যশোর রোডের শতবর্ষী গাছ কাটার সিদ্ধান্তে বাপার প্রতিবাদ

রাস্তার উন্নয়ন কাজের কারণ দেখিয়ে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবহনকারী যশোর রোডের ঐতিহ্যবাহী শতবর্ষী গাছ কেটে ফেলার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন-বাপা।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 Jan 2018, 06:38 AM
Updated : 16 Jan 2018, 06:38 AM

মঙ্গলবার সকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক সংবাদ সম্মেলন থেকে এ প্রতিবাদ জানান সংগঠনটির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ইকবাল বিশ্বাস, স্থপতি ইকবাল হাবিব, শাহজালাল মৃধা ও আলমগীর হোসেনসহ অন্য নেতারা।

সংবাদ সম্মেলনের লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, যশোর-বেনাপোল ৩৮ কিলোমিটার রাস্তা সম্প্রসারণের নামে দুই হাজারেরও বেশি বৃক্ষ নিধনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। সীমান্তের ওপারেও রাস্তার উন্নয়ন হয়েছে, কিন্তু সেখানে কোনো গাছ কাটা হয়নি।

মুক্তিযুদ্ধের সময় লাখ লাখ শরণার্থী এই সড়ক দিয়ে ভারতে গিয়েছে। তাই মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসেও এ সড়কটির রয়েছে ঐতিহাসিক অবস্থান।

এক সময়ের পূর্ব বঙ্গ থেকে কলকাতা যাওয়ার প্রধান সড়ক পথ যশোর রোডে দুই পাশে দুইশর বেশি গাছ রয়েছে দেড়শরও বেশি বছর বয়সী।

সড়ক সম্প্রসারণের জন্য এই গাছগুলোর কাটার পক্ষে যুক্তি দেখিয়েছে সড়ক বিভাগ; তবে তাতে সন্তুষ্ট না হয়ে এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়ে আসছে বিভিন্ন সংগঠন।

ছবি ফেইসবুক থেকে নেওয়া

ঐতিহাসিক ‘যশোর রোড’র চার হাজারেরও বেশি শতবর্ষী গাছ কাটা বন্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে ইতোমধ্যে প্রশাসনকে আইনি নোটিস পাঠিয়েছেন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষক।

এক সময়ের গুরুত্বপূর্ণ যশের রোডের সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিও জড়িত। একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সমর্থন জানাতে এলে এই সড়কটি নিয়ে কবিতা লিখেছিলেন আমেরিকান কবি অ্যালেন গিনসবার্গ।

বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গে যশোর রোড বলতে দমদম থেকে বনগাঁর পেট্রোপোল সীমান্ত পর্যন্ত মহাসড়ককে বোঝায়। ওই সড়কের পাশে গাছ কাটায় কলকাতা হাই কোর্টের নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছিল বলে উল্লেখ করা হয় ওই শিক্ষকের আইনি নোটিসে।

যশোর রোডের গাছগুলো সংরক্ষণ করে রাস্তা তৈরি সম্ভব জানিয়ে সংবাদ সম্মেলনে বাপা নেতারা বলছেন, বিদ্যমান রাস্তার উত্তর বা দক্ষিণ কিংবা উভয় পাশ দিয়ে নতুন রাস্তা নির্মাণের পরিকল্পনা করা যেতে পারে। সেখানে এক পাশ দিয়ে থাকবে সাধারণ কম গতির যানবাহন চলাচলের ব্যবস্থা।

এই রাস্তা দুই লেনের হলেই চলবে জানিয়ে বলা হয়, মাঝে থাকবে গাছের সারি। এই লেনের জন্য মাটির কাজও বেশি করা দরকার হবে না।

পাবনা ও সিরাজগঞ্জে এ ধরনের রাস্তা নির্মাণ করে ভালো ফলাফল পাওয়া গেছে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলন থেকে পরিবেশ রক্ষার বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে এবং বৃক্ষরাজি রক্ষা করে সড়ক উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণের জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে আহ্বান জানানো হয়।