বাংলাদেশের স্বাধীনতার সক্রিয় বিরোধীতাকারী যুদ্ধাপরাধী জামায়াত নেতা গোলাম আযম ও আলী আহসান মো. মুজাহিদের দণ্ডের প্রতিবাদে পাকিস্তানের লাহোর ও করাচিতে বিক্ষোভ করেছে জামায়াত ই ইসলাম পাকিস্তানের ছাত্র সংগঠন ইসলামি জামায়াত ই তালিবা।
Published : 20 Jul 2013, 02:24 PM
বৃহস্পতিবার পাকিস্তানের বাণিজ্যিক রাজধানী করাচি ও পাঞ্জাব প্রদেশের রাজধানী লাহোরে বিক্ষোভ করেছে তারা, জানিয়েছে দ্য ডন ডটকম।
বিক্ষোভে উভয় স্থানেই ছাত্র সংগঠনটির কয়েক ডজন নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন। “বাংলাদেশকে রক্ষা করতে”তারা মুসলিম বিশ্বের প্রতি আহ্বান জানায়।
তারা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে “ভারত দরদী”হিসেবে উল্লেখ করে। তাদের কেউ কেউ বাংলাদেশের বিরুদ্ধে পাকিস্তান সরকার ও সেনাবাহিনীকে ব্যবস্থা নেয়ার আহ্বান জানায়।
১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের বিরুদ্ধে পাকিস্তানের পক্ষে অবস্থান নিয়েছিল জামায়াত। পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর সহযোগী হিসেবে বাঙালিদের হত্যা, ধর্ষণ, লুণ্ঠণ, অগ্নিসংযোগে জামায়াত নেতাদের ভূমিকা আদালতে প্রমাণিত হয়েছে।
এসব মানবতাবিরোধী অপরাধের সঙ্গে জড়িত ও নির্দেশনা, নেতৃত্ব দেয়ার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় একাত্তরের যুদ্ধাপরাধের বিচারে গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গত ১৫ জুলাই জামায়াতের সাবেক আমির গোলাম আযমকে ৯০ বছরের কারাদণ্ড দেয়।
একাত্তরে গোলাম আযম পূর্ব পাকিস্তান জামায়াতের আমির ছিলেন। পাকিস্তানি বাহিনীর আত্মসমর্পণের আগ মুহূর্তে তিনি পালিয়ে পাকিস্তানে চলে যান।
অপরদিকে, একাত্তরে জামায়েতের তৎকালীন ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্রসংঘের প্রাদেশিক প্রধান ছিলেন মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত মুজাহিদ। অপহরণ, নির্যাতন, হত্যা ও গণহত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের সাতটি অভিযোগের মধ্যে পাঁচটি ঘটনায় মুজাহিদের সংশ্লিষ্টতা প্রমাণিত হওয়ায় তাকে মৃত্যুদণ্ড দেয় যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
ছাত্রসংঘের প্রধান থাকায় পদধিকার বলেই মুজাহিদ আল বদর বাহিনীর নেতৃত্বে চলে আসেন। এই বাহিনীটি পাকিস্তানি সেনাদের সহযোগিতায় বাংলাদেশের বুদ্ধিজীবীদের হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করেছিল।
পাকিস্তানে দণ্ডপ্রাপ্ত যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষে যেমন বিক্ষোভ হয়েছে, তেমনি একাত্তরের গণহত্যার জন্য বাংলাদেশের কাছে ইসলামাবাদের ক্ষমা চাওয়া উচিত বলে মনে করেন দেশটির অনেক সচেতন মানুষ।
শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে যুদ্ধাপরাধের বিচার বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় বলে মন্তব্য করেছে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।