দুই পয়েন্ট কমানো অত সহজ নয়: দুদক চেয়ারম্যান

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের দুর্নীতির ধারণা সূচকে সামান্য অগ্রগতিতে ‘আত্মতুষ্টিতে’ না ভুগলেও দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ মনে করছেন, এটা তাদের ‘অনেক প্রচেষ্টার ফল’।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 Feb 2018, 09:11 AM
Updated : 25 Feb 2018, 09:19 AM

রোববার ঢাকার সেগুনবাগিচায় দুদক কার্যালয়ে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “দুর্নীতির সূচক আন্তর্জাতিকভাবে যেটা বের হয়েছে কোনো কোনো দেশে মাত্র এক পয়েন্ট কমেছে। আর দুই পয়েন্ট সম্ভবত ১০-১২টি দেশের। দুই পয়েন্ট কমানো এত সহজ বিষয় নয়।”

বিশ্বের ১৮০টি দেশ ও অঞ্চলের ২০১৭ সালের দুর্নীতির পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে বার্লিনভিত্তিক প্রতিষ্ঠান টিআই গত বৃহস্পতিবার ওই সূচক প্রকাশ করে।

সূচকের ঊর্ধ্বক্রম অনুযায়ী (ভাল থেকে খারাপ) বাংলাদেশের অবস্থান এবার ১৪৩ নম্বরে। গতবার ১৭৬টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ১৪৫ নম্বরে।

আবার অধঃক্রম অনুযায়ী (খারাপ থেকে ভালো) বিবেচনা করলে বাংলাদেশ আগের ১৫তম অবস্থান থেকে এবার ১৭তম অবস্থানে উঠে এসেছে।

১০০ ভিত্তিতে এই সূচকে বাংলাদেশের স্কোর এবার ২ পয়েন্ট বেড়ে ২৮ হয়েছে। এই স্কেলে শূন্য স্কোরকে দুর্নীতির ব্যাপকতার ধারণায় সবচেয়ে বেশি দুর্নীতিগ্রস্ত এবং ১০০ স্কোরকে সবচেয়ে কম দুর্নীতিগ্রস্ত বা সর্বোচ্চ সুশাসনের দেশ হিসাবে বিবেচনা করা হয়।

সূচক প্রকাশের তিনদিনের মাথায় রোববার সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে আনুষ্ঠানিক বক্তব্য দেন কমিশন চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “দুর্নীতির নেপথ্যে আমরা সবাই। আপনি যদি প্রতিরোধ করতে না পারেন, ইউ আর পার্ট অব দ্যাট। দুর্নীতি হচ্ছে, প্রতিরোধ করতে পারছি না। দুর্নীতি দমন কমিশনও পারছে না, জনগণের ব্যাপক অংশগ্রহণও হচ্ছে না। অর্থ্যাৎ আমরা সবাই দায়ী এটার জন্য।”

ইকবাল মাহমুদ বলেন, “দুর্নীতিবাজ সবসময়ই দুর্নীতিবাজ। বড় ছোট করা সমচীন নয়। যে কোনো দুর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। বড় ছোট করে বিভাজন করলে দুর্নীতি কমবে না।

দুদকের মামলায় সাজার হার ৩৭ শতাংশ থেকে বেড়ে ৭৪ শতাংশ হওয়ার কথা জানিয়ে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, “একটা কথা ঠিক, যে গতিতে দৃষ্টান্ত স্থাপন করা সমীচীন ছিল সেটুকু পারছি না। তবে এটা বুঝতে হবে, এটা সহজ বিষয় নয়। এর জন্য জনসাধারণের অংশগ্রহণ প্রয়োজন।”

অর্থ পাচার নিয়ে এক প্রশ্নে তিনি বলেন, কেবল বাংলাদেশের নয়, অর্থ পাচার একটি বৈশ্বিক সমস্যা। বিশ্বের সব দেশেই অর্থ পাচার হচ্ছে।

বাংলাদেশের আইনে অর্থ পাচারের ঘটনায় দুদকের সরাসরি ব্যবস্থা নেওয়ার ক্ষেত্রে ক্ষমতার সীমাবদ্ধতার কথাও ইকবাল মাহমুদ বলেন।  

তিনি বলেন, “দুর্নীতি দমনে গণমাধ্যম, শিক্ষক, শিক্ষার্থীসহ জনসাধারণের সাহায্য দরকার। জনগণকে যদি সচেতন না করা যায়, তাহলে আমার মনে হয় যে গতিতে দুর্নীতি চলছে সে গতিতে প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে না। এটাও একটি সমস্যা।”