তাদের বরাত দিয়ে মঙ্গলবার এবিসি নিউজের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অবৈধভাবে লোকজনকে অস্ট্রেলিয়ায় নেওয়ার এই চক্রে একজন রোহিঙ্গাও আছেন।
রোহিঙ্গা শরণার্থীরা যখন সমুদ্র পাড়ি দিয়ে মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়ার যাওয়ার চেষ্টা করছে, তখন এ খবর প্রকাশ হল। গেল সপ্তাহে ইন্দোনেশিয়ার উপকূল থেকে ৭৬ শরণার্থীকে উদ্ধার করা হয়, যারা নয় দিন সাগরে ভেসে ছিলেন।
ইন্দোনেশিয়া পুলিশের সাধারণ অপরাধ বিভাগের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হেরি রুডলফ নাহাক বলেছেন, তারা ছয়জন বাংলাদেশির ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করে তাদের রোহিঙ্গা সাজিয়ে মালয়েশিয়া থেকে স্পিডবোটে করে আনে। কালিমান্তন ও জাভা হয়ে তাদের অস্ট্রেলিয়ার নিকটবর্তী পাপুয়া প্রদেশের মেরাউকে বন্দরে নিয়ে যায়।
সেখান থেকে তাদের অস্ট্রেলিয়ায় নিয়ে যেতে পাচারকারীরা একটি মাছ ধরার নৌযান ভাড়া করার পরিকল্পনা করেছিলেন।
নিজেদের রোহিঙ্গা পরিচয় দিয়ে মিয়ানমারে নিপীড়ন থেকে পালিয়ে আসার কথা বলায় যাত্রাপথে স্থানীয় ইন্দোনেশীয়রা তাদের প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয় বলে পুলিশ কর্মকর্তা নাহাক জানান।
তার ভাষ্য মতে, রোহিঙ্গাদের প্রতি সহানুভূতিশীল একটি কমিউনিটির লোকজন তাদের মেরাউকেতে পৌঁছাতে বিমানের টিকেট কেনার জন্য টাকাও তুলেছিলেন।
“এই লোকগুলো ছিল প্রকৃতপক্ষে মালয়েশিয়ায় কর্মরত বাংলাদেশি। অস্ট্রেলিয়ায় গেলে আরও বেশি আয়ের প্রলোভন দেখিয়ে তাদের এই যাত্রায় রাজি করায় পাচারকারীরা।”
পাচারকারীদের মধ্যে রোহিঙ্গা ছাড়া অপর দুজন বাংলাদেশি ও ইন্দোনেশীয়। বাংলাদেশিদের এভাবে পাচারের ছক কষেছিলেন আগে ইন্দোনেশিয়ায় আশ্রয় নেওয়া ওই রোহিঙ্গা শরণার্থী, যিনি ইন্দোনেশিয়ার স্থানীয় ভাষায় বেশ পারদর্শী।
এবিসি নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়, পাপুয়ার বাসিন্দারা সন্দিগ্ধ হয়ে আগন্তুকদের বিষয়ে স্থানীয় পুলিশে রিপোর্ট করার পর মানবপাচারের এই চেষ্টা ধরা পড়ে।
গত বছরের শেষ দিকে ওই বাংলাদেশিদের হেফাজতে নেওয়ার পর তারা ঘটনার বিস্তারিত প্রকাশ করে দেয়। তারা এখন ইন্দোনেশিয়ায় সাক্ষী সুরক্ষার আওতায় আছেন। আর পাচারকারী চক্রের সদস্যদের বিচার চলছে।
এই ব্যক্তিদের কাছ থেকে এটিএম কার্ড, বিমানের টিকেট ও ১৬ হাজার অস্ট্রেলীয় ডলারের সমপরিমাণ অর্থ উদ্ধার করা হয় বলে ইন্দোনেশীয় পুলিশের তথ্য।