বিবিসি জানায়, ‘ইন্টার পার্লামেন্টারি ইউনিয়ন’ (আইপিইউ) এ গবেষণা পরিচালনা করেছে।
জেনেভায় গ্রুপটির বার্ষিক সমাবেশে প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করা হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, মাত্র ৫৫ জন নারী সংসদ সদস্য গবেষণা জরিপে অংশ নিলেও তারা আসলে সারা বিশ্বের নারী এমপি’দের প্রতিনিধিত্ব করেছে।
জরিপে অংশ নেওয়া ৮০ শতাংশ নারী সাংসদই বলেছেন, তারা শারীরিক ও যৌন হয়রানি বা সহিংসতার শিকার হয়েছেন।
এমনকি নিজ দায়িত্ব সঠিকভাবে পালনের পরও অনেক নারী সাংসদকে নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে বলেও প্রতিবেদনে জানানো হয়।
ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টের এক নারী সদস্য জানিয়েছেন, তিনি টুইটারে মাত্র চার দিনে ধর্ষণের পাঁচশতাধিক হুমকি পেয়েছেন।
জরিপে অংশ নেওয়া প্রায় ৬৬ শতাংশ নারী সংসদ সদস্য বলেছেন, যৌনতার ইঙ্গিত দেওয়া ভাষা ও ছবি ব্যবহার করে তাদের অপমান করা হয়েছে।
গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, কর্মক্ষেত্রে নারীদের পুরুষ সহকর্মীদের অপমানকর মন্তব্যের শিকার হওয়া সাধারণ ঘটনায় পরিণত হয়েছে।
জরিপে অংশ নেওয়া জাম্বিয়ার জেন্ডার মিনিস্টার প্রফেসর এনকান্দু লুও বলেন, “আমাদের অঞ্চলে…সব ধরনের অশ্লীল ভাষা নারী সাংসদদের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত।”
“আমাদের একজন পুরুষ সংসদ সদস্য জনসম্মুখেই বলেছেন, তিনি পার্লামেন্টে যেতে পছন্দ করেন কারণ, সব ধরনের নারীরা সেখানে আছেন এবং সেখানে গিয়ে তিনি নিজের কাঙ্খিত নারীকে খুঁজে বের করতে পারেন। এভাবেই নারীদের মর্যাদাহানি করা হয়।”
কানাডার পার্লামেন্ট সদস্য সালমা আতুল্লাহজান বলেন, “শুরুতে আমি ভেবেছিলাম এই জরিপ আমার জন্য না। আমি বলেছিলাম, আমি কানাডার নাগরিক। তাই আমার এতে অংশ নেওয়ার কোনও প্রয়োজন নেই।”
“কিন্তু জরিপের প্রশ্নগুলোর উত্তর দেওয়ার সময় আমার মনে হল, একজন সংসদ সদস্য হিসেবে আমাদের বাইরে যেতে হয়। নানা ধরনের মানুষের সঙ্গে মিশতে হয়। আমার মনে আছে, একবার এক ভদ্রলোক আমার খুব ঘনিষ্ঠ হওয়ার চেষ্টা করেছিলেন।”
গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, এ থেকেই বোঝা যায় অভিজাত সমাজের অংশ হলেও নারীরা একেবারে নিরাপদ নয়।
আইপিইউ-র প্রধান মার্টিন চুনগং বলেন, “সমাজে সংসদ সদস্যদের নেতা হিসেবে বিবেচনা করা হয়। কিন্তু বাস্তব হচ্ছে, নারী সংসদ সদস্যরা এমনকি তারা অভিজাত সমাজের হলেও তারা নিরাপদ নন।”
“তাই যদি অভিজাত নারীদেরই যৌন নিপীড়নের শিকার হতে হয়, তবে সুবিধাবঞ্চিত নারীদের কি অবস্থা?”