আদালত সাজার মেয়াদ না বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়ায় দিল্লিতে চলন্ত বাসে মেডিকেল কলেজের এক শিক্ষার্থীকে পালাক্রমে ধর্ষণ ও পরে হত্যার দায়ে দণ্ড প্রাপ্ত ‘কিশোর’ মুক্তি পেতে যাচ্ছে।
Published : 18 Dec 2015, 09:14 PM
ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপি নেতা সুব্রামানিয়াম স্বামী আদালতের কাছে ওই ‘কিশোর’ কে মুক্তি না দেওয়ার আবেদন করেছিলেন।
এর পরিপ্রেক্ষিতে দিল্লি হাইকোর্টের রায়ে বলা হয়, “এই বিষয়টির গুরুত্ব নিয়ে আমাদের মনে কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু আইন অনুযায়ী ওই কিশোরকে ২০ ডিসেম্বরের পর সংশোধনাগারে রাখা সম্ভব না।”
বিচারপতি জি, রহিনি ও বিচারপতি জয়ন্ত নাথের বেঞ্চ শুক্রবার এই রায় দেয়।
২০১২ সালের ১৬ ডিসেম্বর দিল্লিতে রাতে বাড়ি ফেরার পথে মেডিকেলের ওই শিক্ষার্থী বাস চালক ও কর্মীদের দ্বারা নির্যাতন ও ধর্ষণের শিকার হয়। গুরুতর অবস্থায় শিক্ষার্থী ও তার বন্ধুকে রাস্তায় ফেলে দেয়ার পর হাসপাতালে কয়েকদিন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে তার মৃত্যু হয়।
এ ঘটনা ভারতসহ পুরো বিশ্বকে ক্ষুব্ধ করে তোলে। বিক্ষুব্ধ মানুষ তাকে ‘নির্ভয়া’ নাম দেয়।
পুলিশ ধর্ষণ ও হত্যার অভিযোগে মোট ছয়জনকে গ্রেপ্তার করে। এর মধ্যে চারজনকে মৃত্যুদণ্ড দেয় আদালত। বিচার চলাকালে একজন তিহার কারাগারে আত্মহত্যা করে।
ঘটনার সময় বাকি জনের বয়স ১৮ বছরের নিচে হওয়ায় কিশোর আইনে তাকে তিন বছরের জন্য কিশোর সংশোধনাগারে পাঠানো হয়।
ভারতের কিশোর আইনে সর্বোচ্চ সাজা তিন বছরের কারাদণ্ড। ২০ ডিসেম্বর ওই ব্যক্তির তিন বছরের সাজার মেয়াদ শেষ হবে।
মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত চারজন সুপ্রিম কোর্টের রায়ের অপেক্ষায় আছে।
ওই ‘কিশোর’ কে মুক্তির পর পুনর্বাসন এবং সমাজের মূল স্রোতে ফিরিয়ে আনতে তার ও তার অভিভাবকদের সহায়তার জন্য জুভিনাইল জাস্টিস বোর্ডকে নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
দিল্লি সরকারের নারী ও শিশু অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদেরও একই নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
যদিও ওই ‘কিশোর’ যেন মুক্তি না পায় সেজন্য তিন বছর ধরে নিহত শিক্ষার্থীর পিতামাতা লড়াই করে যাচ্ছেন।
শুক্রবারের রায়ের পর শিক্ষার্থীর মা আশা দেবী বলেন, “আদালত আমাদের পরিত্যাগ করেছে। আমরা সুবিচার পাইনি। আমরা আমাদের সর্বোচ্চ চেষ্ট করেছি। তারপরও ওই অপরাধী তার সমস্ত কুকর্ম সঙ্গে নিয়ে বাইরে বেরিয়ে আসছে।”
শিক্ষার্থীর পিতা বদ্রিনাথ বলেন, “বিষয়টি সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার কোনো সম্ভাবনা আমি দেখছি না।”
গুরুতর অপরাধের ক্ষেত্রে ১৬ থেকে ১৮ বছর বয়সীদের প্রাপ্ত বয়স্ক হিসেবে বিচারের প্রস্তাব ভারতের রাজ্য সভায় ওঠার কথা রয়েছে।