হিন্দুদের ওপর হামলা: এবার চট্টগ্রামে বড় বিক্ষোভ

জমায়েত চেরাগী পাহাড় মোড় ছড়িয়ে আন্দরকিল্লা, বৌদ্ধ মন্দির, জামালখান মোড় পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে। বিভিন্ন উপজেলা থেকে বাস, ট্রাক নিয়েও লোকজন আসতে থাকেন।

হিন্দুদের ওপর হামলার প্রতিবাদে চট্টগ্রামে চেরাগী পাহাড় মোড়ে বিক্ষোভে জমায়েতের একাংশ।

আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দেশজুড়ে হিন্দুদের বাড়িঘর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও উপাসনালয়ে হামলার অভিযোগ উঠার পর ঢাকার পর এবার বিক্ষোভ হয়েছে চট্টগ্রামে।

শনিবার বিকালে নগরীর চেরাগী পাহাড় মোড়ে বিশাল এই বিক্ষোভে অংশ নেয় হাজার হাজার মানুষ।

বিকাল তিনটার পর থেকে নগরীর বিভিন্ন পাড়া মহল্লা থেকে বিভিন্ন বয়সী, নারী, পুরুষ লোকজন জড়ো হতে শুরু করে সেখানে। বিভিন্ন উপজেলা থেকে বাস, ট্রাক নিয়েও লোকজন আসতে থাকেন।

জমায়েত চেরাগী পাহাড় মোড় ছড়িয়ে আন্দরকিল্লা, বৌদ্ধ মন্দির, জামালখান মোড় পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে। প্রায় দেড় বর্গ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে লোকজন জড়ো হতে থাকে।

বিক্ষোভে ‘মঠ, মন্দিরে হামলা কেন প্রশাসন চুপ কেন’, ‘রাষ্ট্রের কোনো ধর্ম নাই, ‘মুক্তিযুদ্ধের হাতিয়ার, গর্জে উঠুক আরেকবার’, ‘স্বাধীন দেশে হিন্দুদের ওপর হামলা কেন’- ইত্যাদি নানা ধরনের স্লোগান দিতে থাকেন।

সংখ্যালঘু কমিশন গঠনসহ নানা দাবি সম্বলিত পোস্টার, ফেস্টুন নিয়েও বিক্ষোভে উপস্থিত ছিলেন মানুষ।

গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদ ছেড়ে দেশ ত্যাগ করার পর থেকে দেশে বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি স্থাপনা, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও সমর্থকদের পাশাপাশি হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বাড়িঘরেও হামলা, লুটপাট, অগ্নিসংযোগের অভিযোগ ওঠে।

এর প্রতিবাদে শুক্র ও শনিবার ঢাকার শাহবাগে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ হয়।

শনিবার রাতেই দেশের চলমান পরিস্থিতিতে ‘বাংলাদেশ হিন্দু জাগরণ মঞ্চ’ ব্যানারে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ বিক্ষোভের ডাক দেয়া হয়।

বিক্ষোভে ঋষিকেশ দাশ নামে একজন বলেন, “১৯৭১ সালের পর গত ৫ অগাস্ট বাংলাদেশ পুনরায় স্বাধীন হয়েছে বলে দাবি করা হচ্ছে। কিন্তু আমরা কোথায় স্বাধীনতা পেলাম? দেশজুড়ে সনাতনী সম্প্রদায়ের বাড়ি ঘরে হামলার খবর শুনতে পাচ্ছি। আমরা রাত জেগে পাহারা দিচ্ছি- একটি সভ্য দেশে এটা কী করে সম্ভব?”

দেবাশীষ চৌধুরী বলেন, “দেশ স্বাধীনের পর থেকে প্রতিটি সরকারের আমলে এবং পট পরিবর্তনের পর থেকে আমরা সংখ্যালঘু সম্প্রদায় হামলা নির্যাতনের শিকার হই। এটা কেন হবে? আমরা তো এমন কোনো দেশ চাইনি।”

সন্ধ্যা ৬টার দিকে বিক্ষোভের পরিসমাপ্তি ঘোষণার লোকজন মিছিল নিয়ে বিভিন্ন সড়কের দিকে চলে যায়। এ সময় ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হয়।