চাকরির কোটা সংস্কার: এখনও অগ্রগতি ‘নেই’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারি চাকরিতে নিয়োগের কোটা পদ্ধতি একেবারে তুলে দেওয়ার যে ঘোষণা দিয়েছে, তার গেজেট প্রকাশের কাজে এখনও কোনো অগ্রগতি হয়নি বলে জানিয়েছেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব মো. মোজাম্মেল হক।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 April 2018, 06:18 AM
Updated : 19 April 2018, 06:18 AM

কোটা পদ্ধতি সংস্কারে মন্ত্রিপরিষদ সচিবরে নেতৃত্বে কমিটি গঠনের অগ্রগতি জানাতে চাইলে বুধবার রাতে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “এখনও কিছু হয়নি।”

কোটা সংস্কার নিয়ে এখনও প্রধানমন্ত্রীর কোনো নির্দেশনা পাওয়া যায়নি জানিয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় বলছে, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা পেলে সঙ্গে সঙ্গে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে তারা প্রস্তুত।

বর্তমানে সরকারি চাকরিতে নিয়োগে ৫৬ শতাংশ পদ বিভিন্ন কোটার জন্য সংরক্ষিত; এর মধ্যে মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের জন্য ৩০ শতাংশ, নারী ১০ শতাংশ, জেলা ১০ শতাংশ, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ৫ শতাংশ, প্রতিবন্ধী ১ শতাংশ।

কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারী ‘ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ’ কোটার পরিমাণ ১০ শতাংশে কমিয়ে আনার দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে আসছে গত দুই মাস ধরে। গত ৮ এপ্রিল রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে ব্যাপক সংঘর্ষ হয় পুলিশ ও ছাত্রলীগের। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর চালানো হয়।

শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে ক্ষোভ প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ১১ এপ্রিল জাতীয় সংসদে বলেন, কোটা নিয়ে যেহেতু এত কিছু, সেহেতু কোনো কোটাই আর রাখা হবে না।

কোটা নিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিবের নেতৃত্বে একটি কমিটি করার কথাও ওই দিন বলেন সরকারপ্রধান।

পরদিন কয়েকটি দাবি রেখে আন্দোলন স্থগিতের ঘোষণা দেয় বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ।

তার এক সপ্তাহের মাথায় বুধবার পরিষদের এক সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, সংঘর্ষ-ভাঙচুরের ঘটনায় করা মামলা সাত দিনের মধ্যে প্রত্যাহার করা না হলে সারা দেশে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করা হবে।

প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা বাস্তবায়নে ‘অতি দ্রুত’ প্রজ্ঞাপন জারিরও দাবি জানান পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুল হক নূর।

এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে জনপ্রশাসন সচিব বলেন, “তারা এখন যদিও আন্দোলন চাঙ্গা রেখেছেন, কিন্তু আমার মনে হয় না এটা জটিল কিছু। প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিলেই হয়ে যাবে।”

রাষ্ট্রীয় সফরে বর্তমানে লন্ডন অবস্থান করছেন প্রধানমন্ত্রী। আট দিনের এই সফর শেষে আগামী ২৩ এপ্রিল তার দেশে ফেরার কথা রয়েছে।

তার দেশে ফেরার আগে কোটা সংস্কারে কমিটি গঠনের বিষয়ে কোনো অগ্রগতির আশা আছে কি না- এই প্রশ্নে মোজাম্মেল হক বলেন, “না, আপাতত বোধহয় না, একটু দেরি করতে হবে, কারণ এটা তো সিরিয়াস কিছু না আপাতত।”

কোটা সংস্কারের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর কোনো নির্দেশনা পেয়েছেন কি না- এ প্রশ্নে জনপ্রশাসন সচিব বলেন, “অগ্রগতি কিছু নেই। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যদি বলেন যে এখনই ঘোষণা দিয়ে দাও, এটা ইচ্ছে করলে আমরা দুই দিনেই দিয়ে দিতে পারব, এটা কোনো বিষয় না।”

কোটা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী কোনো নির্দেশনা দিলে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় প্রজ্ঞাপন জারি করে তা বাস্তবায়ন করবে বলে জানান জানান তিনি।