জ্যামিতির উদ্ভব হয়েছিল ‘প্রাচীন ব্যাবিলনে’

আকৃতি ও পরিমাপ নিয়ে গণিতের অন্যতম জটিল শাখা জ্যামিতির উদ্ভব হয়েছিল প্রাচীন ব্যাবিলনে। এমনই তথ্য বেরিয়ে এসেছে নতুন এক গবেষণায়।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 Jan 2016, 05:47 PM
Updated : 29 Jan 2016, 05:47 PM

বিবিসি জানিয়েছে, প্রচলিত ধারণার চেয়েও অনেক আগে জ্যামিতির উদ্ভব ঘটেছে।  নতুন গবেষণা অনুযায়ী, অন্তত এক হাজার চারশ’ বছর আগে থেকে জ্যামিতিক কলাকৌশল ব্যবহার হয়ে আসছে।

রাতের আকাশে বৃহস্পতি গ্রহের অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত হতে আদি ব্যাবিলনীয়রা জ্যামিতিক পদ্ধতিতে হিসাব-নিকাশ করত।

গবেষণা সাময়িকী ‘সায়েন্স’- এ নতুন গবেষণা প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়েছে।

যুক্তরাজ্যের জাদুঘরে সংরক্ষিত ১৯ শতকে মাটির নিচ থেকে উদ্ধার করা পাঁচটি ব্যাবিলিয়ান ট্যাবলেট পরীক্ষার পর গবেষকরা ওই তথ্য দিয়েছেন।

প্রচলিত ধারণা মতে, চতুর্দশ শতাব্দী থেকে হিসাব নিকাশে জ্যামিতির ব্যবহার শুরু হয়।

এতদিন ধারণা করা হত, মধ্যযুগে অক্সফোর্ড ও প্যারিসের পণ্ডিতরা বিশুদ্ধ জ্যামিতির ব্যবহার শুরু করেন। তারা সচল বস্তুর অবস্থান ও গতিবেগ অনুসরণ করতে রেখাচিত্রের ব্যবহার করতেন।

কিন্তু এখন বিজ্ঞানীদের ধারণা, ব্যাবিলনীয়রা আরও অনেক আগে থেকে এ কৌশলের (জ্যামিতি) ব্যবহার ও উন্নতি সাধন শুরু করেছে এবং তা খুব সম্ভবত খ্রিস্টপূর্ব ৩৫০ সালের দিকে।

গবেষকদের একজন বার্লিনের হামবল্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ম্যাথু ওসেনদ্রাইভার বলেন, “আমি এমনটি ধারণাই করতে পারিনি। এটি সম্পূর্ণরূপে পদার্থবিদ্যার মৌলিক বিষয় এবং বিজ্ঞানের প্রতিটি বিভাগে এই পদ্ধতির ব্যবহার রয়েছে।”

বর্তমান ইরাক ও সিরিয়ায় প্রাচীন ব্যাবিলনীয়রা বাস করত। খ্রিস্টপূর্ব অষ্টাদশ শতাব্দীতে সেখনে সভ্যতার বিকাশ শুরু হয়।

ব্যাবিলনীয়রা জ্যোতির্বিদ্যায় এগিয়ে ছিলেন বলে তাদের ব্যবহৃত প্রাচীন লিপি থেকে ধারণা পাওয়া গেছে আগেই। আকাশে তারা কী কী দেখতে পেত, তাও তারা লিখে রেখে গেছে।

আর এখন নতুন গবেষণার মধ্য দিয়ে ব্যাবিলনীয়দের গণিতেও ভীষণ দক্ষতার বিষয়টি প্রমাণিত হল বলে জানিয়েছেন অধ্যাপক ওসেনদ্রাইভার।

তিনি জানান, রাতের আকাশে বৃহস্পতির গতি এবং দূরত্ব পরিমাপের জন্য ব্যবহার করা হয়েছে ট্রাপিজয়েড । ঢালু চূড়া সমৃদ্ধ আয়তক্ষেত্র দিয়ে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বৃহস্পতির গতিবেগ পরিবর্তন দেখানো হয়েছে।

তবে এ কৌশল ওই সময় আর কোথাও ব্যবহার করা হয়েছে কিনা সে বিষয়ে এখনও স্পষ্ট করে কিছু বলতে পারছেন না বলেও বিবিসি’কে জানান ওসেনদ্রাইভার।