রাখাইনে সামরিক অভিযান সমাপ্ত: মিয়ানমার

রোহিঙ্গা অধ্যুষিত রাখাইন রাজ্যে চার মাস ধরে চলা সামরিক অভিযান শেষ হয়েছে বলে জানিয়েছে মিয়ানমার।

>>রয়টার্স
Published : 16 Feb 2017, 07:01 AM
Updated : 16 Feb 2017, 07:15 AM

বুধবার রাতে মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় কাউন্সেলর দপ্তর থেকে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে একথা জানানো হয়েছে।

বিবৃতিতে মিয়ানমারের নতুন নিয়োগ পাওয়া নিরাপত্তা উপদেষ্টা থাং টুনের উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়, “উত্তর রাখাইনের পরিস্থিতি এখন স্থিতিশীল হয়েছে। সামরিক বাহিনীর শুরু করা ক্লিয়ারেন্স অপারেশন শেষ হয়েছে, সান্ধ্য আইন শিথিল করা হয়েছে এবং শান্তি বজায় রাখার জন্য সেখানে শুধু পুলিশ উপস্থিত আছে।”

মিয়ানমারের প্রেসিডেন্ট দপ্তরের দুই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও দেশটির তথ্য মন্ত্রণালয়ও উত্তর রাখাইনে সামরিক অভিযান শেষ হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে, কিন্তু ওই এলাকার ‘শান্তি ও নিরাপত্তা’ বজায় রাখার স্বার্থে সামরিক বাহিনী অবস্থান করছে বলে জানিয়েছে তারা।

এই তথ্যের বিষয়ে মন্তব্যের জন্য অনুরোধ করা হলেও তাৎক্ষণিকভাবে সাড়া দেয়নি মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী।

৯ অক্টোবর বাংলাদেশের সীমান্তের কাছে একটি নিরাপত্তা চৌকিতে হামলায় নয় পুলিশ নিহত হওয়ার পর এই অভিযান শুরু করা হয়েছিল। এরপর থেকে প্রায় ৬৯ হাজার রোহিঙ্গা মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে বলে জাতিসংঘের হিসাব। 

সামরিক অভিযানের চলার সময় সহিংসতার খবর প্রকাশ পেলে বিশ্বব্যাপী নিন্দার ঢেউ বয়ে যায়। বলা হয়, উত্তর রাখাইনের মুসলিম সংখ্যালঘুদের সহায়তার জন্য শান্তিতে নোবেল পুরস্কার জয়ী মিয়ানমারের নেত্রী অং সাঙ সুচি তেমন কিছুই করেননি।

রাখাইনে ব্যাপক হত্যাযজ্ঞ, রোহিঙ্গাদের দলগত ধর্ষণসহ মানবাধিকার লঙ্ঘনের ব্যাপক অভিযোগ উঠলেও সব অস্বীকার করে সুচির নেতৃত্বাধীন মিয়ানমার সরকার। বিদ্রোহ দমনে আইন মেনেই অভিযান চালানো হচ্ছে বলে দাবি করে তারা। 

কিন্তু জাতিসংঘ একটি মন্তব্যের পর বিষয়টি আমলে নিতে বাধ্য হন সুচি। চার মাসের এ অভিযানে সম্ভাব্য মানবতাবিরোধী অপরাধ ও জাতিগত নির্মূলের মতো ঘটনা ঘটে থাকতে পারে বলে অভিযোগ করে জাতিসংঘ। জাতিসংঘের অভিযোগ তদন্ত করে দেখার প্রতিশ্রুতি দেন সুচি।

এরপর অভিযোগগুলো তদন্ত করতে দেশটির সামরিক বাহিনী ও পুলিশ দুটি পৃথক তদন্ত দল গঠন করে।

এর প্রেক্ষিতে নিরাপত্তা উপদেষ্টা থাং টুন জাতিসংঘের প্রতিনিধগণ ও এক দল কূটনীতিকের উপস্থিতিতে বলেছেন, “ফৌজদারি অপরাধ, মৌলিক মানবাধিকারের লঙ্ঘন ও অতিরিক্ত শক্তি প্রয়োগের ক্ষেত্রে কোনো অজুহাত থাকতে পারে না। যেখানেই লঙ্ঘনের পরিষ্কার প্রমাণ পাওয়া যাবে, আমরা ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রস্তুত, এটি আমরা দেখিয়েছি।”

পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের বিষয়ে নিযুক্ত জাতিসংঘের দুই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা গত সপ্তাহে জানিয়েছেন, সম্ভবত উত্তর রাখাইনের ওই সামরিক অভিযানে এক হাজারেরও বেশি রোহিঙ্গা মুসলিম নিহত হয়েছেন।