বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “আসলে ব্যাপারটা হল এজেন্সি, এজেন্সি যদি বিলম্ব না করত তাহলে যাওয়ার ব্যাপারে এত কিছু হত না।”
সৌদি সরকারের কোটা অনুযায়ী বাংলাদেশ থেকে এবার ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন হজে যাওয়ার কথা। তাদের মধ্যে এ পর্যন্ত ৯৭ হাজার ১৪০ জন হজযাত্রীর জন্য সৌদি ই-হজ সিস্টেমে ভিসার আবেদন করা হলেও ভিসা পেয়েছেন ৫২ হাজার ৬০০ জন।
যারা ভিসা পেয়েছেন, তাদের মধ্যে ৩২ হাজার ৫০৪ জন সৌদি আরবে পৌঁছেছেন; বাকি ২০ হাজার ৯৬ জন এখনও সৌদি যাওয়ার অপেক্ষায়।
এই ভিসা জটিলতার সঙ্গে সৌদি আরবে মোয়াল্লেম ফি বৃদ্ধি এবং টানা দ্বিতীয়বারের হজযাত্রীদের ক্ষেত্রে ভিসা ফি বৃদ্ধির ফলে এবারের হজযাত্রায় জটিলতা প্রকট আকার ধারণ করেছে। যাত্রী না পাওয়ায় বুধবার পর্যন্ত ১৫টি হজ ফ্লাইট বাতিল হয়েছে, যেসব ফ্লাইটে ছয় হাজার যাত্রী জেদ্দা যেতে পারতেন।
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে হজ ফ্লাইটের সূচিতে বড় ধরনের বিপর্যয়ের শঙ্কা তৈরি হয়েছে। বিমান পরিবহন মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন বুধবার সতর্ক করে বলেছেন, সমস্যাগুলো দুই-এক দিনের মধ্যে মেটাতে না পারলে এবার বড় ধরনের ঝামেলা তৈরি হবে।
তবে পরিস্থিতি যত জটিলই হোক, শেষ পর্যন্ত সবাইকে হজে পাঠানোর বিষয়ে আশ্বস্ত করে মতিউর রহমান বলেন, হজ যাত্রীদের ভিসা জটিলতা প্রতিবারই হয়, তার সমাধানও করা হয়।
“ইনশাল্লাহ, আমি আশাবাদী, ঠিক করতে পারব। আশা রাখি, সবাইকে হজ করাব ইনশাল্লাহ।”
কতগুলো হজ এজেন্সির কারণে এই জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে জানতে চাইলে ধর্মমন্ত্রী বলেন, সেই হিসেবে এখনও তারা পাননি।
সৌদি আরবে ৭২০ রিয়ালে মোয়াল্লেম ঠিক করার কথা থাকলেও এখন দেড় হাজার থেকে ১৯০০ রিয়াল বাড়তি লাগায় হজ এজেন্সিগুলো বিপাকে পড়ে যায়।
পরে তাদের কিস্তিতে বাড়তি টাকা শোধ করার সুযোগ দেওয়ায় আপাতত সমস্যার সমাধান হলেও সেজন্য হজযাত্রীদের বাড়তি অর্থ গুণতে হবে।
এছাড়া এবারের হজযাত্রীদের মধ্যে যারা ২০১৫-১৬ সালেও হজ করেছেন, ভিসার জন্য তাদের বাড়তি ২ হাজার রিয়াল (৪৪ হাজার টাকা) করে দিতে হবে, যা আগে জানানো হয়নি।
এ ধরনের যাত্রীর সংখ্যা ১৫ থেকে ২০ হাজার হলেও এর প্রভাব পড়ছে অনেকের ওপর। পরিবারের একজনের ক্ষেত্রে এমন হলে অন্যদের যাওয়ায় আটকে থাকছে।
এ বিষয়ে ধর্মমন্ত্রী বলেন, “বিষয়টি (দুই হাজার রিয়াল) পুনর্বিচেনার জন্য সৌদি সরকারকে লিখেছি, আলোচনা চলছে। এটা চাপিয়ে দেওয়া আমি মনে করি ঠিক হয়নি, আশা করি আমাদের আবেদন বিবেচনা হবে।”
তবে বাড়তি মোয়াল্লেম ফি মওকুফ না হলে সরকার হস্তক্ষেপ করতে পারবে না জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, “সেক্ষেত্রে সরকার টাকা দিয়ে হজযাত্রীদের সহযোগিতা করবে না। তবে এই টাকা যেন না দেওয়া লাগে সে বিষয়ে আমরা আপ্রাণ চেষ্টা করব।”
৪৫ হাজার হজযাত্রী এখনও ভিসা না পেলেও নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই তারা ভিসা পেয়ে যাবেন বলে আশা করন ধর্মমন্ত্রী।
বিমানের এক ডজনের বেশি ফ্লাইট বাতিল হওয়ায় ২০টি অতিরিক্ত ফ্লাইটের ব্যবস্থা করতে মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।