২২ বছর কারাভোগের পর কলাম্বিয়ার কুখ্যাত ভাড়াটে খুনি জম জাইরো ভেলাসকিস মুক্তি পেয়েছেন।
Published : 27 Aug 2014, 03:30 PM
স্থানীয় সময় মঙ্গলবার কড়া পুলিশ পাহারায় দেশটির বইয়াতা প্রদেশের কঠোর নিরাপত্তার কোমবিতা কারাগার থেকে মুক্তি পান ‘পপাই’ নামে পরিচিত এ খুনি।
বিবিসি জানিয়েছে, লুইস কার্লোস গ্যালান নামে কলাম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট পদে সম্ভাব্য এক প্রার্থীকে ১৯৮৯ সালে হত্যার দায়ে ৩০ বছর কারাদণ্ড দেয়া হয়েছিল এই ভাড়াটে খুনিকে।
তবে সাজার আট বছর আগে ছাড়া পেলেও আগামী চার বছর তাকে পর্যবেক্ষণে রাখা হবে বলে জানিয়েছে বিবিসি।
কলাম্বিয়ার একসময়ের মাদক সম্রাট পাবলো এসকোবারের প্রধান ভাড়াটে খুনি হিসেবে কাজ করতেন পপাই। গ্রেপ্তারের পর ১৯৮০ ও ’৯০ দশকে ৩০০ মানুষকে হত্যার কথা স্বীকার এবং আরো ৩০০০ মানুষকে হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার দাবিও করেন তিনি।
তবে তার দেয়া তথ্যপ্রমাণে গ্যালানকে হত্যার নির্দেশদাতা হিসেবে কলাম্বিয়ার সাবেক বিচারমন্ত্রী ও প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে গ্যালানের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী আলবের্তো সেন্তোফিমিউ অভিযুক্ত হন। বিচারে তার ২৪ বছরের কারাদণ্ড হয়।
লুইস কার্লোস গ্যালানকে হত্যার নির্দেশদাতা হিসেবে সেন্তোফিমিউর বিপক্ষে সাক্ষ্যও দেন পপাই। ১৯৯০ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে সেন্তোফিমিউর প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন গ্যালান।
ক্ষমতাবান মাদক উৎপাদনকারীদের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান নিয়ে জনপ্রিয় হয়েছিলেন লুইস কার্লোস গ্যালান। তার জনপ্রিয়তার কারণে নির্বাচনে গ্যালানই জয়ী হবেন বলে ধরে নিয়েছিল বিরোধীপক্ষ।
দেশটির রাজধানী বোগাতার এক শহরতলীতে জনসভায় ভাষণের প্রস্তুতির সময় তাকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এ হত্যার নির্দেশদাতা হিসেবে মাদক সম্রাট এসকোবারের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত সেন্তোফিমিউর ২৪ বছরের জেল হয়।
এসকোবার ছিলেন কলাম্বিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর মেদেইনকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা মাদক উৎপাদন, চোরাচালান ও সরবরাহকারীদের নেটওয়ার্ক মেদেইন কার্টেলের প্রতিষ্ঠাতা। কলাম্বিয়ান রাষ্ট্রের বিপক্ষে যারা একটি রক্তক্ষয়ী যুদ্ধেও জড়িয়ে পড়েছিল।
এদিকে কলাম্বিয়ার রাজধানী বোগাতা থেকে আর্থার ওয়ালেস নামে বিবিসির এক প্রতিনিধি জানিয়েছেন, এমন ভয়ংকর খুনির আগামমুক্তি পাওয়া নিয়ে কলাম্বিয়ায় দ্বিধাবিভক্তির সৃষ্টি হয়েছে।
পোপাইয়ের হাতে নিহতদের পরিবারের সদস্যরা জোর দিয়ে বলছেন, এ অপরাধী তার সব অপরাধের সাজা এখনো পর্যন্ত ভোগ করেনি।
অপরদিকে কেউ কেউ মনে করেন, দুই দশক জেল খাটার পর তাকে দ্বিতীয় একটি সুযোগ দেয়ার সময় এটি।