প্রায় ১০ বছর ধরে গ্রামটি নদী ভাঙনের কবলে থাকলেও চলতি বর্ষা মৌসুমে আরও বেড়ে গেছে। ভাঙনে গ্রামের মসজিদ ও কবরস্থানসহ বিপুল পরিমাণ ফসলি জমি ও অসংখ্য গাছপালা নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। হুমকির মুখে রয়েছে নারায়ণখোলা দক্ষিণ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।
নদী সংলগ্ন মানুষ ভাঙন রোধে সরকারি পদক্ষেপের আশায় রয়েছে।
চলতি বর্ষা মৌসুমে ব্রহ্মপুত্রের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ও প্রবল স্রোতে নারায়ণখোলা গ্রামে ভাঙন ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। ভাঙনের ঝুঁকির মুখে থাকা কয়েকটি পরিবার তাদের ঘরবাড়ি নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়েছে। ভাঙনের কারণে কয়েক দফা ঘর-বাড়ি সরিয়ে নেওয়ায় অনেকেই নিঃস্ব হয়ে গেছেন।
ভাঙন রোধে সরকারের কাছে আবেদন করেও কোনো প্রতিকার পাননি বলে দাবি ক্ষতিগ্রস্তদের।
নারায়ণখোলা গ্রামের রহুল আমীন বলেন, দীর্ঘদিন ধরেই গ্রামে ভাঙন চলছে। উচ্চ পর্যায়ে বিষয়টি জানানো হলেও কোনো পদক্ষেপ এখন পর্যন্ত নেওয়া হয়নি।
কোরবান আলী বলেন, “বাড়ি-ঘর ভাইঙ্গা সরানো অনেক কষ্ট। দুইবার কইরা ভাঙছি আবার তুলছি। আবার ভাঙতে ভাঙতে নদী বাড়ির কাছে চইলা আইছে। অহন আবার ভাঙন লাগব।”
বাচ্চু মিয়া বলেন, “দুইবার কইরা ভাইঙ্গা বাড়ি সরাইছি। এবার বাড়ি নদীর কিনারে পইড়া গেছে গা। অহন ভাইঙ্গা যে নিমু সেই সাধ্য আমার আর নাই।”
“অন্যহানে আর জায়গাও নাই। অহন নদী ভাঙতে ভাঙতে আমগরে বাড়ির কাছে আইসা পড়ছে। বাড়িও অহন ভাইঙ্গা যাইব।”
ভাঙনে বিলীন হওয়া মসজিদের ইমাম গিয়াস উদ্দিন বলেন, ১৯৬২ সালে এখানে মসজিদটা স্থাপিত করা হয়। ব্রহ্মপুত্র নদের প্রবল ভাঙনের ফলে মসজিদ অর্ধেক ভেঙে গেছে। যার ফলে মসজিদটা এখান থেকে স্থানান্তরিত করা হচ্ছে।
নারায়খোলা দক্ষিণ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক জহুরা বেগম বলেন, “বিদ্যালয়টি এখন হুমকির মুখে। বাচ্চা-কাচ্চা নিয়ে আমি অনেক সমস্যায় আছি। কারণ বড় ভাঙন দেখা দিলেই বাচ্চারা দৌড়ে ওই জায়গায় চলে যায়।
“আমাদের তখন দৌড়ে গিয়ে বাচ্চাদের আনতে হয়। কী করব বুঝতে পারছি না। ভাঙন রোধটা করা হলে স্বস্তি পেতাম।”
এ ব্যাপারে নকলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাজিব কুমার সরকার বলেন, চর অষ্টধর ইউনিয়নের যে এলাকাটিতে নদী ভাঙন চলছে সেখানে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও মসজিদ রয়েছে। এলাকাটি সরেজমিনে পরিদর্শন করা হয়েছে।
“বিদ্যালয়টি স্থানান্তরের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। তাছাড়া স্থায়ী সুরক্ষার ব্যবস্থা কীভাবে করা যায় সে বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডকে জানানো হয়েছে।”