কিশোরগঞ্জের দুই ‘রাজাকারের’ রায় যে কোনো দিন

কিশোরগঞ্জের সৈয়দ মো. হুসাইন ও মোসলেম প্রধানের বিরুদ্ধে একাত্তরের যুদ্ধাপরাধ মামলার রায় ঘোষণা হবে যে কোনো দিন।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 March 2017, 08:32 AM
Updated : 7 March 2017, 08:35 AM

মুক্তিযুদ্ধের সময় রাজাকার বাহিনীর সদস‌্য হিসেবে হত্যা, গণহত্যা, লুণ্ঠন, অপহরণ ও নির্যাতনের ছয় অভিযোগ রয়েছে এই দুই আসামির বিরুদ্ধে।

প্রসিকিউশন ও আসামিপক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শেষে মঙ্গলবার বিচারপতি আনোয়ারুল হকের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ (সিএভি) রাখে।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন প্রসিকিউটর তুরীন আফরোজ। মোসলেম প্রধানের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী আবদুস সাত্তার পালোয়ান। আর রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী হিসাবে তিনি হুসাইনের পক্ষেও শুনানি করেন।

যুক্তিতর্ক শুনানিতে তুরীন আফরোজ বলেন, “আসামিদের মৃত্যুদণ্ড দিতে হবে। ডিফেন্স কোনো ডাউট কাস্ট করতে পারেনি। তাদের অপরাধের ভয়াবহতা ব্যাপক। এ কারণে প্রসিকিউশন তাদের মৃত্যুদণ্ড প্রার্থনা করছে।”

আদালত থেকে বের হয়ে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “ধর্মান্তকরণ ও ধর্ষণ, দেশত্যাগে বাধ‌্য করা ও ধর্ষণকে জেনোসাইড হিসাবে বিবেচনায় নিয়ে শাস্তির দাবি করেছি। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক রায়েও ধর্ষণকে জেনোসাইড হিসাবে বিবেচনা করা হয়েছে। তবে দেশত্যাগে বাধ্য করাকে জেনোসাইড হিসাবে বিবেচনা করে কোনো রায়ের দৃষ্টান্ত নেই। এই রায় পেলে সেটা দৃষ্টান্ত হবে।

আবদুস সাত্তার পালোয়ান বলেন, “এই সাক্ষ্য প্রমাণ গ্রহণ করা হলে ইতিহাসের বিকৃতি ঘটতে পারে।”

দুই আসামির মধ‌্যে মোসলেম প্রধানকে গ্রেপ্তার করা হলেও হুসাইন পলাতক। তিনি মালয়েশিয়ায় রয়েছেন বলে প্রসিকিউশনের তথ‌্য।

২০১৪ সালের ১৩ নভেম্বর হুসাইনের বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে একটি অভিযোগ দাখিল করা হয়। ওই অভিযোগ তদন্তকালে মোসলেম প্রধানের নাম আসে।

পরে দুইজনের বিরুদ্ধে হত্যা, গণহত্যা, অগ্নিসংযোগসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের ছয়টি অভিযোগ এনে গত বছরের ৭ সেপ্টেম্বর তদন্ত প্রতিবেদন চূড়ান্ত করে তদন্ত সংস্থা। এরপর ৩ ডিসেম্বর তাদের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ (ফরমার চার্জ) দাখিল করা হয়।

২০১৪ সালের ৭ জুলাই তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে ট্রাইব্যুনাল। ২০১৬ সালের ৭ জানুয়ারি দুই আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ আমলে নেয় আদালত।

হুসাইনের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হলেও মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি কিশোরগঞ্জে ছিলেন। মোসলেম কিশোরগঞ্জের নিকলি থানার বাসিন্দা। তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ নিকলিতে।

হুসাইন ট্রাইব্যুনালের রায়ে মৃতুদণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক সৈয়দ মো. হাসান ওরফে হাছেন আলীর ছোটভাই। ২০১৫ সালের গত ৯ জুন ফাঁসিতে ঝুলিয়ে বা গুলি করে তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের নির্দেশ দেয় ট্রাইব্যুনাল।