নাৎসিদের চর হিসেবে ব্যবহার করেছিল যুক্তরাষ্ট্র

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ হওয়ার পর শত শত নাৎসি বন্দিকে গোয়েন্দা ও চর হিসেবে ব্যবহার করেছে যুক্তরাষ্ট্র।

নিউজ ডেস্ক>>বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 Oct 2014, 04:16 AM
Updated : 28 Oct 2014, 05:01 AM

সম্প্রতি প্রকাশ করা যুক্তরাষ্ট্রের গোপন নথির ভিত্তিতে বিবিসি মঙ্গলবার এ বিষয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।

এক সময় হিটলারের অনুসারী এসব ব্যক্তিকে স্নায়ুযুদ্ধের দিনগুলোতে সোভিয়েত ইউনিয়নের বিরুদ্ধে ব্যবহার করা হয়।বলা হয়, এববিআইয়ের সাবেক প্রধান জে এডগার হুভার নাৎসিদের ব্যবহারের বিষয়টি অনুমোদন করেন।

যুক্তরাষ্ট্র সরকারের নথি পর্যবেক্ষণ করে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সে সময় গোয়েন্দা ও চর হিসাবে অন্তত এক হাজার সাবেক নাৎসিকে কাজে লাগিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। সিআইএ কর্মকর্তাদের পরিকল্পনা অনুযায়ী যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক এই শত্রুদের ব্যবহার করা হয়েছিল সোভিয়েত ইউনিয়নকে কোনঠাসা করার জন্য।

আলেকসান্দ্রাস লায়লেইকিস

এদের কেউ কেউ নাৎসি বাহিনীর শীর্ষ পর্যায়ের নেতা ছিলেন। ইউরোপে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে গুপ্তচরবৃত্তির জন্য এই যুদ্ধাপরাধীদের কাজে লাগানো হয়।
নাৎসি দলের গোপন আধাসামরিক বাহিনী এসএস’র কর্মকর্তা অটো ফন বলশভিং হিটলারের আমলে ইহুদিদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়ানোর কৌশল প্রণয়নের দায়িত্বে ছিলেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এই ব্যক্তিকেই সিআইএ ইউরোপে গুপ্তচর হিসাবে নিয়োগ দেয়।
আর এ কাজের পুরস্কার হিসেবে ১৯৫০ সালে বলশভিং ও তার পরিবারকে নিউ ইয়র্কে পুনর্বাসিত করে সিআইএ।
লিথুয়ানিয়ায় হাজার হাজার ইহুদি হত্যার সঙ্গে জড়িত নাৎসি ‘দালাল’ আলেকসান্দ্রাস লিলেইকিসকে পূর্ব জার্মানিতে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে গুপ্তচরবৃত্তির কাজে নিয়োগ দেওয়া হয়। পরে তাকে পুনর্বাসিত করা হয় বোস্টনে।
লিলেইকিসের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের তদন্ত চলার সময় সিআইএ তাতে হস্তক্ষেপের চেষ্টা করেছিল- এমন প্রমাণও পাওয়া গেছে।
স্নায়ুযুদ্ধের দিনগুলোতে অবিশ্বাস ও আতঙ্কের পটভূমিতে এসব নাৎসি ‘প্রতিভা’কে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে নিয়োগ দেওয়া হয়।

কিন্তু নথিপত্রে দেখা গেছে, এফবিআই’য়ের দীর্ঘকালীন পরিচালক এডগার হুভার কেবল সাবেক নাৎসিদের গুপ্তচর হিসাবে নিয়োগ দিয়েই ক্ষান্ত হননি, বরং এই নাৎসিরা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় যেসব ভয়াবহ কুকীর্তির সঙ্গে জড়িত ছিল বলে সোভিয়েত ইউনিয়নের অভিযোগ ছিল, সেগুলোও তিনি বাতিল করে দিয়েছিলেন।

এ গোপন বিষয়গুলো এমন এক সময় প্রকাশ হলো, যখন একটি বার্তা সংস্থা’র অনুসন্ধানে দেখা গেছে, জোর করে যুক্তরাষ্ট্র ত্যাগে বাধ্য করা সাবেক নাৎসি যুদ্ধাপরাধীদের সামাজিক নিরাপত্তা অনুদান হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র সরকার লাখ লাখ ডলার দিয়েছিল।