২২ কোটি টাকায় সংস্কার, তিন বছরেই বেহাল

শরীয়তপুরের আলুরবাজার থেকে মাদারীপুরের আঙ্গারিয়া পর্যন্ত ৩৫ কিলোমিটার রাস্তা ২২ কোটি টাকায় সংস্কারের তিন বছরেই মৃত্যুফাঁদে পরিণত হয়েছে।

কে এম রায়হান কবীর শরীয়তপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 June 2017, 09:56 AM
Updated : 16 June 2017, 09:56 AM

সড়কটি জরুরি ভিত্তিতে মেরামতের দাবিতে বৃহস্পতিবার মনোহার বাজারে রাস্তায় গাছ ফেলে বিক্ষোভ দেখিয়েছে এলাকাবাসী।

সাংবাদিকরা এ বিষয়ে জানতে চাইলে সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী পার্থ দাসগুপ্ত বলেন, “আপনাদের যা খুশি লিখে দেন।”

তিনি আর কোনো কথা বলতে রাজি হননি।

সরজমিনে সড়কটিতে অসংখ্য বড় বড় গর্ত দেখা গেছে। প্রতিদিনই দুর্ঘটনা ঘটছে বলে জানিয়েছে আশপাশের লোকজন।

অথচ মাত্র বছর তিনেক আগে সড়কটি সংস্কার করা হয়।

শরীয়তপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী বেলাল হোসাইন জানিয়েছেন, ২০১৪ সালে ৩৫ কিলোমিটার এই সড়কটি ২২ কোটি টাকায় সংস্কার করা হয়।

শরীয়তপুরের জেলা প্রশাসক মাহমুদুল হোসাইন খানও সড়কের এই দুরবস্থা সম্পর্কে অবগত।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “সড়কটির অবস্থা চরম পর্যায়ে পৌঁচেছে। শরীয়তপুরের প্রতিটি রাস্তাঘাটের অবস্থা খুবই খারাপ। জরুরি ভিত্তিতে সংস্কার করা না হলে সাধারণ মানুষের মধ্যে চরম ক্ষোভ দেখা দিতে পারে।”

এই রাস্তায় গাড়ি চালাতে গিয়ে চালকেরা অসুস্থ হয়ে পড়ছেন বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে।

দিদার পরিবহনের চালক আবুল বাশার বলেন, “সড়কটি এত খারাপ হয়ে পড়েছে যে এখানে একদিন গাড়ি চালালেই অসুস্থ হয়ে পড়ে চালকরা। এ রাস্তায় মানুষ পারতপক্ষে বাসে ওঠে না। তারা ছোট যানবাহন ব্যহারের চেষ্টা করে।”

যশোরের পেঁয়াজ বিক্রেতা আবুল হোসেন এই সড়ক দিয়ে চট্টগ্রামে যাতায়াত করেন।

তিনি বলেন, “সড়কটি খারাপ হওয়ায় বাধ্য হয়ে ঢাকা হয়ে ঘুরে যেতে হয়। এতে খরচ যেমন বেশি হয় তেমনি সময়ও লাগে বেশি। এই ভোগান্তির শেষ নেই।”

একটু বৃষ্টি হলেই এখানে পানি জমে, মাটি নরম হয়ে গাড়ি দেবে যায়, উল্টে পড়ে।

বালাবাজার এলাকার বাসিন্দা নজরুল ইসলাম বলেন, কদিন আগে গ্যাস সিলিন্ডারবাহী একটি গাড়ি উল্টে যায়। সৌভাগ্যবশত সিলিন্ডারগুলো খালি ছিল।

“না হলে বিস্ফোরণ ঘটতে পারত। কী ঘটতে পারত তা কল্পনা করাও কঠিন। আবার দুই দিন রোদ হলেই ধুলোয় ছেয়ে যায় আকাশ-বাতাস।”

এত কিছুর পরও কর্তৃপক্ষ কোনো আশার বাণীও শোনাতে পারেনি।

প্রকৌশলী বেলাল বলছেন, ভাঙা অংশগুলোয় ইটের সলিং করার জন্য এক কোটি ৮০ লাখ টাকা বরাদ্দ হয়েছে। দুটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান তিনটি অংশের তিন কিলোমিটার সংস্কার কাজের দায়িত্ব পেয়ে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।

কবে নাগাদ কতটুকু কাজ হবে সে বিষয়ে তিনি কিছু বলতে পারেননি।