লন্ডন জুওলোজিক্যাল সোসাইটি (জেডএসএল) প্রকাশিত লিভিং প্ল্যানেট ইনডেক্সে’র বরাত দিয়ে রোববার রাতে এ খবর জানিয়েছে বিবিসি।
প্রাণীর সংখ্যা নির্ণয়ের নতুন একটি পদ্ধতিতে প্রাপ্ত ফলাফলে দুই বছর আগে প্রকাশিত অপর আরেকটি প্রতিবেদনের চেয়েও বেশি আশঙ্কাজনক চিত্র পাওয়া গেছে।
ফলাফলের প্রকাশিত প্রতিবেদনে দেখা গেছে, স্তন্যপায়ী, পাখি, সরীসৃপ, উভচর এবং মাছের সংখ্যা গড়ে ৫২ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে।
এদের মধ্যে মিঠাপানির মাছ হ্রাসের হার ৭৬ শতাংশ, যা সবচেয়ে আশঙ্কাজনক।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাছ বেড়ে ওঠার চেয়েও দ্রুত হারে মানুষ গাছে কেঁটে ফেলছে, সাগরে মাছের স্বাভাবিক পরিমাণ ফিরে আসার আগেই মানুষ আরো মাছ ধরছে, বৃষ্টির পানি নদীর প্রবাহ স্বাভাবিক করার হারের চেয়েও বেশি পরিমাণ পানি মানুষ উঠিয়ে নিচ্ছে।
ফলে প্রাণীর বন, নদীর মতো প্রাকৃতিক আবাসন হারানোসহ সাগরে মাছের আকাল দেখা দেয়ার আশঙ্কা তৈরি হচ্ছে।
সাগর ও বন যে পরিমাণ কার্বন শুষে নিচ্ছে তার চেয়েও বেশি পরিমাণ কার্বন মানুষ নিঃসরণ করছে। ফলে বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি পেয়ে জলবায়ু পরিবর্তিত হয়ে যাচ্ছে। এর ফলে হাজার হাজার বছর ধরে গড়ে ওঠা স্বাভাবিক প্রাকৃতিক পরিবেশ বিপর্যস্ত হচ্ছে।
নেপালে একশ বছর আগে এক লাখ বাঘ বসবাস করলেও সে সংখ্যা নেমে মাত্র তিন হাজারে এসে দাঁড়িয়েছে। শিকার ও বন উজারের কারণে এমনটি ঘটেছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
যুক্তরাজ্যে সরকার পাখির সংখ্যা হ্রাস রোধ করার প্রতিশ্রুতি দিলেও পাখির সংখ্যা কমা অব্যাহত আছে।
১৯৭০ থেকে ২০১০ পর্যন্ত ১০ হাজার মেরুদণ্ডী প্রজাতি পর্যবেক্ষণের ফলাফল ইনডেস্কটিতে দেয়া হয়েছে। এতে এসব প্রজাতির সদস্য সংখ্যা হ্রাস পাওয়ার উদ্বেগজনক চিত্র দেখা গেছে।
প্রতিবেদনে প্রাণবৈচিত্র্যের জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি হিসেবে আবাস (বন, জলাশয়) উজাড় ও পরিবেশ নষ্টের মিলিত প্রভাবকে দায়ী করা হয়েছে।
জলবায়ু পরিবর্তনে প্রজাতিগুলোর উপর কী প্রভাব পড়ছে তা নিয়ে বিতর্ক থাকলেও এই পরিবর্তনকে প্রতিবেদনে প্রাণবৈচিত্র্যের জন্য ক্রমবর্ধমান হুমকি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
জুওলোজিক্যাল সোসাইটির গবেষক দল জানিয়েছে, দুই বছর আগের তুলনায় এবার তারা আরো উন্নত পদ্ধতি ব্যবহার করে গবেষণাটি পরিচালনা করে আরো উদ্বেগজনক ফলাফল পেয়েছেন।