মালয়েশিয়া এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট এমএই-১৭ ইউক্রেইনের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের নিয়ন্ত্রিত এলাকায় ভূপাতিত হওয়ার পর আলোচনায় এসেছে সোভিয়েত আমলের একটি ক্ষেপণাস্ত্র, যার নাম এসএ-১১ বিইউকে।
Published : 18 Jul 2014, 06:48 PM
ইউক্রেইন সরকারের অভিযোগ রাশিয়ার সেনাবাহিনীর সরবরাহ করা এই ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েই রুশপন্থী বিচ্ছিন্নতাবাদীরা বোয়িং ৭৭৭ উড়োজাহাজটিকে ভূপাতিত করেছে। অন্যদিকে বিচ্ছিন্নতাবাদীরাও ঠিক একই অভিযোগ এনেছে ইউক্রেনের সরকারি বাহিনীর বিরুদ্ধে।
রাশিয়ায় এমন খবরও চাউর হয়েছে যে, প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বিমান মনে করেই মালয়েশিয়ার বিমানটিতে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়েছিল।
বৃহস্পতিবার রাতে ওই ঘটনায় ফ্লাইট এমএই-১৭ এর ২৯৮ জন আরোহীর সবাই নিহত হন।
কে ওই ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে তার মীমাংসা না হলেও রাশিয়া, ইউক্রেইন এবং রুশপন্থী বিচ্ছিন্নতাবাদী- সবার হাতেই ওই মারণাস্ত্র রয়েছে।
স্নায়ুযুদ্ধের দিনগুলোতে যুক্তরাষ্ট্রের ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রের সঙ্গে পাল্লা দেয়ার জন্য মাঝারি পাল্লার ভূমি থেকে আকাশে উৎক্ষেপণযোগ্য বিইউকে ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি করে সোভিয়েত ইউনিয়ন।
একটি সিস্টেমে একসঙ্গে চারটি ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার ব্যবস্থা থাকে, যেগুলোর দৈর্ঘ্য ১৯ ফুট, ওজন ৫৫ কেজি।
এই ক্ষেপণাস্ত্র ভূমি থেকে ৭২ হাজার ফুট উচ্চতা পর্যন্ত লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে পারে। আর ভূপাতিত হওয়ার আগে মালয়েশিয়া এয়ারলাইন্সের বিমানটি উড়ছিল ৩৩ হাজার ফুট উচ্চতায়।
রুশ ভাষায় বিচ গাছকে বলা হয় ‘বুক’। সেখান থেকেই ‘বিইউকে’ নামের উৎপত্তি। আর ন্যাটো এই ক্ষেপণাস্ত্রের নাম দিয়েছে ‘গ্যাডফ্লাই’ বা ডাঁশ মাছি।
আকাশে ৭২ হাজার ফুট দূরত্ব পর্যন্ত লক্ষ্যবস্তুকে আঘাত করতে সক্ষম এ ক্ষেপণাস্ত্র। আর মালয়েশীয় উড়োজাহাজটি যাচ্ছিল ৩৩ হাজার ফুট উচ্চতা দিয়ে।
রেডার নিয়ন্ত্রিত এই ক্ষেপণাস্ত্র রাশিয়া তাদের দিয়েছে, নাকি ইউক্রেনের বাহিনীর কাছ থেকে তারা এই অস্ত্র কেড়ে নিয়েছে- সে বিষয়টি স্পষ্ট নয়।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাবেক কর্মকর্তা এবং ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের ফেলো স্যামুয়েল শারাপ বলেন, “কোন ধরনের অস্ত্র দিয়ে হামলা চালানো হয়েছে তা যদি আমরা জানতেও পারি, তারপরও কারা ওই হামলা চালিয়েছে, তা জানা প্রায় অসম্ভব।”