কিন্তু কোনো কিছুতেই প্রশ্ন না করে চুপ থাকা খুব সহজ
Published : 09 Sep 2024, 10:05 PM
দিয়ান ভকোস্কি। মার্কিন কবি। গভীর ইমেজ নির্মাণের জন্য বিখ্যাত। 'Complete Motorcycle Betrayal Poems' তাঁর মাইল ফলক কবিতাগ্রন্থ। কবিতাগুলো ইংরেজি বাংলা তর্জমা করেছেন কথাসাহিত্যিক ও প্রাবন্ধিক জাকির তালুকদার।
লাল গাড়ি
আমার বিশ্বাস এ লাল তেমন নয়, যেমনটি চালাতেন জর্জ ওয়াশিংটন
অথবা জ.ও.-র মতোই দেখতে কেউ।
করিডোর ছিল জমাট রক্তের
এবং তাঁর পা গভীরে গিয়েছিল ডুবে
দাঁত যেভাবে ডুবে যায় রসালো আখে।
লম্বা টেবিলের প্রান্তে একজন মানুষ তাঁকে স্বাগত জানালো,
হাতে লম্বা জেলীভর্তি গ্লাসে রাখা নকল দাঁত।
তার মাড়ি নকল পিতল।
জ.ও. তখন ফ্লার্ট করার মুডে নেই,
“দর্জি মেয়েগুলোকে এক্ষুণি ওপরে পাঠিয়ে দাও”
বলে তিনি ওপরে চলে গেলেন আর প্রত্যেককে অনাবৃত করলেন।
তাদের মধ্যে সবচে যৌনগন্ধী মেয়েটিকে তার
কিছু কাপড় দিলেন
সেলাই করতে।
নীল গাড়ি
গন্ধে মনে হয়েছিল ভেতরে আনকোড়া নতুন গদী।
চালক লোকটির কোনো কল্পনাশক্তি ছিল না,
“আমার রূপান্তর কি একটি মেশিনে”--সে ভাবতো
কিন্ত তাতো নয়।
কয়েকদিনের মধ্যেই তারা দেখলো
একটি মরু ইঁদুর নতুন নীল ফোর্ড গাড়িটা চালাচ্ছে
এবং এটা খুবই অস্বাভাবিক দৃশ্য।
কিন্তু কোনো কিছুতেই প্রশ্ন না করে চুপ থাকা খুব সহজ
বিশেষত এমন সময়ে।
সবুজ গাড়ি
বয়স্ক ধাতু গলিয়ে বানানো সবুজ গাড়ি থেকে
নেমে এলো এমিলি ও জেমস।
মোটা সুতির ট্রাউজার পুলওভার আর মিষ্টি বর্ণ সার্টে
দারুণ হ্যান্ডসাম দেখাচ্ছে তোমাকে!
আমি ততটা নিশ্চিত নই - -।
যদ্দিন স্টাইল এবং টাকা তোমার আয়ত্তে আছে।
এই টাকা-- টাকা খরচ করা খুবই সোজা
কিন্ত যখনি তুমি ডলার জমাতে যাবে, দেখবে আমার ভেতরে
একটা বঙ্কিম গর্ত, তার
তলা দিয়ে সবই বেরিয়ে নিচে পড়ে।
আহারে কী দুঃখ
এমন একটা শূন্যস্থান থেকে গেল?
আহারে কী দুঃখ
আমাদের কারো কারো জীবন এমন
ব্যর্থ!
হলুদ গাড়ি
খুদে মানুষটি বিশাল মহিলাটির সঙ্গে মিলিত হলো।
লাইব্রেরির অপ্রাপ্ত বয়স্কদের পাঠকক্ষে।
আবিষ্কৃত হলো তারা দুজনেই মোনালিসার ভক্ত।
আবিষ্কৃত হলো তারা দুজনেই ১৮১২ সালে
কনসার্টের প্রাক-সঙ্গীত শুনেছিল।
যখন প্রকৃত প্রেম আসে
ঈশ্বর তোমাকে ধন্যবাদ, আহা
তুমিই তা জানো!
দ্বৈতসুরের গাড়ি
ক্যামোফ্লেজ হিসেবে মাছেরাও বর্ণ পরিবর্তন করে; সত্য বটে অন্ধ মাছটি
কখনোই পারে না।
বিষয়টি গবেষণার অন্তর্ভুক্ত হলো। বিজ্ঞানীরা একটি পুকুরের
প্রান্ত কালো এবং আরেক প্রান্ত সাদা রঙ করলেন। পর্যবেক্ষণের ফলাফল:
বিভক্তিরেখার মাঝবিন্দুতে এলে কোনো কোনো মাছ
ধূসর হয়ে যায়। এটাই একমাত্র জায়গা, একমাত্র সময়, বাকি সব সময় মাছেরা হয় কালো
নয়তো সাদা। এটাও পরিস্কারভাবে প্রমাণিত যে, কেউ তাৎক্ষণিকভাবে
বর্ণ পরিবর্তনে সক্ষম নয়। আবার বিভক্তি রেখায় এলে তারা প্রত্যেকেই হয়ে যায় ধূসর।
পুরাতন গাড়ি
কুমি দাঁতের গাড়িতে আমার
পুরনো মোমের গাড়িতে আমার
মাছিভরা ধুলো মুঠোয় ভরা হিংস্র শ্বাপদ গাড়িতে আমার
ছোট পতঙ্গ ভঙ্গুর পাখা কামড়িয়ে ধরা বিড়াল দাঁতের গাড়িতে আমার
চামড়ার স্ট্র্যাপ, গোটানো কাগজ, জংধরা এই ফ্যাকাশে রূপোলী
গাড়িতে আমার, আল্পসের চুড়ো থেকে কেটে আনা
বৃক্ষশাঁসের তাঁবু ও খুঁটির গাড়িতে আমার,
তানপুরা-খোল সদৃশ চওড়া গাড়িতে আমার,
কুকুরের কানে ঝাঁপিয়ে পড়ার মারমুখি মাছি গাড়িতে আমার,
ছায়ার মতোই একেবারে নিজ গাড়িতে আমার
চলে যেতে চাই চলে যেতে চাই
সব দিগন্তে দূর দিগন্তে
যেখানে যেখানে যাওয়া সম্ভব।