ইউরোপীয় পার্লামেন্টে নাইজেল ফারাজকে একহাত

ব্রেক্সিট নিয়ে ইউরোপীয় পার্লামেন্টে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয়েছে। ইইউ নেতারা মূলত ‘ইউকে ইনডিপেনডেন্স’ পার্টির (ইউকেআইপি) প্রধান নাইজেল ফারাজকে এদিন আক্রমণ করেছেন।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 June 2016, 02:06 PM
Updated : 28 June 2016, 02:22 PM

ফারাজ গণভোটে ইইউ থেকে যুক্তরাজ্যের বিচ্ছিন্নতার পক্ষের প্রচারণায় অন্যতম সোচ্চার কণ্ঠ ছিলেন।

একারণেই মঙ্গলবার ইউরোপীয় পার্লামেন্টের বিশেষ অধিবেশনে তাকে বিদ্রুপ করেন ইইউ নেতারা। এক পর্যায়ে তার বিরুদ্ধে ‘নাৎসি প্রপাগান্ডা’ কাজে লাগানোর অভিযোগ তোলেন তারা।

যুক্তরাজ্যের ইইউ’তে থাকা বা না থাকার প্রশ্নে বৃহস্পতিবার ঐতিহাসিক গণভোটে বিচ্ছেদের পক্ষে রায় আসে।  এরপরই মঙ্গলবার বিকালে ইউরোপীয় পার্লামেন্টের বিশেষ অধিবেশন বসে।

সেখানে ফারাজ তার বক্তব্যে ইউরোপীয় পার্লামেন্টের সদস্যদের পাল্টা দোষারোপ করে বলেন, “একটি রাজনৈতিক প্রকল্প হিসেবে ইইউ খোদ প্রত্যাখ্যাত হয়েছে।”

তিনি আরও বলেন,“আপনাদের মধ্যে এমন লোকের সংখ্যা খুব কম, যারা জীবনে অন্তত একটি কাজ ঠিকঠাক মত করেছেন বা কোনও ঠিকঠাক কাজের সুযোগ তৈরি করেছেন।”

ওদিকে, পার্লামেন্টে এক বিবৃতিতে ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট জ্যঁ ক্লদ জাঙ্কার যুক্তরাজ্যের জনগণের ইচ্ছাকে  সম্মান দেখানো হবে বলে জানালেও ফারাজকে কটাক্ষ করেন।

ফারাজকে উদ্দেশ্য করে জাঙ্কার বলেন, “আপনি ইইউ  ত্যাগের পক্ষে লড়াই করেছেন, ব্রিটিশ জনগণ ত্যাগের পক্ষে ভোট দিয়েছে। তাহলে আপনি এখানে কি করছেন?”

বেলজিয়ামের সাবেক প্রধানমন্ত্রী গাই ফেরহফস্টাড (যিনি বর্তমানে ইউরোপীয় পার্লামেন্টে লিবারেল গ্রুপের প্রধান) বলেন, “প্রচারণা চালানোর সময় ফারাজ নাৎসি প্রপাগান্ডার আশ্রয় নিয়েছেন।”

ওই সময় ফেরহফস্টাড ইইউ ত্যাগের পক্ষে একটি প্রচারণা পোস্টারের কথা বলেন। পোস্টারটিতে শরণার্থীদের লাইন দেখানো হয়েছে।

ইউরোপিয়ান পিপলস পার্টি গ্রুপের প্রধান মানফ্রেড উইবের বলেন, “তুষ্টি বোধ করার সময় শেষ হয়ে গেছে। আমাদের ইউরোপীয় প্রকল্পকে বাঁচাতে আমরা অবশ্যই কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করব।”

ফারাজকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, “আপনার বিন্দু মাত্র নম্রতা থেকে থাকলে আজ আপনি ব্রিটিশ জনগণের কাছে ক্ষমা প্রর্থনা করতেন, আপনার জন্য লজ্জা হচ্ছে।”

জবাবে ফারাজ বলেন, আপনারা ‘প্রত্যাখ্যাত’ হয়েছেন।

তিনি আরও  বলেন,“আমরা এখন ইউরোপজুড়ে গণতন্ত্রকামীদের জন্য আশার আলো দেখাচ্ছি। যুক্তরাজ্যই ইইউ ত্যাগ করা সর্বশেষ সদস্য হবে না।”

এর আগে জার্মান পার্লামেন্টে দেশটির চ্যান্সেলর আঙ্গেলা মেরকেল বলেছিলন, যুক্তরাজ্যকে ছাড়াই সামনে অগ্রসর হওয়ার মত যথেষ্ট শক্তি ইইউ-র আছে।

তিনি ভোটের ফলকে সম্মান জানিয়েছেন। কিন্তু সেই সঙ্গে এও বলেছেন, লিসবন চুক্তির আর্টিকেল ফিফটি নিয়ে যুক্তরাজ্যের কাছ থেকে আনুষ্ঠানিক অনুরোধ না আসা পর্যন্ত ব্রেক্সিট নিয়ে কোনও আলোচনা হবে না।