বুধবার সরেজমিনে ফেনী শহর, ছাগলনাইয়া, দাগনভূঞা, সোনাগাজী উপজেলার ঈদ বাজার ঘুরে এমন চিত্রই দেখা গেছে।
শহরের শহীদ হোসেন উদ্দিন বিপণী বিতান, গ্রীন টাওয়ার, এফ রহমান এসি মার্কেট, জুম্মা শপিং কমপ্লেক্স, রোকেয়া শপিং সেন্টার, ফেনী সেন্টার, ফেনী প্লাজা, সিটি প্লাজা, মহিপাল প্লাজাসহ অন্তত ২৫টি মার্কেটে ভারতীয় সিনেমা ও টিভি সিরিয়ালের নামে বাহুবলী, রাখি বন্ধন, বিনয়ী মহারানী, বিনয়ী জান্নাত, অক্টোপাস, সারারা, জলপরি, ইচ্ছেনদী, ঝিলিক, রাজকন্যা লাবণ্যের পাশাপাশি ইংরেজি থেকে বাংলা ডাবিং করা মেগা সিরিয়াল চরিত্রের নামের অনুকরণে ভারতীয় পোশাকের জন্য ক্রেতাদের উপচেপড়া ভিড়।
এছাড়া সুতি তাঁত, টাঙ্গাইল ও বালুচুরি শাড়ি ৭০০-৩,০০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ছেলেদের পাঞ্জাবি সিল্ক, অ্যান্ডি, ধুপিয়ান, তসর, ইনভয়েস, খদ্দি, মাইনোভার, সুলতান ১,০০০-৫,০০০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। জিন্স প্যান্ট বাহুবলী, ডেনিম, ক্যান্ডি, আরমানি বিক্রি হচ্ছে ১,৫০০-৪,০০০ টাকায়।
শহীদ শহীদুল্লাহ কায়সার সড়কের বুটিকস হাউস ও দেশি পোশাক নিয়ে পসরা সাজানো দোকানিরা ক্রেতার অপেক্ষায়। আবার কখনও কখনও দু চারটা বিক্রি করেছেন।
শহরের ‘মায়াবী’ ফ্যাশন হাউজের স্বত্বাধিকারী সামছুল আলম আজাদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমার দোকানে ভারতীয় থ্রিপিছ হুররাম গত এক সপ্তাহে কয়েক হাজার বিক্রি হয়েছে। অন্য নামের ভারতীয় কাপড়গুলোর বিক্রিও বেশ ভাল। দেশি কাপড়ের চেয়ে ভারতীয় কাপড়ের চাহিদা বেশি।”
বাহুবলী নামের চারটি থ্রিপিছ কিনেছেন বলে জানিয়েছেন ডাক্তার পাড়ার সায়লা সাবি মার্জিয়া।
তার স্বামী বলেন, “প্রতিবারের মতো এবারও দেশি বুটিকস থেকে নিজের ও ছেলের পাঞ্জাবি ও জামা কিনেছেন। পরিবারের অন্য সদস্যদের জন্য দেশি বুটিকস থেকে ঈদের পোশাক কিনবেন।”
হক টাওয়ারের ‘রুম রিলোড’ এর পরিচালক শাহাদাত হোসেন রিন্টু বলেন, “ছেলেরা রাজশাহী সিল্ক ও বুটিকসের পাঞ্জারি কিনছে। আবার কোনো তরুণ সুতির দেশি পাঞ্জাবি কিনছে। ভারতীয় কাপড়ের ভিড়ে দেশি কাপড়ের জন্য ভরসা পুরুষরা।”
শহীদ হোসেন উদ্দিন বিপণী বিতানের সাকির স্টোরের মালিক নজরুল ইসলাম সবুজ জানান, ভারতীয় কাপড়ের জন্য ক্রেতাদের উপচেপড়া ভিড়, বিক্রিও ভাল।
“আমার দোকানে দেশি ও ভারতীয় কাপড় দুই আছে। মেয়েরা ভারতীয় কাপড় কিনছে দেদারছে, গত ১২ দিনে দেশে তৈরি ফতুয়া ও বেশ কিছু পাঞ্জাবি বিক্রি হয়েছে। ছেলেদের অনেকে সুলতান সুলেমান পাঞ্জাবিও কিনছে।”
ফেনীতে ভারত সীমান্ত থাকায় ভারতীয় কাপড়ের ‘দাপট বেশ’ বলে জানান তিনি।
রাজাঝির দীঘির পাড়ের ফুটপাতে দোকানগুলোতে অল্প আয়ের লোকেদের সার্মথ মতো দেশি ভারতীয় কাপড় কিনতে দেখা গেছে। ‘অস্বাভাবিক দাম’ দাম দাবি করে এখানে অনেক ক্রেতার বিরক্তি প্রকাশ করেছেন। ফুটপাতে জিন্স প্যান্টের বিকিকিনিও বেশ জমজমাট গেছে।
গ্রীন টাওয়ার মার্কেটের দোকান মালিক আনোয়ার, সাজিদ, হোসেন জানান, ‘চাকচিক্যের’ কারণে মেয়েরা অনায়াসে কিনছে। ছেলেদের ভারতীয় পাঞ্জাবি ‘সুলতান সুলেমান’ এর দাম বেশি হওয়ায় তারা দেশি বুটিকসের, তাঁতের ও সুতি কাপড় কিনছে।
তাদের দাবি, পাঞ্জাবির দেশি কাপড়ের বাজারটা এখনও ছেলেরা টিকিয়ে রেখেছে।
জামা কাপড়ের পাশাপাশি পাশাপাশি জুতা ও কসমেটিকস ও মেহেদিতে পাকিস্তানি পণ্যের কদর দেখা গেছে জেলায়।