মঙ্গলবার স্বাক্ষরিত দ্বিপক্ষীয় নিরাপত্তা চুক্তি (বিএসএ) অনুযায়ী, নিরাপত্তার স্বার্থে ২০১৪ সালের পরেও নেটো সেনারা আফগানিস্তানে থাকতে পারবে।
আফগানিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা হানিফ আতমার ও যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত জেমস ক্যানিংহাম কাবুলে প্রেসিডেন্ট প্রাসাদে ওই চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন, যা এতদিন সদ্য সাবেক প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাইয়ের বিরোধিতার কারণে আটকা ছিল।
চলতি ২০১৪ সালের শেষেই আফগানিস্তান থেকে বিদেশি সেনাদের চলে যাওয়ার কথা। তবে মেয়াদ শেষের আগেই কাবুলে সেনা রাখতে নতুন চুক্তি করতে সাবেক প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাইয়ের সঙ্গে তোড়জোড় করছিল যুক্তরাষ্ট্র।
বিভিন্ন সময়ে বিদেশি সেনাদের অভিযানে আফগানিস্তানের বেসামরিক লোক মারা যাওয়ার বিষয়টি তুলে ধরে নতুন চুক্তিতে যেতে রাজি হননি কারজাই। পাশাপাশি নিজ দেশের অভ্যন্তরীণ সঙ্কটের জন্য যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন পাশ্চিমা দেশগুলোকেই দায়ী করেন তিনি।
নতুন চুক্তির পর বিদেশি সেনাদের হাতে প্রতিটি নাগরিকের মৃত্যুর জন্য তাকে আফগান জনগণের কাছে দায়ী থাকতে হবে বলে মন্তব্য করেন কারজাই।
অবশ্য চুক্তির ঘোর বিরোধিতা না করে বিষয়টি নিয়ে পরবর্তী প্রেসিডেন্ট সিদ্ধান্ত নেবেন বলে আগেই জানিয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন নিয়ে ১৩ বছর কাবুল শাসন করা এই রাজনীতিক।
নতুন চুক্তি অনুযায়ী, ২০১৪ সালের পরও প্রায় ১২ হাজার নেটো সেনা আফগানিস্তানে অবস্থান করবেন। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের থাকবে প্রায় ১০ হাজার সেনা। বাকিরা থাকবে অন্যান্য নেটো সদস্য দেশের সেনা।
তালেবান জঙ্গি মোকাবেলা ও অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা রক্ষায় তিন লাখ ৫০ হাজার যুক্তরাষ্ট্র প্রশিক্ষিত সেনা রয়েছে আফগানিস্তানের। তবে প্রায়ই তাদেরকে ক্ষমতাচ্যুত তালেবান জঙ্গিদের হামলায় মুখে পড়তে দেখা যায়।
সোমবার শপথ গ্রহণের পরই তালেবানকে শান্তি আলোচনায় বসার আহ্বান জানান প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনি।
তবে এ ধরনের চুক্তির সমালোচনা করেছে তালেবান। যুক্তরাষ্ট্রের অশুভ চক্রান্তের ফলে আফগানিস্তান এ ধরনের চুক্তিতে পা দিয়েছে বলে দাবি তাদের।
এক বছর আগে নেটোর হয়ে ৪৯টি দেশের প্রায় ৫০ হাজার সেনা আফগানিস্তানে দায়িত্ব পালন করছিল। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রেরই ছিল ৩৪ হাজার সেনা।
প্রেসিডেন্ট গনির অন্যতম সহচর দাউদ সুলতানজে একটি বার্তা সংস্থাকে বলেন, “ক্ষমতা গ্রহণের একদিন পরই আন্তর্জাতিক বাহিনীর সঙ্গে চুক্তি করবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন গনি। তিনি তার প্রতিশ্রুতি রেখেছেন-চুক্তি সম্পন্ন হওয়ার মাধ্যমে সেই বার্তাটিই গেল।”