পুলিশ রিকশা আটক করায় নিজের গায়ে আগুন

ঢাকার আশুলিয়ায় ট্রাফিক পুলিশের অভিযানের সময় ব্যাটারিচালিত একটি রিকশা জব্দ করায় এর চালক গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন দিয়েছেন।

সেলিম আহমেদ সাভার প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 June 2017, 10:06 AM
Updated : 30 June 2017, 10:08 AM

দগ্ধ শামিম সিকদারকে (৩৫) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

পলাশবাড়ী এলাকার হাবীব ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের চিকিৎসক তরুণ পাল তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়েছেন বলে জানান।

তরুণ পাল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “শামিমের মুখ, দুই হাত ও বুকসহ শরীরের বিভিন্ন অংশের প্রায় ২৫ শতাংশ পুড়ে গেছে।”

পরে পুলিশ তাকে একটি প্রাইভেট কারে করে নিয়ে যায় বলে তিনি জানান।

বাইপাইলে দায়িত্বরত ট্রাফিক পুলিশের সার্জেন্ট আমিনুর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের আশুলিয়া বাইপাইল এলাকায় ব্যাটারিচালিত রিকশা অবৈধ হওয়ায় এগুলো জব্দ করা হচ্ছিল।

“শামিমের রিকশাটি জব্দ করা হলে তিনি ফিরত পেতে অনুরোধ করেন। না পেয়ে চলে যান। কিছুক্ষণ পরে পুলিশ বক্সের সামনে এসে নিজের গায়ে কেরোশিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেন।”

এ সময় স্থানীয়রা পানি ঢেলে আগুন নিভিয়ে দিলে সার্জেন্ট আমিনুর তাকে হাবীব ক্লিনিকে নিয়ে যান বলে জানান।

তিনি বলেন, “প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে তাকে ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিটে পাঠানো হয়।”

প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, গায়ে আগুন দেওয়ার আগে শামিম বলছিলেন, এর আগেও তার রিকশা আটক করে দুই হাজার টাকা নিয়ে ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ। এবারও টাকার জন্যই রিকশা আটক করা হয়েছে বলে শামিমের অভিযোগ।

শামিমের রিকশাটির সামনের লাইট ভাঙা দেখা গেছে।

শামিমের বরাতে স্থানীয়রা বলেন, টাকা না দেওয়ায় কনস্টেবল মনির লাইটটি বাড়ি দিয়ে ভেঙে ফেলেন। আর চালককে লাঠি দিয়ে মারধর করেন। তখন চালক শামীম রিকশা রেখে চলে যান। কিছুক্ষণ পর ফিরে এসে গায়ে গামছা জড়িয়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন দেওয়ার হুমকি দিয়ে বলেন, রিকশা ফেরত না দিলে আগুন ধরিয়ে মরে যাবেন। তখন কনস্টেবল মনির তাকে দেয়াশলাই এগিয়ে দেন। সঙ্গে সঙ্গেই শামীম নিজের গায়ে আগুন ধরিয়ে দেন। কিন্তু স্থানীয়রা পানি ঢেলে নিভিয়ে ফেলে।

এ বিষয়ে সার্জেন্ট আমিনুর বলছেন, “গায়ে আগুন দেওয়ার সময় আমি কাছে ছিলাম না। থাকলে এ ধরনের ঘটনা ঘটত না।”

শামিমকে মারধর ও দেয়াশলাই এগিয়ে সম্পর্কে তিনি বলেন, “আমি আশপাশের লোকজনকে জিজ্ঞাসা করেছি। কথাগুলো মিথ্যা। কেউ হয়ত এ ধরনের কথা ছড়াচ্ছে।”

পুলিশ ঘটনাটি তদন্ত করে দেখছে বলে জানিয়েছেন আশুলিয়া থানার ওসি মোহাম্মদ আবদুল আউয়াল।

শামিম বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ থানার ভাইজোড়া গ্রামের শাজাহান সিকদারের ছেলে। আশুলিয়ার নরসিংহপুরে মান্নান ভুঁইয়ার বাড়িতে স্ত্রী ও চার মেয়েকে নিয়ে ভাড়া থেকে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালান।