একুশে পদক প্রদান অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনা বাংলা ভাষা,বাঙালি সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য সংরক্ষণের উপর জোর দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন,“আমরা আমাদের ভাষা, আমাদের সংস্কৃতি, আমাদের ঐতিহ্য- সেটা যেন কখনো ভুলে না যাই।”
বিশ্বায়নের যুগে অনেক কিছুর সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেওয়ার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, “বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে গেলে আমাদের হয়তো অনেক ভাষা শিখতে হবে। অনেক কিছু জানতে হবে, অনেক প্রযুক্তি ব্যবহার করতে হবে।
“কিন্তু, আমাদের স্বকীয়তা; সেটা কিন্তু আমাদের বজায় রাখতে হবে। সেটা বজায় রেখেই আমরা কিন্তু এগিয়ে যেতে পারি।”
বিভিন্ন ক্ষেত্রে ‘গৌরবদীপ্ত অবদানের’ স্বীকৃতি হিসেবে ২১ বিশিষ্ট নাগরিক এবার একুশে পদক পেয়েছেন।
ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে মঙ্গলবার সকালে এই অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী মনোনীত ও তাদের প্রতিনিধিদের হাতে পদক তুলে দেন।
সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় গত ৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ সালের একুশে পদকের জন্য মনোনীতদের নাম ঘোষণা করে। পদক বিজয়ী প্রত্যেকে পেয়েছেন ১৮ ক্যারেট মানের ৩৫ গ্রাম সোনার একটি পদক,দুই লাখ টাকার চেক ও সম্মাননাপত্র।
একুশে পদকপ্রাপ্তদের শুভেচ্ছা জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন,“আমাদের শিল্প, সাহিত্য, কলাকূশলী থেকে শুরু করে অনেক রত্ন ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে বাংলাদেশে। শুধু খুঁজে খুঁজে নিয়ে আসা এবং তাদের মর্যাদা দেওয়া।
“এই মর্যাদা দেওয়া এই কারণে যে আমাদের আগামী প্রজন্ম যেন ঐতিহ্য ধরে রাখতে পারে। আমাদের সংস্কৃতি ও শিল্প-সাহিত্যকে ধরে রাখতে পারে এবং তারা যেন উৎসাহিত হয়।”
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “যেহেতু ২১ ফেব্রুয়ারি আমরা ২১ জনকে নিয়েছি। আমরা জানি আমাদের যোগ্য আরও অনেকে আছেন। আশা করি, পর্যায়ক্রমিকভাবে আমরা সবাইকেই এই মর্যাদা দিতে পারব।”
১৯৭৪ সালের জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বাংলায় বক্তৃতা দেওয়ার কথা মনে করিয়ে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাকে তিনি আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নিয়ে দিয়েছিলেন।
বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, “রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বাংলা সাহিত্যকে যেমন বিশ্ব দরবারে নিয়ে গিয়েছিলেন এবং তিনি নোবেল প্রাইজ পেয়েছিলেন। আর জাতির পিতা আমাদেরকে বাঙালি জাতি হিসাবে আত্মপরিচয়ই দেন নাই; বাংলা ভাষাকেও তিনি আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানে নিয়ে যান।”
পিতার পদাংক অনুসরণ করে প্রতিবারই জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে বাংলায় ভাষণ দেওয়ার কথাও উল্লেখ করে শেখ হাসিনা।
ঢাকাই জামদানি, নকশী কাঁথা ও সিলেটের শীতল পাটির আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি এবং মঙ্গল শোভাযাত্রার ইউনেস্কোর স্বীকৃতি পাওয়ার কথা মনে করিয়ে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন,“আমাদের অনেক ঐতিহ্য রয়েছে। আমাদের ঐতিহ্য আর শিল্প-সাহিত্য তুলে ধরার সুযোগ আমাদের আছে।”
“আমাদের গৌরবের অনেক কিছু রয়েছে। সে গৌরবগাঁথা আমাদেরকে সংগ্রহ করতে হবে। সেগুলো আগামী প্রজন্মের জন্য সংরক্ষণ ও প্রচার করতে হবে।”
সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সংস্কৃতি সচিব মো.ইব্রাহীম হোসেন খান।
পদক প্রদান পর্ব সঞ্চালনা করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম।