সাধারণ বীমা করপোরেশন জানিয়েছে, নিহত প্রত্যেকের জন্য দুই লাখ ডলার (১ কোটি ৬৬ লাখ টাকা) করে ক্ষতিপূরণ আদায়ের চেষ্টা চলছে।
গত সোমবার কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন বিমানবন্দরে ইউএস-বাংলার উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হয়ে ৭১ আরোহীর মধ্যে ৪৯ জনের মৃত্যু হয়। তাদের মধ্যে চার ক্রুসহ ২৬ জন ছিলেন বাংলাদেশি।
আহত ১০ বাংলাদেশির মধ্যে কয়েকজনকে এরই মধ্যে দেশে ফিরিয়ে এনে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
দুর্ঘটনার পর থেকেই হতাহতদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার বিষয়টি আলোচনায় ছিল।
ইউএস-বাংলার যাত্রীদের বীমা করা ছিল জানিয়ে সিভিল এভিয়েশনের চেয়ারম্যান এম নাইম হাসান দুর্ঘটনার পর বলেছিলেন, “সাধারণত দুই ধরনের বীমা থাকে। একটা প্যাসেঞ্জারের, অন্যটা প্লেনের নিজস্ব বীমা। ইউএস বাংলারও আছে।”
ইউএস-বাংলার মার্কেটিং সাপোর্ট অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের মহাব্যবস্থাপক কামরুল ইসলাম শনিবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “প্লেন দুর্ঘটনার পরপরই বীমা দাবি করে সেনাকল্যাণ ইন্স্যুরেন্স কর্তৃপক্ষকে আমরা চিঠি দিয়েছি, সেই সাথে আন্তর্জাতিক এভিয়েশন বীমা করা হয়েছে ‘কে এম দাস্তুর’ নামের ব্রিটিশ ইন্স্যুরেন্সে।
কামরুল বলেন, “আমরা বীমা কোম্পানিদের জানিয়েছি, তারা তাদের কাজ শুরু করেছে, এখন বাকি দায়-দায়িত্ব তাদের।”
সেনাকল্যাণ ইন্স্যুরেন্স, কে এম দাস্তুর কোম্পানির পক্ষ থেকে তদন্ত শুরু হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, সরকারি সংস্থা সাধারণ বীমা করপোরেশনও কাজ করছে।
“তাদের মূল্যায়ন প্রতিবেদন পাওয়ার পরই বলা যাবে, নিহত যাত্রীদের স্বজন ও আহতরা কী পরিমাণ ক্ষতিপূরণ পাবেন।”
কামরুল বলেন, এই তিন প্রতিষ্ঠানেই তাদের বীমা করা আছে। তদন্তের পর প্রতিষ্ঠান তিনটি মিলে নিহত-আহত যাত্রী, পাইলট, কেবিন ক্রুসহ উড়োজাহাজের ক্ষতিপূরণ দেবে।
“তবে কোন প্রতিষ্ঠান কত শতাংশ ক্ষতিপূরণ দেবে সে বিষয়ে আমরা এখন নিশ্চিত নই। কারণ এ ধরনের পরিস্থিতির মুখোমুখি এর আগে আমরা হইনি। তবে আমরা এটুকু জানি, তিন প্রতিষ্ঠান থেকেই ক্ষতিপূরণ পাব।”
সাধারণ বীমা করপোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ শাহরিয়ার আহসান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বিমান দুর্ঘটনার সংবাদ পাওয়া মাত্রই আমরা সংশ্লিষ্ট সব জায়গায় যোগাযোগ করেছি এবং প্রতিদিনই আমরা যোগাযোগ রাখছি। তদন্ত যত দ্রুত সম্ভব শেষ করে আমরা নিহতদের ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করব।”
তবে ইউএস-বাংলার কর্মকর্তা কামরুল বলেন, নিহতরা সবাই সমান পরিমাণ ক্ষতিপূরণ পাবেন না।
“নিহতের পরিবারের সদস্যসংখ্যা, বয়স, সামাজিক অবস্থাসহ বেশ কিছু নিয়ামকের উপর ভিত্তি করে ক্ষতিপূরণের অর্থ নির্ধারণ করা হয়।”
নেপাল কর্তৃপক্ষের যদি গাফিলতি থাকে সেক্ষেত্রে সেখান থেকে ক্ষতিপূরণ পাওয়া যাবে কি না- জানতে চাইলে কামরুল বলেন, “বাংলাদেশ, নেপাল ও আন্তর্জাতিক সিভিল এভিয়েশন এবং বোমবারডিয়ার এয়ারলাইনস কর্তৃপক্ষ আন্তর্জাতিকভাবে একটি তদন্ত পরিচালনা করছে। নেপাল থেকে কী পরিমাণ ক্ষতিপূরণ পাওয়া যাবে, তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর সে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যাবে।”