৯ জেলা বন্যার কবলে: ত্রাণমন্ত্রী

উজানে বৃষ্টি আর ঢলে দেশের নয় জেলা বন্যার কবলে পড়েছে বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 10 July 2018, 10:49 AM
Updated : 10 July 2018, 10:49 AM

মঙ্গলবার সচিবালয়ে দুর্যোগ বিষয়ক স্থায়ী আদেশাবলীর (এসওডি) হালনাগাদ খসড়া এবং বন্যা পরিস্থিতি পর্যালোচনা সভা শেষে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান মন্ত্রী।

বন্যা মোকাবেলায় এবার আগাম প্রস্তুতি ছিল জানিয়ে মায়া বলেন, “আল্লাহর অশেষ রহমত যে সেই ধরনের বন্যা আমাদের মোকাবেলা করতে হয়নি, নয়টি জেলা বন্যা কবলিত হয়েছে।”

তিনি জানান, বন্যায় মৌলভীবাজার ও নীলফামারীতে বেশি ক্ষতি হয়েছে। কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, বগুড়া, সিরাজগঞ্জ, জামালপুর, সিলেট ও সুনামগঞ্জ জেলাও বন্যা কবলিত হয়েছে।

“বন্যা কবলিত জেলাগুলোতে আশ্রয়কেন্দ্র করলেও সেখানে বেশি লোক যায়নি। মৌলভীবাজারে তিন থেকে পাঁচ দিন পানি থাকলেও আমাদের সকলের তৎপরতায় কোনো সমস্যা হয়নি।”

আগাম প্রস্তুতির অংশ হিসেবে বন্যা হতে পারে এমন ৩৫টি জেলায় ৭৫ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার পাঠানো হয়েছে বলে জানান ত্রাণমন্ত্রী।

তিনি বলেন, গত ১ জুলাই থেকে এ পর্যন্ত ৬৪ জেলায় এক কোটি ১২ লাখ টাকা ও সাড়ে পাঁচ হাজার টন জিআর চাল দেওয়া হয়েছে।

“বন্যার যাদের ঘরবাড়ি নষ্ট হয়ে গেছে তা মেরামত ও নতুন ঘর তৈরির জন্য জেলা প্রশাসকদের অনুকূলে ৫০ হাজার বান্ডিল টিন ও ১৫ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর এক হাজার টন চাল ও দুই কোটি টাকা হাতে রেখেছে, চাহিদা পেলেই পাঠানো হবে।”

এর বাইরে প্রত্যেক জেলায় ১৫০ থেকে ২০০ টন করে চাল এবং তিন থেকে পাঁচ লাখ করে টাকা থোক বরাদ্দ হিসেবে রয়েছে বলে জানান ত্রাণমন্ত্রী।

পাহাড় ধসে প্রাণহানি নিয়ে এক প্রশ্নে মায়া বলেন, “ওখানকার লোকজন বাড়ি থেকে সরতে চায় না। দুর্যোগের সময় জেলা প্রশাসন মাইকিং করে আশ্রয়কেন্দ্রে আসতে বলেন। অনেক সময় জোর করে আশ্রয় কেন্দ্রে আনলেও অনেকে পালিয়ে যায়। এখন অবস্থার উন্নতি হচ্ছে, আমরা তাদের পুনর্বাসন করছি। আশা করি এই কষ্ট বেশি দিন থাকবে না।”

ঝড়-বৃষ্টিতে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় থাকা রোহিঙ্গাদের সরিয়ে নেওয়ার বিষয়ে ত্রাণমন্ত্রী বলেন, “আমরা বলেছিলাম ২৫ থেকে ৫০ হাজার রোহিঙ্গা পরিবার ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। আমরা তাদের চিহ্নিত করে আরেকটি নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছি।”

ইতোমধ্যে ৩০ থেকে ৩৫ হাজার পরিবারকে নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নেওয়া হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, “বৃষ্টির জন্য সরিয়ে নিতে অসুবিধা হচ্ছে। যারা ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে, আশা করি তাদের সরিয়ে নিতে সক্ষম হব।”

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ সচিব শাহ কামাল, সমাজকল্যাণ সচিব জিল্লার রহমান, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আলমগীর, পানিসম্পদ সচিব কবির বিন আনোয়ার, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক রিয়াজ আহমেদ ছাড়াও বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও সংস্থার প্রতিনিধিরা সভায় উপস্থিত ছিলেন।