কুমিল্লায় যুবককে গলা কেটে হত্যা, ছাত্রলীগ নেতাসহ গ্রেপ্তার ৬

কুমিল্লার তিতাস উপজেলায় এক যুবককে কুপিয়ে ও গলা কেটে হত্যার অভিযোগে এক ছাত্রলীগ নেতাসহ তার পরিবারের ছয় সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।  

কুমিল্লা প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 June 2017, 07:14 AM
Updated : 19 June 2017, 07:16 AM

‘জমির বিরোধের জেরে’ বারকাউনিয়া গ্রামে রোববার রাতে এ ঘটনা ঘটে বলে তিতাস থানার ওসি নুরুল আলম জানান।

নিহত সুমন মিয়া (৩২) বারকাউনিয়া গ্রামের জালু মিয়ার ছেলে।

ওই হামলায় আহত হন সুমনের ছোটভাই সাইদুল ইসলাম (৩০)। তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

আটকরা হলেন স্থানীয় মৃত আব্দুল জলিলের ছেলে ও উপজেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আলাউদ্দিন (২৬), তার দুই ভাই লিটন মিয়া (৩৩) ও রিপন মিয়া (৩০),আলাউদ্দিনের চাচা ধনু মিয়া (৬০) এবং ধনু মিয়ার ছেলে অনিক মিয়া (২১) ও মোহাম্মদ (১৯)।

এছাড়া আলাউদ্দিনের পরিবারের নারী সদস্যদের পুলিশের পাহারায় ঘরে আটক রাখা হয়েছে। অভিযোগ পেলে তাদেরও গ্রেপ্তার দেখানো হবে বলে ওসি নুরুল আলম জানান।

নিহতের চাচাত ভাই বাবুল ও এলাকাবাসী জানান, উপজেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক পদ পাওয়ার পর প্রভাব খাটিয়ে গ্রামে প্রতিপক্ষ জালু মিয়ার জায়গা দখল করে একটি বিল্ডিং নির্মাণ করেন আলাউদ্দিন। এ নিয়ে উভয় পরিবারের মধ্যে দ্বন্দ্ব শুরু হয়। থানায় একাধিক পাল্টাপাল্টি অভিযোগও রয়েছে।

বাবুল বলেন, কিছুদিন আগে জালু মিয়ার একটি ঘরে আগুন দেওয়া হলে তাদের একটি গরু পুড়ে মারা যায় এবং কয়েক লাখ টাকার ক্ষতি হয়। এ ঘটনায় আলাউদ্দিনের পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দিলেও জালুর পরিবার কোনো আইনি প্রতিকার পায়নি।  

রিপন

মোহাম্মদ

বাবুলের অভিযোগ, রোববার রাত ৮টার দিকে সুমন ইফতার শেষে মোবাইল ফোনে কথা বলতে বলতে বাড়ির উত্তর পাশের সেতুর উপড় এলে আলাউদ্দিন, তার ভাই রিপন, লিটন, তার মা, বোন, ভাবি, চাচা ধনু মিয়া, চাচাত ভাই অনিক, মোহাম্মদ, যুবরাজ মেম্বারসহ ‘ভাড়াটে সন্ত্রাসীরা’ রামদা ও চাপাতি নিয়ে হামলা চালায়। তারা সুমনকে কুপিয়ে ও গলা কেটে হত্যা করে।

“সুমনের চিৎকার শুনে তার ছোট ভাই সাইদুল তাকে বাঁচাতে গেলে তাকেও কুপিয়ে আহত করে তারা।

“দুজনকে তিতাস উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক সুমনকে মৃত ঘোষণা করেন এবং সাইদুলকে ঢাকা মেডিকেলে পাঠানোর পরামর্শ দেন।”

বাবুল বলেন, এ ঘটনার পর বিক্ষুব্ধ গ্রামবাসী ধাওয়া করলে আলাউদ্দিনসহ তাদের পরিবারের সদস্যরা বাড়িতে আত্মগোপন করেন। তখন গ্রামবাসী বাড়িটি ঘেরাও করে তিতাস থানা পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ এলে আলাউদ্দিনসহ ছয় জনকে ধরে পুলিশে সোপর্দ করা হয়।

তিতাস থানার ওসি নুরুল আলম জানান, সীমানা বিরোধ নিয়ে মারামারির ঘটনায় একজন জন নিহত হয়েছে। আমরা লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠিয়েছি। ঘটনাস্থল থেকে ছয় জনকে আটক করা হয়েছে। মামলা হলে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।