টানা দ্বিতীয় ম্যাচে এক সঙ্গে জ্বলে উঠলেন লিওনেল মেসি, লুইস সুয়ারেস ও নেইমার। আর এই আক্রমণত্রয়ীর বিধ্বংসী রূপে এবারের লিগে নিজেদের সবচেয়ে বড় জয় তুলে নিয়েছে বার্সেলোনা; ৮-০ গোলে করদোবাকে হারিয়েছে লুইস এনরিকের দল।
Published : 02 May 2015, 10:01 PM
দলের বিশাল এই জয়ে বার্সেলোনার জার্সিতে প্রথমবারের মতো হ্যাটট্রিক করেন সুয়ারেস। এছাড়া প্রতিপক্ষের মাঠে জোড়া গোল করেন মেসি। নেইমার, ইভান রাকিতিচ ও জেরার্দ পিকে করেন একটি করে গোল।
এই জয়ের সাহায্যে লিগে আবার রিয়াল মাদ্রিদের চেয়ে ৫ পয়েন্ট এগিয়ে গেল বার্সেলোনা। ৩৫ ম্যাচে বার্সেলোনার ৮৭।
শীর্ষে থাকা বার্সেলোনার আক্রমণভাগ এই মৌসুমে কতটা দুর্দান্ত তা একটা হিসেব দেখলেই বোঝা যায়, এবারের লিগে ১০ ম্যাচে কমপক্ষে ৫টি বা তার বেশি করে গোল করেছে তারা। গত সপ্তাহে গেতাফের বিপক্ষেও ৬-০ গোলে জেতে দলটি। করদোবার বিপক্ষে লিগের প্রথম পর্বেও ৫-০ গোলে জিতেছিল মেসিরা। সব মিলিয়ে আরেকটি বড় জয়ের প্রত্যাশাতেই এই ম্যাচে খেলতে নামে কাতালুনিয়ার দলটি।
প্রতিপক্ষের মাঠে বার্সেলোনা আক্রমণাত্মক শুরু করলেও প্রথম গোলের দেখা পেতে অনেকটা সময় অপেক্ষা করতে হয় তাদের।
তৃতীয় মিনিটেই গোছানো একটি আক্রমণে দলকে এগিয়ে দেওয়ার সহজ সুযোগ পেয়েছিলেন নেইমার। কিন্তু ডান দিক থেকে স্বদেশি দানি আলভেসের বাড়ানো বলে বিনা বাধায়ও লক্ষ্যভ্রষ্ট ভলি করেন ব্রাজিলের এই তারকা।
সময় যত গড়াতে থাকে, বার্সেলোনার আক্রমণও তত জোরালো হতে থাকে। অধিকাংশ সময় তাদের আক্রমণ ঠেকাতেই ব্যস্ত থাকতে হচ্ছিল স্বাগতিকদের।
২৭তম মিনিটে লিওনেল মেসির চোখ ধাঁধানো ফুটবলের দেখা মিললেও স্কোরলাইনে কোনো পরিবর্তন আসেনি, ডি বক্সের মধ্যে তিন জনকে কাটিয়ে শট নিলেও গোলরক্ষকের বাধা এড়াতে পারেননি তিনি।
৩৭তম মিনিটে ভাগ্যের ফেরে আবারও হতাশ হতে হয় নেইমারকে; ছোট ডি-বক্সের সামনে থেকে মারা তার শটটি বারে লাগে।
অবশেষে ৪৩তম মিনিটে ইভান রাকিতিচের শটে সাফল্য পায় বার্সেলোনা। তবে গোলটিতে অসাধারণ অবদান ছিল মেসির, অনেকখানি দূর থেকে ডি বক্সের বাঁ-দিকে ঢুকে পড়া ক্রোয়েশিয়ার মিডফিল্ডারকে রক্ষণের উপর দিয়ে বলটা দিয়েছিলেন আর্জেন্টিনা অধিনায়ক।
তিন মিনিট পর দ্বিতীয় গোল পেয়ে যায় বার্সেলোনা। বাঁ-দিক থেকে আন্দ্রেস ইনিয়েস্তার উঁচু করে বাড়ানো বলে ছোট ডি-বক্সের সামনে থেকে লক্ষ্যভেদ করেন দারুণ ছন্দে থাকা লুইস সুয়ারেস।
মাঝে মধ্যে করদোবা কয়েকবার পাল্টা আক্রমণে যাওয়ার চেষ্টা করলেও প্রথমার্ধে একবারও প্রতিপক্ষের রক্ষণে ঢুকতে পারেনি তারা।
দ্বিতীয়ার্ধের দ্বিতীয় মিনিটেই লিওনেল মেসির গোলে ব্যবধান আরও বাড়ায় বার্সেলোনা। ডান দিক থেকে ডিফেন্ডার আলভেসের বাড়ানো বলে হেড করে লক্ষ্যভেদ করেন টানা চারবারের বর্ষসেরা তারকা।
৫৩তম মিনিটে হেডে নিজের দ্বিতীয় গোল করে স্কোরলাইন ৪-০ করেন সুয়ারেস। ফের ডান-দিক থেকে রক্ষণের উপর দিয়ে বল বাড়িয়ে গোলটিতে দারুণ ভূমিকা রাখেন আলভেস।
৬৫তম মিনিটে রাকিতিচের কর্নারে হেড করে দলের পঞ্চম গোলটি করেন পিকে।
শেষ ১০ মিনিটে আরও তিনটি গোল করে বার্সেলোনা। ৮০তম মিনিটে নিজের দ্বিতীয় গোল করে ব্যবধান ৬-০ করেন মেসি। আর এরই সঙ্গে রোনালদোকে (৩৯) ছাড়িয়ে আবারও লিগের সর্বোচ্চ গোলদাতা হয়ে গেলেন আর্জেন্টাইন তারকা, লা লিগায় এখন তার গোলসংখ্যা ৪০টি।
৮৪তম মিনিটে পেনাল্টি পায় বার্সেলোনা। ফলে মেসির আরও একটি হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনা জাগে, কিন্তু শট নিতে আসেন নেইমার। লা লিগায় নিজের ২১তম গোলটি করতে ভুল হয়নি তার।
আর ৮৭তম মিনিটে হ্যাটট্রিক পূরণ করেন সুয়ারেস। খুব কাছ থেকে গোলটি করেন এই মৌসুমেই লিভারপুল থেকে আসা এই তারকা স্ট্রাইকার।
ক্লাবের হয়ে গত ৬ ম্যাচে সুয়ারেসের এটা অষ্টম গোল। আর এবারের লিগে উরুগুয়ের এই তারকার এটা ষষ্ঠদশ গোল।