০ হাজার টাকা। কারখানা থেকে এজন্টের কাছে একলাখ টাকার বান্ডিল ১৪ থেকে ১৫ হাজার টাকায় বিক্রি করা হয়ে থাকে। পরে এজেন্টরা পরবর্তী এজেন্টদের কাছে টাকার অংক বাড়িয়ে দিয়ে থাকে।

“ঈদ বা পূজা এমন কোনো ধর্মীয় উৎসবকে সামনে রেখে এই চক্রটির টার্গেট আরো বেড়ে যায় এজন্য তারা বেশ তৎপর হয়ে উঠে।”

এই চক্রটিকে শুক্রবার রাতে গ্রেপ্তার করে ৭৫ লাখ জাল টাকা জব্দ করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

এরা হলেন- চক্রের মূল হোতা কাউসার হামিদ, আলাউদ্দিন, নজরুল ইসলাম, মোস্তফা, সোহেল, মজিবর রহমান, সজিব হোসেন ও সালেহা বেগম।

রাজধানীতে দুইটি ছাড়াও পাটুয়াখালীতে এই চক্রের একটি জাল টাকা বানানোর কারখানা রয়েছে বলে জানান পুলিশ কর্মকর্তা।

“আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ এড়াতে বা কারো যেন সন্দেহ না হয় সেজন্য একটি কারখানায় কাগজ রাখে, অন্য কারখানায় নিয়ে তা ছাপায়। আবার আরেক জায়গায় নিয়ে তা মজুদ করে।”

গোয়েন্দা কর্মকর্তা জানান, কাওসার আগে তার বড় ভাইয়ের সাথে এই ব্যবসা করতো। প্রায় ১২ ধরে সে এই ব্যবসা তার কয়েকজন সহযোগীকে নিয়ে করে থাকে।

এই চক্রের উল্লেখযোগ্য সংখ্যক সদস্য আছেন, যারা মাঠ পর্যায়ে জাল টাকা ছড়িয়ে দেয়- বিশেষ করে হাটে, বাজারে, মেলায়।

সংবাদ সম্মেলনে ৮ ছিনতাইকারীকে গ্রেপ্তার প্রসঙ্গে অতিরিক্ত কমিশনার আব্দুল বাতেন জানান, এই ৮ ছিনতাইকারীর মধ্যে চারজন খুবই চতুর। তাদের একটি বড় নেটওয়ার্ক আছে। এরা খুবই সংঘবদ্ধ।

এই চারজন হচ্ছে- সাজ্জাদ হোসেন সাগর, আলী হাসান, সবুজ বিশ্বাস এবং রকি নুরুজ্জামান।

যাত্রাবাড়ী থেকে গ্রেপ্তারের পর এই চারজনের মধ্যে সাগরের বাসা থেকে পুলিশ আট লাখ টাকা উদ্ধার করে, যা ছিনতাই করে আনা বলে গোয়েন্দা কর্মকর্তার দাবি।  

বাকি চারজনের মধ্যে তিনজনই নারী। এরা হলেন- মুক্তা বেগম, বেবী আক্তার, নুপুর ঝুমুর। আর অপর জন হচ্ছে লিটন মিয়া।

আব্দুল বাতেন বলেন, এই নারীরা কোনো শপিং মলে বা মার্কেটে কিনতে আসা কোনো মহিলার ভ্যানিটি ব্যাগ থেকে কৌশলে টাকা বা মোবাইল ফোন নিয়ে থাকে।

চারঘণ্টায় তারা অন্তত আটটি মোবাইল ফোন নিতে পারে বলে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে বলে তিনি জানান।

“এরা মহিলাদের ভিড়ে ঢুকে কোনো কিছু কেনার অভিনয়ে জিনিসপত্র দরদাম করে এবং সুযোগ বুঝে অন্য ক্রেতার মোবাইল ফোন বা টাকা পার্টস হাতিয়ে নেয়।”

এই সব ছিনতারইকারীদের কাছ থেকে আট লাখ টাকা ছাড়াও একটি মাইক্রোবাস, চাপাতি, চাকু, মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়েছে বলে তিনি জানান।