মার্কেজের প্রয়াণে শোক

দীর্ঘসময় ধরেই পৃথিবীর মানুষকে জাদুবাস্তবতায় ঘোরগ্রস্ত করে রেখেছিলেন গ্যাবরিয়েল গার্সিয়া মার্কেজ। তার প্রয়াণে শোকগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন সাধারণ পাঠক থেকে শুরু করে লেখক, রাজনীতিবিদ ও শিল্পীরাও।

নিউজ ডেস্ক>>বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 April 2014, 05:32 AM
Updated : 18 April 2014, 08:31 AM

মার্কেজের জন্মভূমি কলাম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট হুয়ান ম্যানুয়েল স্যান্তোস ট্যুইটারে শোকবার্তায় লিখেছেন, “সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ কলাম্বিয়ানের প্রয়াণে নিঃসঙ্গতার একশ’ বছরের বেদনা।”

মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা বলেছেন, “বিশ্ব তার এক মহান স্বপ্নদর্শীকে হারালো আর আমি হারালাম তারুণ্য থেকেই প্রিয় হয়ে ওঠা লেখককে।”

সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন ও মার্কেজ

সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন বলেছেন, “আমি সবসময়ই তার কল্পনাশক্তি, স্পষ্টতা, চিন্তাভাবনা এবং আবেগি সততায় মুগ্ধ হতাম। তার বন্ধু হতে পেরে আমি অত্যন্ত সম্মানিত বোধ করেছিলাম এবং ২০ বছরের বেশি সময় ধরে তার বিশাল হৃদয় আর মেধাবী মনের পরিচয় পেয়ে আসছিলাম।”

জীবনের শেষ ৩০ বছর মার্কেজ জন্মভূমির পাশের রাষ্ট্র মেক্সিকোতে কাটিয়েছেন। মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট এনরিক পিনা নিয়েতো ট্যুইটারে লিখেছেন, “মেক্সিকোর জনগণের পক্ষ থেকে আমাদের সময়ের অন্যতম শ্রেষ্ঠ লেখকের প্রয়াণে গভীর শোক প্রকাশ করছি।”

কলাম্বিয়ার পপতারকা শাকিরা শোকপ্রকাশ করে জানান, “গাবো সবসময় আমার হৃদয়ে থাকবে। প্রিয় গাবো, তোমার জীবন আমাদের সবার কাছেই একক উপহার হিসেবে চিরভাস্মর হয়ে থাকবে।”

তরুণ মার্কেজ ও অপর নোবেলজয়ী লেখক মারিও বার্গাস ইয়োসা

ভক্তরা মার্কেজকে ‘গাবো’ নামেও ডেকে থাকেন।

পেরুর নোবেলজয়ী লেখক মারিও বার্গাস ইয়োসা মার্কেজকে ‘মহান লেখক’ বলে সম্বোধন করতেন।

পেরুর গণমাধ্যমকে ইয়োসা বলেছেন, “তার (মার্কেজ) কর্ম সাহিত্যকে অতুলনীয় সমৃদ্ধি ও সম্মান এনে দিয়েছে। তার উপন্যাসগুলো টিকে থাকবে এবং সর্বত্রই নতুন পাঠক খুঁজে ফিরবে।”

মার্কেজ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বও ছিলেন। কিউবার সাবেক প্রেসিডেন্ট ফিদেল কাস্ত্রোর সঙ্গে তার বন্ধুত্ব ল্যাতিন আমেরিকায় তার সাহিত্য ও রাজনৈতিক মহলে বিতর্কের জন্ম দিয়েছিল।

কিন্তু মার্কেজ বরাবরই জোর দিয়ে জানিয়েছেন, তাদের বন্ধুত্বের ভিত্তি বই।

অন্তরঙ্গ আলাপচারিতায় কিউবার সাবেক প্রেসিডেন্ট ফিদেল কাস্ত্রো ও মার্কেজ

এক সাক্ষাৎকারে মার্কেজ বলেছিলেন, “ফিদেল (কাস্ত্রো) খুবই সংস্কৃতিমনা মানুষ। আমরা যখন একসঙ্গে হই তখন সাহিত্য নিয়ে কথা বলি আলোচনা করি।”

মার্কেজের মৃত্যুর প্রকৃত কারণ তাৎক্ষণিকভাবে জানা সম্ভব হয়নি। তবে সম্প্রতি মেক্সিকো সিটির হাসপাতালে ফুসফুস ও মূত্রনালীতে সংক্রমণের চিকিৎসা নিয়েছিলেন তিনি।

মাত্র গত সপ্তাহেই তাকে হাসপাতাল থেকে বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছিল। বয়সজনিত কারণে তার স্বাস্থ্যের অবস্থা খুব ভাল ছিল না।