সরাইলে লাশ উদ্ধার, কয়েকটি বাড়িতে অগ্নিসংযোগ

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে নিখোঁজের তিন দিন পর এক অটোরিকশা চালকের লাশ উদ্ধারের পর প্রতিপক্ষের বাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধিপীযূষ কান্তি আচার্য, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 June 2017, 03:38 PM
Updated : 16 June 2017, 03:38 PM

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে শুক্রবার বিকাল পর্যন্ত উপজেলার পানিশ্বর ইউনিয়নের শাখাইতি গ্রামে দফায় দফায় অন্তত ১০টি হামলা হয়।  

গত সোমবার শাখাইতি গ্রামের আবদুল হাইয়ের ছেলে অটোরিকশা চালক জয়নাল মিয়া (২৪) নিখোঁজ হন। বৃহস্পতিবার বিকালে উপজেলার বেড়তলা এলাকায় তার লাশ পাওয়া যায়।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, গত সোমবার বিকালে সিএনজি চালিত অটোরিকশার মালিক ও চালক জয়নাল মিয়া অটোরিকশা নিয়ে বের হন।

এলাকার লোকজন জানান, উপজেলার পানিশ্বর ইউনিয়নের বিটঘর বাজার থেকে সদরের নন্দনপুর গ্রামে যাওয়ার কথা বলে অটোরিকশাটি ভাড়া নেন একই গ্রামের কালন মিয়া (২২) ও ফায়জুল মিয়া (২৩)। এরপর থেকে অটেরিকশাসহ জয়নাল মিয়া নিখোঁজ হন।

সরাইল থানার ওসি রুপক কুমার সাহা বলেন, বৃহস্পতিবার বিকালে পুলিশ বেড়তলায় ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের পাশের খালে কচুরিপানার নীচ থেকে তার লাশ উদ্ধার করেছে।

“জয়নাল মিয়া হত্যার ঘটনায় তার বড় ভাই ফারুক মিয়া বাদী হয়ে শুক্রবার বিকালে কালন মিয়াকে প্রধান আসামি করে ১৭ জনের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।”

এ ঘটনায় জড়িত অভিযোগে পুলিশ বৃহস্পতিবার বিকালে কালন মিয়ার বড় ভাই হাদিস মিয়াকে গ্রেপ্তার করেছে বলে জানান ওসি।  

তিনি জানান, ময়নাতদন্ত শেষে শুক্রবার তার লাশ গ্রামে দাফন করা হয়েছে। এলাকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। গ্রামে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

জয়নাল মিয়া নিখোঁজের পর থেকে কালন মিয়া ও ফায়জুল মিয়া গা ঢাকা দিয়েছেন বলে এলাকাবাসী জানান।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, জয়নাল মিয়ার লাশ উদ্ধারের পর সন্ধ্যায় কালন মিয়া ও ফায়জুল মিয়ার বসতবাড়িতে ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। শুক্রবার সকালে ভাঙচুর-লুটপাট-অগ্নিসংযোগ করা হয় কালন মিয়ার গোষ্ঠীর আবুল কাশেম, কাশেম মিয়া, রুক্কু মিয়া ও আরব আলী এবং ফায়জুল মিয়ার গোষ্ঠীর হাজী ইজ্জত আলী, হাবিবুর রহমান, আজিজ মিয়া, উসমান গণি চৌধুরী ও মুক্তার হোসেনের বাড়িতে।

হামলার সময় ইজ্জত আলীর পুত্রবধূ রত্না বেগম (৩০), তার মেয়ে শাকিবা বেগম (১০), রাকিবা বেগমসহ (০৮) অন্তত ১০ নারী ও শিশু আহত হন। তাদের স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।  

ইজ্জত আলীর বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ছেলে জামাল মিয়া (২৬) বলেন, “আমরা ফায়জুল মিয়ার প্রতিবেশী হওয়াতে ফারুক মিয়ার লোকজন আমাদের সর্বনাশ করেছে। ফায়জুল মিয়া অপকর্ম করেছে। আমরাও তার বিচার চাই।

“কিন্ত এ ঘটনার দায় আমাদের কাঁধে কেন দেওয়া হবে? আমরা এখন নিজ বাড়ি যেতে পারছি না।”

তাদেরসহ আশপাশের লোকজনের প্রায় ৫০ লাখ টাকার মালামাল লুটপাট ও ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে বলে অভিযোগ তার।   

থানা হাজতে আটক হাদিস মিয়া সাংবাদিকদের বলেন, “জয়নাল মিয়া খুনের ব্যাপারে আমি কিছুই জানি না।”

ফারুক মিয়া গতকাল শুক্রবার বিকেলে বলেন, “আমি ভাইয়ের হত্যার ঘটনায় দিশেহারা হয়ে পড়েছি। গ্রামে করা ভাঙচুর লুটপাট করছে জানি না। আমরা এসবের সঙ্গে জড়িত নই।”