অস্ট্রেলিয়ায় সিডনির লিন্ড চকলেট ক্যাফেতে জিম্মি সঙ্কট এখনো কাটেনি। সঙ্কট না কাটা পর্যন্ত সিডনি অবরুদ্ধ করে রাখার প্রস্তুতি নিয়েছে পুলিশ। এরই মধ্যে বন্দুকধারীর পরিচয়ও সনাক্ত হয়েছে।
Published : 15 Dec 2014, 04:45 PM
পুলিশ সূত্রে বলা হয়েছে, ক্যাফেতে হানা দেয়া ওই বন্দুকধারী ইরানি শরণার্থী। হারুন মুনিস নামের ওই বন্দুকধারীকে রাজনৈতিক আশ্রয় দিয়েছিল অস্ট্রেলিয়া সরকার।
হারুন সরাসরি কোনো মুসলিম সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর সদস্য কিনা তা এখনো নিশ্চিত জানা যায়নি। হারুনের সাবেক আইনজীবী বলছেন, কোনো সংগঠনের সঙ্গে জড়িয়ে নয় বরং একাই এ কাণ্ড ঘটিয়েছেন হারুন।
সোমবার এই অস্ত্রধারী ক্যাফেতে ঢুকে অন্তত ৪০ জনকে জিম্মি করে ইসলামিক পতাকা ওড়াতে বাধ্য করে। এ ঘটনায় জিহাদি হামলার আশঙ্কা সৃষ্টি হয়।
গণমাধ্যমের ফুটেজে জিম্মিদের হাতে আরবি লেখা যে সাদা-কালো ইসলামিক পতাকা দেখা গেছে তাতে মৌলবাদের সঙ্গে এ ঘটনার সম্পর্ক রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
জিম্মিদের মধ্যে এ পর্যন্ত মাত্র পাঁচজন উদ্ধার পেয়েছে। ক্যাফে এবং শহরের বিভিন্ন স্থানে বোমা পেতে রাখা হয়েছে বলে দাবি করেছে বন্দুকধারী।
জিম্মিদশা থেকে মুক্তি পাওয়া তিন পুরুষ ও এক নারী গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, জিম্মিকারী তাদেরকে সতর্ক করে দিয়ে বলেছে যে, ক্যাফেতে দুটো বোমা পাতা হয়েছে। এছাড়া, শহরের আরো দুটো স্থানেও বোমা পাতা আছে।
অস্ত্রধারী ব্যক্তি ইসলামিক স্টেটের পতাকা দাবি করেছে এবং অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনারও দাবি জানিয়েছে বলে জানিয়েছে সিনহুয়া বার্তা সংস্থা।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, সোমবার স্থানীয় সময় সকাল ১০ টার দিকে এক ব্যক্তিকে ব্যাগ নিয়ে ক্যাফেতে ঢুকতে দেখা যাওয়ার পরপরই জিম্মি সঙ্কট সৃষ্টি হয়।
খবর পাওয়া মাত্রই পুলিশ এলাকাটি ঘিরে ফেলে। বন্ধ করা হয় যান চলাচল। বন্ধ করে দেয়া হয় সংলগ্ন স্টেশনও।
ক্যাফের ভেতরে এখনো কতজন জিম্মি রয়েছে তা স্পষ্ট জানা যায়নি। তবে সংবাদমাধ্যমগুলো ক্যামেরায় ১৫ জিম্মিকে দেখা গেছে বলে জানিয়েছে। এদের মধ্যে রয়েছে একজন ভারতীয়।
অস্ট্রেলিয়ার বিভিন্ন লক্ষ্যে জিহাদি হামলার ব্যাপারে সতর্ক করে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী টনি অ্যাবোট বলেছেন, জিম্মি নাটক রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলেই আভাস পাওয়া যাচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র দেশ অস্ট্রেলিয়া ইরাক এবং সিরিয়ায় আইএস এর বিরুদ্ধে লড়াই জোরদার করায় মধ্যপ্রাচ্য ফেরত দেশীয় জিহাদি জঙ্গিদের হামলার চরম ঝুঁকির মুখে রয়েছে।
গত সেপ্টেম্বরে এক ব্যক্তিকে শিরোশ্ছেদের হুমকি থেকে বাঁচিয়েছে অস্ট্রেলিয়ার সন্ত্রাসবিরোধী পুলিশ। এর কয়েকদিন পর দুই সন্ত্রাসবিরোধী পুলিশ কর্মকর্তাকে ছুরিকাহত করার ঘটনায় মেলবোর্নে এক কিশোরকে গুলি করে হত্যা করে পুলিশ।