বাংলাদেশে ফুটবল শেখাবে ব্রাজিল

বাংলাদেশের ফুটবলের অবস্থা উন্নয়নে দেশটির স্কুল পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি কোচদের প্রশিক্ষণ দেবে ব্রাজিল।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 June 2018, 08:10 AM
Updated : 21 June 2018, 08:10 AM

ঢাকায় নিযুক্ত ব্রাজিলের রাষ্ট্রদূত জোয়াও তাবাজারা ডি অলিভেরা বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী বীরেন শিকদারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে একথা জানান।

প্রতিমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, যুব ও ক্রীড়া সচিবসহ কর্মকর্তারা ব্রাজিল সফরকালে শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণ নিয়ে কথাবার্তা হয়। সেটার ধারাবাহিকতায় রাষ্ট্রদূত এসেছিলেন, তার সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে।

চীনে স্যোশাল প্রোগ্রামের আওতায় ব্রাজিল স্কুল পর্যায় থেকে শুরু করে ফুটবল প্রশিক্ষণ দেয় জানিয়ে বীরেন বলেন, “অনুরূপভাবে বাংলাদেশের স্কুল ফুটবলকে এগিয়ে নিতে তারা সরকারের সঙ্গে কাজ করতে চায়। আমরা তাদের বিকেএসপি ভিজিটের জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছি।

“বাংলাদেশের ফুটবল যাতে আরও এগিয়ে যেতে পারে সেজন্য কোচ দিয়ে, প্রশিক্ষণ দিয়ে, কোচদের প্রশিক্ষণ দিয়ে সহযোগিতা করতে তারা রাজি হয়েছে। এটা নিয়ে পরে আবার বসব। নীতিগতভাবে তারা সহযোগিতা দিতে রাজি হয়েছে।”

এই প্রশিক্ষণ কার্যক্রম বিকেএসপিতে শুরুর অভিপ্রায় ব্যক্ত করে ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী বলেন, বিকেএসপির কোচদের আরও সক্ষম করতে তারা তাদের কোচ দিয়ে সহযোগিতা করবে।

“আমাদের কোচদের আরও সমৃদ্ধ করবে। নীতিগতভাবে তারা সম্মত হয়েছে, আমরা আশা করি এ কাজটি শুরু করতে পারলে আমাদের ফুটবলের ব্যাপক উন্নতি হবে।”

তবে ব্রাজিল কোন ‘ফরমেটে’ বাংলাদেশে কাজ করবে তা নিয়ে এখনও আলোচনা হয়নি বলে জানান যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী।

৪ বছরের জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কার শিগগিরই

২০১৩ থেকে ২০১৬ সালের জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কার শিগগিরই ঘোষণা করা হবে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, খসড়া তালিকা অনুমোদনের জন্য আগামী সপ্তাহে মন্ত্রিসভায় পাঠানো হবে। মন্ত্রিসভায় চূড়ান্ত হওয়ার পর পুরস্কার বিতরণে প্রধানমন্ত্রী সময় দিলে পুরস্কার তুলে দেওয়া হবে।

“আমরা আমাদের সময়ের মধ্যে জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কার আপডেট অবস্থায় রেখে যেতে চাই।”

শুরু হচ্ছে অনুর্ধ্ব-১৭ ফুটবল টুর্নামেন্ট

শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে ১২ থেকে ১৭ বছর বয়সী যে কোনো ছেলে-মেয়েদের নিয়ে এবার থেকেই অনুর্ধ্ব-১৭ গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট আয়োজন করা হবে বলে জানিয়েছেন ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী বীরেন শিকদার।

যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় এই টুর্নামেন্ট আয়োজন করবে জানিয়ে তিনি বলেন, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নিয়ে অনুর্ধ্ব-১২ ফুটবল টুর্নামেন্ট আয়োজন হলেও ধারাবাহিকতা না থাকায় তারা হারিয়ে যায়।

“যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় থেকে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে ১২ থেকে অনুর্ধ্ব ১৭ ফুটবল টুর্নামেন্ট চালু করব। ছেলে ও মেয়েদের জন্য আলাদা টুর্নামেন্ট হবে, তবে এবার হবে শুধু ছেলেদের জন্য।”

এই টুর্নামেন্ট আয়োজনে বাজেটে বরাদ্দ পাওয়ার কথা জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, এবারই প্রথম বাজেটে আংশিক ক্রীড়া বাজেট রাখা হয়েছে। আশা করব আগামীতে পূর্ণাঙ্গ ক্রীড়া বাজেট পাব। প্রশিক্ষণের জন্যও আমরা বরাদ্দ পেয়েছি।

অনুর্ধ্ব-১৭ গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট সেপ্টেম্বরে শুরু করে অক্টোবরে শেষ করার পরিকল্পনা জানিয়ে বীরেন বলেন, শুধু হাই স্কুলের শিক্ষার্থীরা খেলবে এমন না। ক্লাবের ছেলে-মেয়েরাও খেলতে পারবে। ১২ থেকে ১৭ বছর বয়সী যে কেউ খেলতে পারবে।

প্রত্যেক উপজেলায় ক্রীড়া সংস্থা আছে জানিয়ে ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী বলেন, এই টুর্নামেন্ট আয়োজনে তাদের বরাদ্দও দেওয়া হয়েছে। প্রত্যেক উপজেলায় একটি করে মিনি স্টেডিয়াম করা হচ্ছে, ওই স্টেডিয়াম ক্রীড়া সংস্থাকে দেব, সেখানে খেলা হবে। যেসব উপজেলায় এখনও মিনি স্টেডিয়াম হয়নি সেসব উপজেলার ভালো কোনো মাঠে খেলা হবে।

প্রতিমন্ত্রী জানান, ইউনিয়ন পর্যায়ের দলগুলে উপজেলায় খেলবে। বিভিন্ন দল থেকে নিয়ে উপজেলার সেরা ১১ জন খেলোয়াড় খেলবে জেলা পর্যায়ে। প্রতি জেলার সেরা ১১ জন খেলবে বিভাগীয় পর্যায়ে। আর বিভাগীয় পর্যায়ের খেলায় অংশ নেওয়া সেরা ১১ জন খেলোয়াড়কে নিয়ে গঠন করা হবে বিভাগীয় টিম।

উপজেলা, জেলা ও বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থা সেরা ১১ জন খেলোয়াড় নির্বাচন করবে।

প্রাথমিক পর্যায়ে ১ লাখ ২২ হাজার জন খেলায় অংশ নেবে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, জাতীয় পর্যায়ে ৬৬ জনকে ধারাবাহিকভাবে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে যাতে এরা হারিয়ে না যায়। এদের জাতীয় পর্যায়ে পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্ব পালন করব। প্রাথমিক পর্যায়ের খেলায় যারা ভালো খেলে তাদের ধরে নিয়ে ১৭ পর্যন্ত পৌঁছে দেব যাতে কিনা তারা জাতীয় পর্যায়ে প্রতিনিধিত্ব করতে পারে।

“ফুটবলের যে খারাপ একটি অবস্থা রয়েছে, এই ধারাবাহিকতা রক্ষা করে ফুটবলকে টেনে তুলতে পারি সেজন্য আমাদের এই প্রচেষ্টা।”