তথ্য-প্রযুক্তিতে ‘নৈরাজ্য’ বন্ধের দাবি

ইন্টারনেটের বাড়তি মূল্য, ‘নকল’ মোবাইল সেট আমদানি, নিম্নমানের সফটওয়্যার আমদানিসহ তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি খাতে বিস্তর নৈরাজ্য রয়েছে অভিযোগ করে তা নিরসনের দাবি জানিয়েছে গ্রাহকদের একটি সংগঠন।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 Jan 2018, 01:57 PM
Updated : 16 Jan 2018, 01:57 PM

‘মুঠোফোন গ্রাহক এসোসিয়েশন’ নামের সংগঠনের নেতারা মঙ্গলবার রাজধানীর তোপখানা রোডে নির্মল সেন মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে টেলিকম খাতে ‘লুটপাট’ নিয়ে অডিট রিপোর্ট প্রকাশসহ ২০টি দাবি জানান।

লিখিত বক্তব্যে সংগঠনের সভাপতি মহিউদ্দীন আহমেদ বলেন, “বাংলাদেশে ১৯৯০ সাল থেকে টেলিযোগাযোগ শুরু হলে মনোপলি বাজার তৈরি করে গ্রাহকদের কাছ থেকে বিপুল অর্থ লুটপাট করা হয়। পরবর্তীতে ১৯৯৬ সালে বর্তমান সরকার ক্ষমতায় এসে বাজার উন্মুক্ত করলে অতি সাধারণ লোকদের হাতেও টেলিকম সেবা পৌঁছে যায় সত্য, কিন্তু  সেই সাথে দিনে দিনে সৃষ্টি হয় নৈরাজ্য, প্রতারণা, হয়রানি, সন্ত্রাসী কার্যক্রম ও অপারেটরদের লুটপাট।

“অপারেটরদের চরম নৈরাজ্য, ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট ব্যবসার নেই কোনো নীতিমালা, ই-কমার্স ব্যবসারও একই অবস্থা। মানহীন নকল মোবাইল হ্যান্ডসেট আমদানি, নিম্নমানের সফটওয়্যার, মোবাইল ব্যাংকিং প্রতারণা, গ্রাহকদের হয়রানিসহ অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে।”

পাশাপাশি সাইবারক্রাইম, হ্যাকিং, পর্নগ্রাফি, পাইরেসি, ফেইক ফেইসবুক আইডি খুলে মানহানি, ধর্মীয় উসকানি বন্ধসহ ইউটিউব, ভাইভার, ইমো, হোয়াইটসআপ ব্যবহারের ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণ না থাকায় সমাজে ও রাষ্ট্রে ব্যাপক ‘নৈরাজ্য’ বিরাজ করছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

মহিউদ্দীন বলেন, শুধু প্রযুক্তি ও টেলিকম খাতে গ্রাহকদের সুরক্ষা বা অধিকার আদায়ের জন্য কোনো নির্দিষ্ট প্রতিষ্ঠান বা আইন নেই।

“নিয়ন্ত্রণ সংস্থা বিটিআরসি থাকলেও তাদের কাছে গ্রাহকদের প্রতারিত ও হয়রানি শনাক্ত করার কোনো যন্ত্রপাতি নেই।”

তাদের দাবির মধ্যে রয়েছে- অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসায়ীদের তালিকা প্রকাশ, প্রযুক্তি ও টেলিকম সেবা খাতের গ্রাহকদের স্বার্থরক্ষা করার জন্য একটি আলাদা সুরক্ষা আইন ও নিষ্পত্তির জন্য আলাদা সংস্থা তৈরি, ফোর-জি সংবলিত হ্যান্ডসেটের উপর আমদানি শুল্ক প্রত্যাহার, নেট সমতার নীতিমালা প্রণয়ন, ইন্টারনেটের মূল্য ও টকটাইমের উপর কর হ্রাস করে মূল্য কমানো এবং ‘মধ্যস্বত্ত্বভোগী অপারেটর’ তুলে দিয়ে কলরেট কমানো।

এছাড়া এমএনপি চালুর সিদ্ধান্ত দ্রুত বাস্তবায়ন, বিটিএসের তেজস্ক্রিয়া নিয়ন্ত্রণের জন্য হাই কোর্টের আদেশ দ্রুত বাস্তবায়ন, জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে যে সব সিম বিক্রি করা হয়েছে তা বন্ধ করার দাবি জানানো হয়েছে সংবাদ সম্মেলনে।

এ সময় অন্যদের মধ্যে জাতীয় স্বাধীনতা পার্টির সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন খান মজলিস, ন্যাপ ভাসানীর চেয়ারম্যান আব্দুল হাই সরকার, এনপিপির প্রেসিডিয়াম সদস্য মো. আনিসুর রহমান দেওয়ান, বাংলাদেশ ইসলামিক পার্টির মহাসচিব কামরুল হাসান, মুঠোফোন গ্রাহক এসোসিয়েশনের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. রেজাউল করিম, কেন্দ্রীয় সদস্য মো. শফিকুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।