সদর উপজেলার রঘুরামপুর গ্রামের বাড়িতে বৃহস্পতিবার তার লাশ পাওয়া যায়।
নিহত মরিয়ম বেগম পারুল (২৯) পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) এসআই আজিজুর রহমান সবুজের স্ত্রী। পারুলের বাবার বাড়ি সদর উপজেলার রামনগর ইউনিয়নের চৌঘাটা গ্রামে। তাদের দুইটি সন্তান আছে।
আজিজুর রহমান সবুজ সাতক্ষীরার পাটকেলঘাটার আনারুল ইসলাম ছেলে। তিনি বর্তমানে সিআইডি সদর দপ্তরে কর্মরত আছেন।
যশোর কোতোয়ালি থানার ওসি একেএম আজমল হুদা জানিয়েছেন, “একজন সিআইডি পুলিশ কর্মকর্তার স্ত্রী আত্মহত্যা করেছে বলে জানতে পেরেছি। রাতে পারুলের বাবা আজিজুল ইসলাম থানায় অভিযোগ করেছেন। বিষয়টি তদন্ত করা হবে।”
পারুলের ভাই জিয়াউর রহমানের অভিযোগ, সপ্তাহখানেক আগে আজিজুল ঢাকা থেকে ছুটি নিয়ে বাড়ি আসেন। তখন দুইজনের মধ্যে ব্যাপক বাকবিতণ্ডা হয়।
বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে তাদের ছেলে প্রান্ত এবং মেয়ে লাবিবা স্কুলে ছিল। এই সময় ঝগড়ার এক পর্যায়ে আজিজুল ঘরের ভেতর থেকে দরজা বন্ধ পারুলকে মারপিট করে। পরে তার গলাটিপে শ্বাসরোধে হত্যা করে।
“ঘটনাটি ভিন্ন খাতে নেওয়ার জন্য আজিজুল তড়িঘড়ি করে মরদেহ ঘরের ভেতর ফ্যানের সঙ্গে ঝুলিয়ে রেখে জানালা বেঙে পালিয়ে যান।”
দুপুরে তাদের ছেলে প্রান্ত স্কুল থেকে বাড়ি ফিরে দেখে ঘরের দরজা বন্ধ। সে জানালা দিয়ে দেখে তার মায়ের লাশ ফ্যানের সাথে ঝুলছে। তার চিৎকারে আশেপাশের লোকজন এগিয়ে এসে লাশ উদ্ধার করে যশোর হাসপাতালে নিয়ে যায়।
এই ব্যাপারে তারা থানায় হত্যা মামলা করবেন বলে জানিয়েছেন জিয়াউর।
পারুলের মামা মাসুদুর রহমান ও খালাত ভাই রবিউল ইসলাম অভিযোগ করেন, এসআই আজিজুল ইসলাম যশোরে কর্মরত থাকালীন ইয়াবা ট্যাবলেট ও ফেনসিডিলে আসক্ত হয়ে পড়েন। এছাড়া অন্য নারীর সঙ্গে তার বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক রয়েছে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা মোবাইল ফোনে নারীদের সঙ্গে কথা বলতেন।
মাসুদুর বলেন, এ নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মনোমালিন্য চলছিল। এছাড়া পারুলের বাবার এক খণ্ড জমি আজিজুল তার নিজের নামে লিখে দেওয়ার জন্য পারুলকে চাপ দিতেন। কিন্তু পারুল রাজি ছিলেন না।
এই নিয়ে দুইজনের মধ্যে প্রায় ব্যাপক ঝগড়া হতো। আজিজুল প্রায় পারুলকে শারীরিক নির্যাতন করতেন বলেও মাসুদুরের অভিযোগ।
যশোর জেনারেল হাসপাতলের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, হাসপাতালে নেওয়ার আগেই তার মৃত্যু হয়েছে।
আজিজুলের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন নম্বরে যোগাযোগ করার চেষ্টা করে তাকে পাওয়া যায়নি।