‘পাওনাদারকে ফাঁসাতে নিজের মেয়েকে খুন’

‘পাওনাদারকে ফাঁসাতে’ সিরাজগঞ্জ সদরে এক ব্যক্তি নিজের কলেজ পড়ুয়া মেয়েকে গলা কেটে হত্যা করেছেন বলে পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন।

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 August 2017, 10:22 AM
Updated : 13 August 2017, 10:26 AM

এ ঘটনায় শনিবার সিরাজগঞ্জের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম ম্যাজিষ্ট্রেট শরিফুল ইসলামের আদালতে জবানবন্দি দেন নিহত কলেজ ছাত্রীর মা ও বড় বোন।

গত রোববার গভীর রাতে সিরাজগঞ্জ সদরের জগতগাতি গ্রামের সাইদুর রহমান বাদলের মেয়ে সাথী খাতুনকে গলা কেটে হত্যা করা হয়। এর দুদিন পর সাথীর বাবা বাদল ট্রেনের নীচে ঝাঁপিয়ে পড়ে আত্মহত্যা করেন।

সাথী হত্যার ঘটনার তার মা মনোয়ারা বেগম বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকে আসামি করে থানায় মামলা দায়ের করেন।

সাথী শিয়ালকোলের আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ স্কুল অ্যান্ড কলেজের উচ্চ মাধ্যমিকের ছাত্রী ছিলেন।

ওই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সদর থানার এসআই তরিকুল ইসলাম জানান, “ঋণগ্রস্ত সাইদুর রহমান বাদল পাওনারদের ফাঁসানোর জন্য দুই ভাগ্নেকে সঙ্গে নিয়ে নিজের মেয়েকে হত্যা করেছে। বিষয়টি জানাজানি হয়ে যাবে বুঝতে পেরে সেও আত্মহত্যা করে।”

সাইদুর রহমান বাদল

সাথীর মা মনোয়ারা বেগম ও বড় বোন সুমির জবানবন্দির বরাত দিয়ে এসআই তরিকুল বলেন, ঘটনার রাতে বাদলের দুই ভাগ্নে জিন্না ও জিল্লুর তাদের বাড়ি আসেন। রাত ৯টার দিকে তারা তিন জন বাড়িতে থাকা অবস্থায় সাথীর সঙ্গে জরুরি আলোচনা আছে জানিয়ে স্ত্রী মনোয়ারা বেগম ও বড় মেয়ে সুমিকে বাড়ির বাইরে পাঠিয়ে দেয় বাদল।

“মনোয়ারা ও সুমি পাশের বাড়ি থেকে গভীর রাতে বাড়ি ফিরে সাথীর খোঁজ জানতে চাইলে বাদল বাঁশঝাড়ে নিয়ে সাথীর লাশ দেখায়।”

এসআই বলেন, ভয়ে প্রথম দিকে তারা এ কথা কাউকে না জানালেও দ্বিতীয় দিন মেয়ের দাফন ও জানাজা শেষে বাড়ি ফিরে আসার পর স্ত্রীর জিজ্ঞাসাবাদে মেয়েকে খুনের কথা স্বীকার করে বাদল।

“এরপর ট্রেনের নীচে ঝাঁপ দিয়ে বাদল আত্বহত্যা করে।”

জবানবন্দি শেষে মনোয়ারা বেগম ও সুমিকে তাদের বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে বলেও জানান এসআই তরিকুল।  

গলাকাটা ছাড়াও সাথীর হাত, ঘাড় ও পিঠে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছেও বলেন তরিকুল।          

সিরাজগঞ্জ পুলিশ সুপার মিরাজ উদ্দিন শনিবার রাতে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, প্রথম থেকেই বিষয়টি তাদেরও সন্দেহজনক মনে হচ্ছিল। কিন্ত নিশ্চিত না হওয়ায় এবং বাবা হওয়ার কারণে বাদলকে শুরুতেই আইনের আওতায় আনা যায়নি।

নিহত কলেজ ছাত্রীর ফুফাত ভাই জিন্না ও জিল্লুরকে গ্রেপ্তারে চেষ্টা চলছে বলে তিনি জানান। 

বাদলের পরিবারের সদস্যরা জানান, পেশায় আদম ব্যাপারী বাদল এলাকার ও আশপাশের গ্রামের অনেককে বিদেশে পাঠানোর কথা বলে ৮/১০ লাখ টাকা নিয়েছিলেন।